ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাতক্ষীরায় পানিতে ফেলে শিশু হত্যা ॥ বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সাতক্ষীরায় পানিতে ফেলে শিশু হত্যা ॥ বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ শিশু সন্তানকে পুকুরে ছুড়ে ফেলে হত্যার খবরে নিজের অসুস্থতা ভুলে হাসপাতাল ছেড়ে মৃত মেয়েকে দেখতে গেলেও এখন হত্যার সন্দেহের তীর বাবার দিকেই। রহস্য উদঘাটনের জন্য পুলিশ এখন মৃত মেয়ের বাবাকেই জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। এই ঘটনাটি ঘটেছে সাতক্ষীরার দেবহাটার পুষ্পকাটিতে। পুলিশ শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করেছে। নিহত শিশুর স্বজনরা জানান পুষ্পকাটি গ্রামের ফরহাদ হোসেন তার শিশু কন্যা ফারিয়াকে নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ভোমরা বন্দরে যাচ্ছিলেন। এ সময় পেছন দিক থেকে কে বা কারা তার মাথায় সজোরে লাঠির আঘাত করে। ফরহাদ মুহূর্তেই জ্ঞান হারান। এই সুযোগে শিশু ফারিয়াকে (৪) দুর্বৃত্তরা নিকটস্থ পুকুরের পানিতে ছুড়ে ফেলে। স্থানীয়রা ফরহাদকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। এদিকে শুক্রবার সকালে কিছুটা সুস্থ হতেই ফরহাদের কাছে খবর আসে যে তার মেয়ে শিশু ফারিয়ার লাশ ভাসছে পুকুরে। এ খবর শুনে নিজের অসুস্থতার কথা ভুলে ফরহাদ দ্রুত ছুটে যান তার মেয়ের কাছে। তবে এলাকাবাসী বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলেন ফরহাদকে কেউ লাঠি দিয়ে আঘাত করেনি। এমনকি তার মেয়েকে পুকুরে ছুড়ে ফেলে হত্যার ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত নয়। তারা বলেন রাজনৈতিক কারণে ফরহাদের প্রতিবেশী মোকছেদ আলি এখন জেলে রয়েছে। তাকে জেলে পাঠানোর জন্য কয়েকজন লোককে সে দায়ী করে আসছিল। প্রতিশোধ নিতেই ফরহাদ মোকছেদ পরিবারের কাছ থেকে বেশ কিছু টাকা হাতিয়ে নিয়ে তার মেয়েকে হত্যার দায় এলাকার কয়েক যুবকের ওপর চাপাতে এই নাটক সাজিয়েছে। তারা আরও জানান ফরহাদের দেহে কোন আঘাতের চিহ্ন নেই। আলিপুর ইউপি যুবলীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন জানান, ফরহাদ একজন ধূর্ত লোক। সে নিজেই একটি হত্যা মামলার আসামি। তিনি আরও জানান, ফরহাদ তার মেয়েকে হত্যা আগে মোকছেদের কাছ থেকে দুই লক্ষ টাকা নেয়। মোকছেদ ২০১৩ সালে বর্তমান প্রাধানমন্ত্রীর প্রতীকী কবর তৈরি করে দেবহাটায় ব্যাপক সহিংসতা চালায়। ফরহাদ তার নিজের মেয়েকে হত্যা করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নাম বলছে। এটি একটি সাজানো নাটক বলে তিনি জানান। দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মান্নান আলি জানান শিশু ফারিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বলেন বিষয়টি অনেকটাই রহস্যাবৃত। পানিতে ডুবে মারা যাওয়া কিংবা আঘাত করে হত্যার কোন চিহ্নই শিশুটির দেহে নেই। এমনকি ফরহাদের দেহেও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তদন্ত না করে কোন কিছু নির্ণয় করা কঠিন জানিয়ে তিনি বলেন ফরহাদকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
×