ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অস্ট্রেলিয়ান রেফারির নির্লজ্জ পক্ষপাতিত্বও ঠেকাতে পারেনি মারিয়াদের

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

  অস্ট্রেলিয়ান রেফারির নির্লজ্জ পক্ষপাতিত্বও ঠেকাতে পারেনি মারিয়াদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘এ নিয়ে আসলে এখন কি বলব বলেন। ২০১০ থেকে আমার কোচিং করার অভিজ্ঞতা। এএফসি সাফে জুনিয়র এবং সিনিয়র সব দলেরই কোচ ছিলাম আমি। সবসময় দেশে দেশে যুদ্ধ করে আর চিন্তায় আমরা ঘুমাতে পারি না। কিন্তু ওনার (রেফারি) মাঠে কি যে করে আসলে বলার কিছু নেই। উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে আমরা আগেও বলেছি, বলার পর ওনারা বলে আসলে রেফারি সঠিক। আমরা সবসময় ভুল। আমরা যারা বাইরে থাকি, তারা নাকি কিছুই বুঝি না। এটাই হলো বাস্তবতা। তারা নাকি শিখতে আসছে। সাফে গেলে বলে শিখতে এসেছে। আর এএফসিতে বলে এলিট রেফারি! আসলে ওই সময় আমাদের যে কি অবস্থা হয় তা বলে বোঝাতে পারব না। তাই রেফারি নিয়ে কিছু বলিনি। ভুটানে আমাকে মাঠ থেকে বের করে দেয়ার জন্য ধমকও দেয়া হয়েছিল। কারণ সে তো রেফারি।’ যথেষ্ট ক্ষোভ নিয়ে কথাগুলো বলেছেন গোলাম রব্বানী ছোটন। রবিবার বাংলাদেশ দল ভিয়েতনামকে হারালেও তাদের মূল প্রতিপক্ষ আসলে ছিলেন অজি রেফারি ক্যাথেরিন জ্যাসউইচ! তার নির্লজ্জ ও পক্ষপাতিত্বমূলক রেফারিংয়ের বিরুদ্ধে বারবার ভুগতে হয়েছে স্বাগতিক দলকে। ম্যাচ শেষে জয়ের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই এসেছে রেফারির প্রসঙ্গ। কারণ একটি নয়, তিন-তিনটি গোলে তিনি দৃষ্টিকটুভাবে বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছেন। এএফসির গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এ ধরনের রেফারি কেন? সেই প্রশ্ন সকলেরই। কোচ ছোটন সরাসরি রেফারির সিদ্ধান্তকে ভুল না বললেও কথাতেই বুঝিয়ে দিয়েছেন তার সিদ্ধান্তগুলো ঠিক ছিল না। অনেকটা পুরুষালী চেহারার জ্যাসউইচকে দর্শকরা মজা করে ‘উইচ’ (ডাইনি) বলে ডেকেছেন। বাংলাদেশের সঙ্গে কি যেন এক শত্রুতা আছে এ রেফারির! এর আগে ক্যাথেরিন বাংলাদেশকে ডুবিয়েছেন। সেটা বছর চারেক আগে। এই আসরেই। সেবার তিনি একবার নয়, দু’বার হারিয়ে দিয়েছিলেন বাংলাদেশকে। প্রথমবার ২০১৪ সালের ১৯ অক্টোবর। একটি পেনাল্টি আর এক লালকার্ড দেখিয়েই সর্বনাশ করে দিয়েছিলেন তিনি। সেই ম্যাচে ভারতের কাছে ২-১ গোলে হেরেছিল লাল-সবুজরা। ওই ম্যাচের ৬৩ মিনিটে ডি-বক্সের ঠিক বাইরেই বাংলাদেশী ডিফেন্ডার মাসুরা পারভীন বল চার্জ করেন প্রতিপক্ষের প্রেমী চিরুকে। লঘুপাপে গুরুদ- দেন রেফারি। লালকার্ড দেখিয়ে মাঠছাড়া করেন মাসুরাকে। এমন সিদ্ধান্তে হতবাক হয়ে যায় খেলা দেখতে আসা সবাই। ১০ জনের দলে পরিণত হয় বাংলাদেশ। কাশমিনার দর্শনীয় ফ্রি কিক বাংলাদেশের গোলকিপার আয়েশা ফিস্ট করে প্রতিহত করলেও ফিরতি বলেই উঁচু শট মেরে ভারতীয় ফরোয়ার্ড রোজা দেবী গোল করে ২-১ এগিয়ে নেন ভারতকে। পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশ খেলায় ফেরার আপ্রাণ চেষ্টা চালায়। কিন্তু ব্যর্থ হয় গোল পরিশোধ করে খেলায় ফিরতে পারেনি। এরপর ২৩ অক্টোবরের ম্যাচেও একই অবস্থা। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত খেলায় বাংলাদেশের বিপক্ষে ২-১ গোলের ঘাম ঝরানো জয় পায় ইরান। রেফারি ক্যাথেরিন পক্ষপাতিত্বমূলক রেফারিং করেন এই ম্যাচেও। তিনি অন্যায়ভাবে একটি পেনাল্টির নির্দেশ দেন ইরানের পক্ষে। যা কাজে লাগায় ইরান। রবিবারের অলিখিত ফাইনালে মুখোমুখি বাংলাদেশ বনাম ভিয়েতনাম। ম্যাচ শুরুর আগেই মাঠে তিন রেফারির একজনকে দেখে গ্যালারিতে ফিসফাস। কারণ এই ম্যাচে দায়িত্বে আছেন অস্ট্রেলিয়ান রেফারি ক্যাথেরিন জ্যাকুইজ মার্গারেট। তার মুখটা চেনেন অনেকেই। যে রেফারির কুখ্যাতি আছে বাংলাদেশের মেয়েদের বিতর্কিতভাবে গুরুত্বপূর্ণ দুটি ম্যাচে হারিয়ে দেবার। দর্শকদের আশঙ্কাই সত্য হয়েছে। এবারও গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে জোর করে দুই গোল বাতিল করেন এই রেফারি। কিন্তু এতকিছু করেও বাংলাদেশকে এবার আর হারাতে পারেননি।
×