ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচনী জোট হয়নি ॥ ড. কামাল

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচনী জোট হয়নি ॥ ড. কামাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় ঐক্যের প্রধান ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য এই নির্বাচনী জোট গঠন করা হয়নি। আমরা চাই দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন হোক। যে নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দল অংশ নেবে। বিবিসি বাংলাকে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বাংলায় তার দেয়া বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে নীতিগত আপত্তি নেই এমন বক্তব্য আমি দেইনি। আমি বলেছি, আমাদের দাবি পূরণ হলে এবং নির্বাচনী পরিবেশ ঠিক থাকলে আমরা নির্বাচনে যেতে রাজি আছি। কিন্তু বিবিসি বাংলায় বক্তব্যটির ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সোমবার রাতে মতিঝিলে তার চেম্বারে অনুষ্ঠিত যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার শীর্ষ নেতাদের যৌথসভা শেষে এসব কথা বলেন তিনি। ড. কামাল হোসেন বলেন, পরোয়ানা ছাড়া যে কোন ব্যক্তিকে তল্লাশি, গ্রেফতার ও জব্দ করার জন্য পুলিশকে ক্ষমতা দেয়াসহ যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস করা হয়েছে, তার তীব্র নিন্দা জানাই। এ সময় তিনি অবিলম্বে এ আইন বাতিলের দাবি জানান। জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি এ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, বিকল্পধারা বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক প্রমুখ। প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে ড. কামাল হোসেন রাজি আছেন বলে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির বাংলায় বলা হয়। বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামো ও ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে নীতিগতভাবে ড. কামাল হোসেন রাজি আছেন বলেও ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এদিকে, বিকল্পধারার সাংগঠনিক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক বলেন, ‘বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যকে এগিয়ে নিতে একটি স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে ড. কামাল হোসেনের বেইলি রোডের বাসায় বৈঠক হবে। সেখানে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। বিএনপিকেও ওই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে আরেকটি সূত্র জানিয়েছে। এ প্রসঙ্গে কামাল হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য এই নির্বাচনী জোট গঠন করা হয়নি। সরকার আসতে পারে তো এখানে। সরকারী দলকে আশ্বাস দিতে পারেন যে, এ রকম কোন সিদ্ধান্ত আমাদের মাথায় ছিলই না যখন আমরা এটা করি। শুরু ছিল যে সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে যারাই নির্বাচনে, ইনক্লুডিং সরকারও এই জোটে আসতে পারে। সুষ্ঠু নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই যেমন সুষ্ঠু নির্বাচন হলো যে, ভোটার লিস্টগুলো নিরপেক্ষভাবে এবং সঠিকভাবে তৈরি করা হবে। সকলকে সেই সুষ্ঠু ভোটার লিস্টের ভিত্তিতে ভোট দেয়ার সুযোগ নিশ্চিত করা হবে। সংবিধান অনুযায়ী নিরপেক্ষ সরকার দিয়ে নির্বাচন করা যাবে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা যাবে না। সেটা তো মানে, সংবিধানে এটা তো মানুষের চরিত্রের বিষয়। আমরা বলছি বিভিন্ন দলের যারা নেতৃবৃন্দ আছেন তারা যখন একটা স্বাক্ষর করবেন যে, আমরা কেউ এখানে হস্তক্ষেপ করব না, আমরা এই প্রক্রিয়াকে একটা নিরপেক্ষ প্রক্রিয়া হিসেবে হতে দেব। সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে জাতীয় ঐক্যের পক্ষ থেকে কোন প্রস্তাব না থাকার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সেগুলো তো আইন এবং সংবিধান দেখলে তো ওখানে বলা আছে। নির্বাচন হবে, নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হবে, সকলেই যারা এখানে, মানে প্রতিযোগিতা করতে চান, এসে করতে পারবেন। এবং সেটা নির্বাচন কমিশন এটার রেফারি হিসেবে পরিচালনা করবে। কোন রকমের যদি নিরপেক্ষতা থেকে কেউ সরে যায় তো সেটাকে তারা চিহ্নিত করবে এবং এটাকে অবৈধ বলবে। এবং যদি সে, এ রকম অবৈধ কোন জিনিস না হয়, যেটা নিয়ে ইলেকশন কমিশনকে বলতে না হয় যে এ নির্বাচন অবাধ নিরপেক্ষ হলো না, তখন তারা এটার রায় দেবে না আর কি। তো এগুলো তো ইলেকশন আইনের মধ্যেই আছে।
×