ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জগাখিচুড়ির জাতীয় ঐক্য টিকবে না ॥ ওবায়দুল কাদের

প্রকাশিত: ২০:২৪, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

জগাখিচুড়ির জাতীয় ঐক্য টিকবে না ॥ ওবায়দুল কাদের

রাজন ভট্টাচার্য, কক্সবাজার থেকে ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জাতীয় ঐক্যের সমালোচনা করে বলেছেন, এটা আসলে এটা জগাখিচুড়ির জাতীয় ঐক্য। এই জগাখিচুড়ির ঐক্য শেষ পর্যন্ত টিকবে, এটা তার (কাদের) বিশ্বাস হয় না। সোমবার কক্সবাজারের কলাতলী বিচের পাশে একটি বেসরকারী হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে আওয়ামী লীগের তিনদিনের নির্বাচনী সড়কযাত্রার শেষদিনে সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এরপর দুপুরে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে বিমানযোগে ঢাকা ফিরে যান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। ‘নির্বাচনী ট্রেনযাত্রা ব্যর্থ হওয়ায় আওয়ামী লীগ সড়কযাত্রায় নেমেছে’- বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের পক্ষে, নৌকার পক্ষে ট্রেনযাত্রা ও সড়কযাত্রায় অচিন্ত্যনীয়, অবিশ্বাস্য ও অকল্পনীয় জনস্রোত দেখে বিএনপি একেবারেই হতাশ হয়ে পড়েছে। সেই হতাশা থেকেই বিএনপি আবোল-তাবোল বকছে। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের কোনো মাথা ব্যাথা নেই। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পথসভায় লাখ লাখ লোক। এর সমপরিমাণ জনসমাগম বিএনপি ঢাকায় করে দেখাতে পারবে? পারবে না। এখানেই তাদের গায়ের জ্বালা, অন্তর্জালা। এখানেই তাদের হতাশা। দলের এই নির্বাচনী ট্রেনযাত্রা ও সড়কযাত্রা সফল দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সব কিছুর কেন্দ্রাতিক শক্তি, সার্টিফিউক্যাল ফোর্স হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তার উন্নয়ন, তার ব্যক্তিত,¡ তার অর্জন, তার সরকারের অর্জন, তার সরকারে উন্নয়ন এবং তার সততার প্রতি এদেশের জনগনের গভীর আস্থা আছে। আজ দেশ-বিদেশে তার সততার জন্য সমাদৃত ও প্রশংসিত। এই উন্নয়ন, তার প্রতিশ্রুতি, ব্যক্তিত,¡ তার সৎ সাহস, সততার জন্য দেশের মানুষ আজ আস্থার সাথে এই যে ট্রেনযাত্রা, সড়কযাত্রার যোগ দিয়েছেন। যে কারণে পথসভা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। এটা শেখ হাসিনার ম্যাজিক লিডারশীপের সোনালী ফসল। বেসরকারি ওই রেস্টুরেন্ট পরিদর্শন সম্পর্কে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে আমার আসার উদ্দেশ্যে হোয়াইটস্যান্ডস বেসরকারি উদ্যোগ পর্যটনের বিকাশে কাজ করছে। আমি ঢাকায় তাদের একটা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলাম। তখন তারা আমাকে বলেছিল কক্সবাজারে কি কি করছে। আমি তাদের বলেছিলাম আমি যখন সময় পাই, কক্সবাজার গেলে আপনাদের পরিকল্পনা কোন কোন এলাকা ঘিরে আমি দেখব।’ তিনি বলেন, শুধু সরকারি উদ্যোগই পর্যটন বিকাশে যথেষ্ট নয়। বেসরকারী উদ্যোগ লাগবে। আমি তাদের কাজ দেখে সবচেয়ে বেশী খুশি হয়েছি, পৃথিবীর সবচেয়ে আনব্রোকেন সী বীচ কক্সবাজার। অথচ এখানে সন্ধ্যার পর কোন বিনোদন নেই। সন্ধ্যার পর রাতের কক্সবাজার যেন একেবারেই ফাঁকা ফাঁকা একটা ভুতুরে পরিবেশ। আমি রোহিঙ্গা সংকটের সময় প্রথম বারে বারে কক্সবাজার এসেছি। তখন সব মিলিয়ে ৩৫ দিন থেকেছি। তখন আমার অভিজ্ঞতা দেখেছি সন্ধ্যার পর এখানে কোনো ফ্যাসিলিটিস নেই। বড়দেরও জন্য নাই, ছোটদের জন্যও নেই, পর্যটকদের জন্যও নাই। এই হেটেল নির্মাতারা বলেছেন তারা এই বিষয়গুলো কে গুরত্ব দিচ্ছে। কাদের বলেন, আমরা উদ্যোগ নিয়েছি, মেরিন ড্রাইভকে আরো প্রশস্ত করা হবে। যাতে রাতের সমুদ্র মানুষ উপভোগ করতে পারে। পরিবেশটাকে আরও নান্দনিক করতে পারি সেই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সাগর যাতে দৃশ্যমান হয় সেজন্য রাতের বেলায় লাইটিং এর ব্যবস্থা করব। বেসরকারী উদ্যোগের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করতে এসেছি। তবে অতীতে দেখেছি এধরণের উদ্যোগ নিয়ে অনেক প্রতারণা হয়েছে। এই উদ্যোগ নিয়ে যেন প্রতারণা না হয় এটা তাদের প্রতি আমার আহ্বান। এ সময় ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম, স্থানীয় সংসদ সদস্য আশেকুল্লাহ রফিক ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। এবারের সড়কযাত্রায় কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম সহ কক্সবাজারে নয়টি জনসভা ও পথসভায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। ঢাকা থেকে আসতে রাস্তায় রাস্তায় হাজার-হাজার মানুষ গাড়ি বহরকে স্বাগত জানান। সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীরা নেতাকর্মী নিয়ে রাস্তায় ব্যাপক শোডাউন করে। সর্বশেষ আওয়ামী লীগের গাড়ি বহর অবস্থান কওে কক্সবাজার। চট্টগ্রাম বিভাগের নির্বাচিত সাংসদ, সম্ভাব্য প্রার্থী, সহ নেতাকর্মীরা চলে আসেন কক্সবাজারে। তারা দলের সাধারণ সম্পাদক সহ কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। এর আগে শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে আওয়ামী লীগের এই নির্বাচনী সড়কযাত্রা শুরু হয়। গত ৩০ আগস্ট আকাশপথে ঢাকা থেকে সিলেট গিয়ে সেখানে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নেন আওয়ামী লীগ নেতারা। পরে ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা-নীলফামারী রুট নির্বাচনী ট্রেনযাত্রা করেন দলটির উচ্চপর্যায়ের কয়েকজন নেতা। আগামী ২৯-৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকা-পটুয়াখালী-বরগুনা লঞ্চযাত্রা করবেন।
×