ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

কবিতা

প্রকাশিত: ০৭:০৯, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

কবিতা

শরৎ-দলিল আইউব সৈয়দ ভোরের শিউলি। সিঁথিটি সাজিয়ে স্বপ্ন বুনছে উঠানে। কেননা জন্মগল্পের রিনি- ঝিনিতে শিশির ঝরে। এই শিশির মোহন তুলিকা বুলায় আর মৌসুমীর স্বতন্ত্র ধ্বনি শোনায়... এবং এই ভদ্রতাবোধ তাঁর জীবনবাহী সার্বভৌম ঘ্রাণ। অনন্ত মুগ্ধতায় নেই কোনো শ্ণ্যূতা। ভাদ্র- আশ্বিনের ফিসফিস তুমি। আজ ধারণযোগ্য নীল উড়ুক। মেঘের পালিত লুকালুকির খেলায়...... শরীর মন ডুবিয়ে আহা! মন্দিরা বাজুক চত্বরময় । ছুটন্ত ভিড়ে কালোত্তীর্ণ বুদবুদ- স্বকীয় ঔজ্জ্বল্যে ফিরে। তুমি অনুদিত নির্মাণ। ঋতুর মাধুরীমূর্ছনা। আজ শৃঙ্খল ভাঙ্গুক ব্যাক্তিত্বের শরৎ হোক স্বাক্ষরযুক্ত জীবনবাদী দলিল । ** মায়া চঞ্চল শাহরিয়ার গুলশানে শপিংমলের বারান্দায় দাঁড়াতে বলেছো। দাঁড়িয়েই আছি, তুমি আসছো শরৎকালীন মেঘের শুভ্রতার আলো নিয়ে। আসছো কাশফুলের উচ্ছ্বাস মেখে মন কেমন করা দুপুর বেলায়। মেয়ে, তুমি এতো ভালো। তবু চিঠি লিখলে না কোনদিন। চিনলে না ডাকঘর, দেখলে না ঝাউবনে উদাসী প্রহর। ** জটায়ু জীবনের গান সুজন হাজারি নিশিদিন বড় কষ্টে আছি। সততঃ স্মারক স্বপ্নের মলে জটায়ু জীবনের হাড় গোড় তুলে- পথে যেতে যেতে রোদ্র দগ্ধ দিন ডাকে আয়- অযুত অর্গল খুলে, পাথর বাতাসে ঝুলে মাঝে মাঝে পেরিয়ে যায়, জীবনের ছড়ানো চড়াই-উতরায়- স্বচ্ছ তরল উদাসী উড়ন চ-ী গলি; ঝরে যায় কত নির্ঘুম স্বপ্ন কলি। ছড়ায়না কেউ প্রাণের উত্তাপ জীবনে যখন রুগ্ন বাউ-ুলে নিশিদিন বড় কষ্টে আছি পাথর বাতাসে ঝুলে। থামতেই দেখি; বাতাসে ঝরছে আহত শব্দ। আঁতকে বলি এ কি! এখানেই ছিল দেবদারু সারি গাছ; নগ্ন শব্দের চঞ্চল নাচ। কোথা গ্যালো তারা? নাকি অনন্ত কুয়োর জলে! ভাবতেই দেখি বাম করতলে- কে যেন বলে উঠে ফিস ফিস স্বরে অযুৎ অর্গল খুলে- এসেছই যখন আবার পাথর বাতাসে নিশিদিন ঝুলে শব্দহীন স্বপ্নের শেষ ঘরে- এখানেই পাবে একটি শব্দ-নাই। নিশিদিন বড় কষ্টে আছি। রোদ্র দগ্ধ দিন ডাকে-যাই। ** আত্মকথন মুহাম্মদ ফরিদ হাসান নিজেকে রাখি নির্মম অথবা প্রজাপতি ডানায় নগ্ন পায়ে বিক্ষত কোলাহলে আত্মহননে রাখি বুক প্রতিদিন... ভালোবেসে গেঁথে দিই বিষমাখা ছুরি। নিজেকেই ডাকি সযতনে অথবা বিরাগ মুখে বৃষ্টির ফোঁটায়, আগুন আঁচে এবং মহাপ্লাবণের প্রতি ক্ষণে ক্ষণে সযতনে নিত্য চুমো আঁকি মৃত্যুর ঠোঁটে। নিজেকে রাখি গোপনে অথবা পতন বিচ্ছেদে রক্তের শিহরণে চিৎকারে আর্তনাদে এবং সক্রেটিসের হেমলকে... নিজেকে রাখি সবটুকু ঘৃণা ও ভালোবাসায়। ** বসন্ত যাপন রহমান মুজিব রঙের প্রপাতে দোলে উঠে তোমার ডাকনামের দোলনা চারদিকে ঘাসের ভাষার সবুজ শিশুতোষ, জোৎস্নার মিনার ভেঙ্গে জেগে থাকে ঋষিশুদ্ধ রাতের পুথিপাঠ, কতনা শ্রুতির চয়ন শুধু নিঃস্ব দুপুরের ঝরাপাতা, মাটির বিলীন চোখে জীবনের মীমাংসা খোঁজে, একাকী মধ্যমা পান করে নিকুচির সাকী তারপাশে সোনার রিংয়ে ঝলমল করে অনামিকার প্রশ্রয়। আজ বসন্ত আগুন, চাঁদ কি আজ খসে যাবে জ্যোৎস্নার ঝড়ে জানি না, শুধু জানি, সুঁই-ছিদ্রের অনুগত যাপন রাতের ছায়াপথ ধরে চলে যেতে চায় বালিকা গ্রামে, শুনেছি বালিকা গ্রামে কোকিল ডাকে রঙে রঙে রাঙা হয় মানুষের মন। ** সিঁড়ি রেজাউদ্দিন স্টালিন সিঁড়িতে উঠতে গিয়ে তোমার সাথে দেখা, নামতে গিয়েও। মূলত: পরস্পর দেখা হওয়ার জন্যে আমরা এখনো বেঁচে আছি। ** কূল ভাঙ্গা শ্রাবণ জোবায়দা আক্তার চৌধুরী আপনি হলেও তোমায় আমি তুমি করেই বলি। চোখের মাঝে ডুব দিয়েছে মনের চোরাগলি। মাতাল করা দৃষ্টি তোমার চোখের সাথে চোখ ছুয়ে যায়। অমন করে তাকাও কেন? চোখে আমার ঘোর লেগে যায়। কাজল পড়া ঐ দুটো চোখ এদিক ওদিক পালিয়ে বেড়ায়। চোখ ছুঁয়েছে চোখ মন ছুঁয়েছে মন ভালোবাসা ঝড় তুলেছে কূল ভাঙা শ্রাবণ।
×