ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বিএনপির মতে ‘কল্পিত’ মামলার তদন্তে কমিশন চেয়ে রিট

প্রকাশিত: ০৪:৪৮, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

 বিএনপির মতে ‘কল্পিত’ মামলার তদন্তে কমিশন চেয়ে রিট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চলতি মাসে সারাদেশে বিএনপি সমর্থক জ্যেষ্ঠ আইনজীবীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা ‘কল্পিত’ মামলা তদন্তে একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে। রিটে কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের প্রতিনিধি রাখার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া এসব ‘ভুতুড়ে’ মামলা দায়েরের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে রুল জারিরও আরজি জানানো হয়েছে। রবিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সিনিয়র আইনজীবী বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন, সাবেক মন্ত্রী এ্যাডভোটে নিতাই রায় চৌধুরী ও বিএনপির আইন সম্পাদক এ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া এই তিনজন বাদী হয়ে এই রিট করেন। পরে খন্দকার মাহবুব হোসেন জানান, রিটের শুনানিতে ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদসহ জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা অংশ নেবেন। এদিকে রাজনৈতিক দল হিসেবে গণসংহতি আন্দোলনের নিবন্ধন আবেদন খারিজ হওয়ায় তিনজনের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিস পাঠিয়েছে দলটির সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। সারাদেশে বিএনপির সিনিয়র আইনজীবীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা চার হাজার এবং তিন লাখেরও বেশি মানুষকে আসামি করার কারণ জানতে চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার, গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (নর্থ জোন), রমনা জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার, রমনা ও শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়েছে। পরে রিটকারী খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশে ঢালাওভাবে এ ধরনের কাল্পনিক মামলা করার উদ্দেশ্যে হচ্ছে বিরোধীদলকে চাপে রেখে বিরোধী নেতাকর্মীদের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করা। চলতি মাসের শুরু (১ সেপ্টেম্বর) থেকে এখন পর্যন্ত এসব মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলা দায়ের করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশে ঢালাওভাবে এ ধরনের কাল্পনিক মামলা করার উদ্দেশ্য হচ্ছে বিরোধী দলকে চাপে রেখে নেতাকর্মীদের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করা। প্রায় চার হাজার মামলায় তিন লাখ বিরোধী নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের মামলা সঠিক হয়েছে কি না তা তদন্ত করতে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিশন গঠন করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের কাল্পনিক মামলা করে যেন হয়রানি না করা হয়, তার নির্দেশনা জারির আবেদন করা হয়েছে। যারা এ ধরনের মামলা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চেয়েও আবেদন করা হয়েছে। বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি আহমদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রিট আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে বলে তিনি জানান। এ রিটের শুনানিতে ড.কামাল হোসেনসহ জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা অংশ নিতে পারেন বলেও জানান খন্দকার মাহবুব হোসেন। চলতি মাসে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ অনুসারে আবেদনকারী এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অগণিত মানুষের বিরুদ্ধে ‘কাল্পনিক’ মামলা করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এই ধরনের ‘কাল্পনিক’ মামলাকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এ মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছের রিট আবেদনে। এ রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় আবেদনকারীসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে এ ধরনের মামলা দায়ের থেকে বিরত থাকতে এবং এ ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি (যার মধ্যে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের প্রতিনিধি রাখা) গঠনের নির্দেশনা জারির আবেদন করা হয়েছে। গণসংহতি আন্দোলনের নিবন্ধন না দেয়ায় ইসিকে লিগ্যাল নোটিস ॥ রাজনৈতিক দল হিসেবে গণসংহতি আন্দোলনের নিবন্ধন আবেদন খারিজ হওয়ায় তিনজনের বিরুদ্ধে লিগ্যাল (আইনী) নোটিস পাঠিয়েছে দলটির সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। নোটিসে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার বা পুনর্বিবেচনার কথা বলা হয়েছে। রবিবার দুপুরে গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকির পক্ষে সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া রেজিস্ট্রি ডাকযোগ এ নোটিস পাঠান। প্রধান নির্বাচন কমিশনার, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও নির্বাচন কমিশনের উপ-সচিবকে সাতদিনের মধ্যে নোটিসের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
×