ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

২৯ সেপ্টেম্বর রাজপথ দখলে রাখার ঘোষণা ১৪ দলের

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

২৯ সেপ্টেম্বর রাজপথ দখলে রাখার ঘোষণা ১৪ দলের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর পূর্বঘোষিত সমাবেশের দিন বিএনপির পাল্টা সমাবেশ ডাকায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ওইদিন ঢাকার রাজপথ দখলে রাখার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। দলটির কেন্দ্রীয় মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তথাকথিত ঐক্যের নামে বিএনপি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। এ কারণে তারা অসাংবিধানিক দাবি আদায় করতে পরিত্যক্ত, জনবিচ্ছিন্ন ও দলছুট নেতাদের ভাড়া করেছে। তবে তাদের এই ষড়যন্ত্র সফল হবে না। ১৪ দলের নেতা-কর্মীরা ওইদিন (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজপথসহ সারাদেশের মাঠ দখলে রাখবে। কোনও চক্রান্ত-নৈরাজ্য হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ইনশাআল্লাহ আমরা প্রতিহত করব। চক্রান্তকারীরা পরাজিত হবেই। মাঠ গরম করার নামে দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না। শুধু ঢাকা নয়, সারা বাংলাদেশ শেখ হাসিনার দখলে থাকবে। মহানগর নাট্যমঞ্চে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বরের বিকেল ৩টায় ১৪ দলের সমাবেশ কর্মসূচী সফল করতে এই প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়। সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম আরও বলেন, চক্রান্তকারীরা মাঠে নামবে। আমরা দেখব, কারা মাঠে নামবে আর কে নামবে না? আগে থেকেই ঢাকা দখলে ছিল আমাদের, ইনশাআল্লাহ আগামীতেও ঢাকা আমাদের দখলে থাকবে। শুধু ঢাকা নয়, সারা বাংলাদেশ শেখ হাসিনার দখলে থাকবে। জোটের নেতাকর্মীদের যেকোনও চক্রান্তের বিরুদ্ধে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা এলাকায় প্রস্তুত থাকবেন, যেন ওই অপশক্তি মাঠে নামতে না পারে। ওদের মাঠে প্রতিহত করবেন, রাস্তায় প্রতিহত করবেন। আগামী এক মাস জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পাড়া-মহল্লায় সজাগ থাকতে তিনি ১৪ দলের নেতাকর্মীদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান। আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছে জানিয়ে জোটের মুখপাত্র নাসিম বলেন, নির্বাচনের প্রচারের কাজ শুরু হয়ে গেছে। আমাদের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ইতোমধ্যে জেলা-উপজেলায় নির্বাচনী প্রচারের কাজ শুরু হয়েছে। ১৪ দলের শরিক দলগুলোও দেশের বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচনের প্রচারের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। আমরা চাই, এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হোক। কিন্তু যখন কোনও উত্তপ্ত রাজনীতিবিদরা, দলছুট রাজনীতিবিদরা, যাদের আদর্শের কোনও ঠিকানা নেই, দলের কোনও স্থায়ী ঠিকানা নেই, তারা গণতন্ত্রের কথা বলেন; তখন আমাদের সন্দেহ হয় যে, আবারও সেই অসৎ চক্রান্ত শুরু হয়ে গেছে। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে ৫ বছর পর পর এটা একটা নিয়ম। এখন ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া দেখানোর কোন সুযোগ নেই। যখন দেশে গণতন্ত্রের লড়াই হয়েছে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে তখন এই মুখ চেনা মহলটি নানান অজুহাত তুলে নির্বাচনকে বিলম্বিত করার জন্য চক্রান্ত করেছে। এ দেশে যতগুলো অবৈধ শাসন এসেছে তাদের পেছনে এরা মদদ দিয়েছে। তবে বাংলাদেশের মানুষ সব সময় গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে, সংগ্রাম করেছে। কিছুদিনের মধ্যেই হয়ত নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী সিডিউল ঘোষণা করবে তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী। সেখানে কি কারণে তথাকথিত ঐক্যের নামে বিভিন্ন কর্মসূচী ঘোষণা দেয়া হয়েছে? এর মধ্যে কি আছে? জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের উদ্দেশে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আমরা এতদিন দেখেছি খেলার সময় খেলোয়াড় ভাড়া করা হয়, এখন দেখছি ড. কামাল হোসেনের মতো নেতারাও ভাড়ায় যাচ্ছেন। আমাদের সঙ্গে খেলবেন, খেলেন। কোন সমস্যা নেই। ভাড়াটে খেলোয়াড় দিয়ে কি কখনও জয় পাওয়া যায়? যায় না। যাদের নিজেদেরই কোন অস্তিত্ব নেই তারা অন্য দলে গিয়ে কি অস্তিত্ব পাবে?’ জাতীয় ঐক্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা (যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারা) বর্ণচোরা। আপনাদের প্রতি দেশের জনগণের আস্থা নেই। আর বিশ্বাস করি আপনাদের কর্মীদেরও আপনাদের প্রতি আস্থা নেই। নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের নামে সেনাবাহিনীকে উত্তেজিত করা হচ্ছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, ‘সেনাবাহিনীকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সকলের মনে আছে ২০০১ সালে কীভাবে একটি দলকে পরাজিত করার চক্রান্ত করা হয়েছিল। পৃথিবীর কোন দেশে তাদের সেনাবাহিনীকে এভাবে ব্যবহার করা হয় না। আমরা দেখেছি কীভাবে সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে অতীতে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বর্তমান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যথেষ্ট। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে কাজ করবে। নির্বাচন কমিশন যে সিদ্ধান্ত দেবে, সে অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করবে।’ সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদসহ মহানগর ১৪ দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
×