ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

নওগাঁয় নির্যাতনে গৃহবধু হাসাপাতালে

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

নওগাঁয় নির্যাতনে গৃহবধু হাসাপাতালে

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ ॥ নওগাঁয় স্বামী, শ্বাশুড়ী, সতিন আর সতিনের ভাইয়ের অমানষিক নির্যাতনে মারাত্মক আহত অবস্থায় এমেলী ইয়াসমিন (২৫) নামে এক ছাত্রী গৃহবধু নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করায় তার বিরুদ্ধে মামলা করার কারনে আপোষ করার নামে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন এবং এক পর্যায়ে হত্যার প্রচেষ্টা চালানো হয়। এক ইউপি মহিলা সদস্যের সহযোগিতায় রানীনগর থানার পুলিশ তাকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেয়। শনিবার হাসপাতালের বিছানায় কান্নাজড়িত কন্ঠে এমেলী প্রতিবেদককে যে বিবরন দিয়েছে তা নিঃসন্দেহে লোমহর্ষক। সরকারী একজন চাকুরিজীবি স্বামীর পক্ষে অতি অমানিবক। এমেলী বর্তমানে নওগাঁ সরকারী কলেজের ডিগ্রি ফাইনাল বর্ষের ছাত্রী এবং বদলগাছি উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের মোঃ এমদাদুল হকের কন্যা। গত ২০১৬ সালের ২ জানুয়ারি রানীনগর উপজেলার চকাদিন গ্রামের মোঃ আজাহার আলীর পুত্র মো: এরশাদ হোসেনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এরশাদ হোসেন মাষ্টার্স পাশ এবং গাজিপুর ধান গবেষনা ইনষ্টিটিউটের লাইব্রেরী এটেনডেন্স হিসেবে কর্মরত। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবী উত্থাপিত হয়। এর জের ধরে নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন। সংসার করার মানষিকতায় সকল নির্যাতন সহ্য করে স্বামীর বাড়িতেই থাকে এমেলী। কিন্তু এক পর্যায়ে একই বছর অর্থাৎ ২৩/৮/২০১৬ তারিখে এরশাদ হোসেন রানীনগর উপজেলার বিল পালশা গ্রামের আমিনুল ইসলামের কন্যা তানজিলা বেগম স্বর্নকে দ্বিতীয় বিয়ে করে। এরই প্রেক্ষিতে স্ত্রীর অমতে বেআইনীভাবে দ্বিতীয় বিয়ে করার কারনে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে এমেলী স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন্। এর পর থেকে তাকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল। অবশেষে তারা কৌশলের আশ্রয় নেয়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর’১৮ তারিখে আপোষ করার নামে আদালত থেকে জামিন গ্রহন করে। জামিন নেয়ার পর ১৮ সেপ্টেম্বর একটি যুক্তিপূর্ন আপোষ করার নামে স্বামী এরশাদ এমেলীকে তার বাড়িতে ডেকে পাঠায়। ১৯ সেপ্টেম্বর নওগাঁ সদর উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা সদস্য বিউটি আকত্রাকে সঙ্গে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি চকাদিন গ্রামে যায় এমেলী। সেখানে গেলে তাদের একটি ঘরে আটক করে রাখে। মারধর করে। এমনকি ওই মহিলা সদস্যও মারপিট থেকে রেহাই পাননি। এক পর্যায়ে তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে বের হয়ে আসে। তখন এরশাদ, এরশাদের দ্বিতীয় স্ত্রী, দ্বিতীয় স্ত্রীর ভাই রিক্সা থেকে এমেলীকে জোরপুর্বক বাড়িতে নিয়ে যায় এবং সবাই মিলে মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। এদিকে মহিলা সদস্য বিউটি আকতার রানীনগর থানায় সংবাদ দেন। পুলিশ এসে উক্ত এমেলীকে মারাত্মক আহত অবস্থায় উদ্ধার করে এবং মহিলা মেম্বারের মাধ্যমে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেয়। এমেলী সুস্থ্য হলে রানীনগর থানায় একটি মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।
×