ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আফগানিস্তানের পর ভারত ধাক্কা, দলের সঙ্গে যোগ দিলেন ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকার

তবু ফাইনালে খেলার প্রত্যাশা মাশরাফির

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

তবু ফাইনালে খেলার প্রত্যাশা মাশরাফির

মিথুন আশরাফ ॥ ‘ফাইনালে খেলার লক্ষ্য নিয়েই যাচ্ছি।’ এমন কথা এশিয়া কাপ শুরুর আগে বলতে পারেননি বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। অথচ এখন দল বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে, ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় আফগানিস্তানের কাছে ১৩৬ রানে হারের পর ভারতের কাছেও ৭ উইকেটে বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। ধাক্কা খেয়েছে। ব্যাটসম্যানরা একের পর এক ভুল শট খেলে আউট হয়েছেন। মিরাজ (৪২) ও মাশরাফি (২৬) ঝলকে শেষ পর্যন্ত ১৭৩ রান করা গেছে। এক বছরের বেশি সময় পর খেলতে নেমেই ৪ উইকেট তুলে নেন রবীন্দ্র জাদেজা। ভারত ৩ উইকেট হারিয়ে রোহিত শর্মার অপরাজিত ৮৩ রানে ৩৬.২ ওভারে ১৭৪ রান করে জিতে যায় ভারত। এমন বিধ্বস্ত অবস্থার পরও এখন ফাইনালে খেলার আশার কথা, সুযোগ থাকার কথা জানাচ্ছেন মাশরাফি। দল যখন বিধ্বস্ত তখন দেশ থেকে ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকারকে আজ দুবাইয়ে দলের সঙ্গে যোগ দিতে পাঠানো হয়েছে। ইমরুল ও সৌম্যের দলে যোগ দেয়ার কথা আবার শুরুতে জানেনইনি মাশরাফি! মাশরাফি বলছেন, ফাইনালে খেলার সুযোগ আছে। আসলেই তা আছে। এজন্য আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটিতে জিততে হবে। যে দলটির কাছে গ্রুপপর্বে হেরেছিল বাংলাদেশ। আফগানদের হারাতে পারলে ফাইনালে খেলার সুযোগ থাকবে। সেটি আবার ভালভাবেই থাকবে। আজ বাংলাদেশ জিতলে, ভারতের কাছে পাকিস্তান হারলে; ভারতের ৪ পয়েন্ট, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ২ পয়েন্ট করে থাকবে। আফগানিস্তানের কোন পয়েন্ট জমা থাকবে না। বিদায় নেবে আফগানিস্তান। প্রতিটি দলের একটি করে ম্যাচ বাকি থাকবে। ‘সুপারফোরে’ পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশ শেষ ম্যাচে খেলবে। ভারতের সঙ্গে খেলবে আফগানিস্তান। তখন বাংলাদেশ ও পাকিস্তান ম্যাচে যে দল জিতবে তারাই ভারতের সঙ্গে ফাইনালে খেলবে। এই সম্ভাবনা টিকিয়ে রাখতে হলে যে করেই হোক আজ বাংলাদেশকে জিততেই হবে। হারলেই বিদায় ঘণ্টা বাজতে পারে। হারলেও সুযোগ থাকবে। এজন্য আজ ভারতের কাছে পাকিস্তানকে হারতেই হবে। তখন ভারতের সঙ্গে শেষ ম্যাচে আফগানিস্তান হারলে আর পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ ভালভাবে জিতলে, রানরেটে বাংলাদেশের ফাইনালে খেলার সুযোগ থাকবে। সেই পথ অনেক কঠিন হয়ে যাবে। মাশরাফি আজ জেতার আশাতেই আছেন। তাহলেই যে টুর্নামেন্টে ভালভাবে টিকে থাকা যাবে। ফাইনালে খেলার সম্ভাবনাও ভালভাবেই জিইয়ে থাকবে। মাশরাফি তাই ভারতের কাছে হারের পর বলেছেন, ‘আমরা টুর্নামেন্ট থেকে এখনও ছিটকে যাইনি। ভাল করে ঘুরে দাঁড়ানোর এখনও সুযোগ আছে। একটা দিন সময় আছে পরের ম্যাচের আগে। নিজেদের একটু গুছিয়ে নিয়ে পরের ম্যাচে নামতে হবে।’ কাজটা কী এতই সহজ! আফগানিস্তান যে কতটা শক্তিশালী দল তা তো প্রতিটি দলই বুঝতে পারছে। টানা দুই জয়ের পর পাকিস্তানের কাছে যে হেরেছে আফগানিস্তান, তাও তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। মাশরাফি তাই ভাল দিনের আশাতে আছেন, ‘আমার কাছে মনে হয় এখনও সম্ভব (ফাইনাল)। আমার কাছে মনে হয়, এত হতাশ হওয়ার কিছু নেই। অবশ্যই দুটি ম্যাচে হার হতাশার। এটা কেউই চায়নি। বিশেষ করে এই ম্যাচের (ভারতের বিপক্ষে) ফলাফলটা একটু বেশি হতাশার। কারণ গত ম্যাচের তুলনায় আজকের (শুক্রবার) ম্যাচটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু আজকেও (শুক্রবার) আমাদের ব্যাটিংয়ে ধস নেমেছে। অবশ্যই হতাশার।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘তবে আমাদের এখনও টুর্নামেন্টে ফেরার সুযোগ আছে। একটা ভাল দিনেই সব বদলে যেতে পারে। আফগানিস্তানের সঙ্গে ম্যাচে যদি আমরা জিততে পারি তাহলে ৫০-৫০ চান্স চলে আসবে। এরপর পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচে জিতলে ভাল সুযোগ থাকবে (ফাইনালের)।’ মাশরাফি যখন এমন ভাবছেন, তখন দলেও গোমট অবস্থা তৈরি হয়ে গেছে। ওপেনাররা ব্যর্থ হচ্ছেন। তাতে হঠাৎ করেই দেশ থেকে উড়িয়ে নেয়া হচ্ছে ইমরুল ও সৌম্যকে। শুরুতে ১৫ সদস্য ছিল। এরপর মুমিনুল হককে যুক্ত করা হলো। এখন আরও দুইজন যোগ হওয়ায় ১৮ সদস্য হয়ে গেল। কিন্তু একটি বিষয় নিয়ে খুবই সমালোচনা হচ্ছে। হওয়ারই কথা। ইমরুল ও সৌম্য দলে যোগ করার সিদ্ধান্ত যে অধিনায়ক মাশরাফিই জানেননি! মাশরাফি বলেছেন, ‘আমি মাঠে ছিলাম (ভারতের বিপক্ষে)। এটা জানি না এখনও। এখনও পরিষ্কার নয় আমার কাছে। শুনছিলাম এ রকম কথা, তবে জানতাম না যে হয়েছে। যারা আসছে, তারাও কিন্তু দল থেকে ছিটকে পড়েছিল। আমি এখনও জানি না, আলোচনা হয়নি। তবে ওরাও কিন্তু পারফর্ম না করেই দল থেকে বাদ পড়েছিল। হুট করে এই কন্ডিশনে এই ধরনের টুর্নামেন্টে এসে আবার সেই চাপ নিয়ে কতটা পারবে। আমি জানি না, টেকনিক্যালি ওরা কতটা কাজ করেছে। যে সমস্যাগুলো নিয়ে দলের বাইরে গিয়েছিল তা নিয়ে কাজ করেছে কিনা জানি না। এগুলো সবকিছুই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে আরও কঠিন বোলারদের খেলতে হবে। এটা নিশ্চিত যে যারা আছে তাদের জন্য যেমন সহজ হবে না, যারা আসবে তাদের জন্যও সহজ হবে না।’ মাশরাফির হতাশা স্পষ্ট। আফগানিস্তানের পর ভারতের কাছে হার। হঠাৎ ইমরুল ও সৌম্যকে দলে যোগ করানো। এসব কিছু বাদ দিয়ে এখন বাংলাদেশ দল টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে পারলেই হয়। আফগানিস্তানকে আজ হারিয়ে ফাইনালে খেলার যে আশা তা টিকে থাকলেই হলো।
×