ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দক্ষতা ও আর্থিক অবস্থার ভিত্তিতে অগ্রাধিকার দেয়া হবে

ব্রেক্সিট পরবর্তী অভিবাসন নীতি

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ব্রেক্সিট পরবর্তী অভিবাসন নীতি

ব্রিটেনের মন্ত্রিসভা সোমবার ব্রেক্সিট পরবর্তী অভিবাসন নীতি অনুমোদন করেছে। এই নীতির আওতায় দক্ষতা ও আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় ভিসা দেয়া হবে। আগামী সপ্তাহে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে তার নতুন অভিবাসন নীতি তুলে ধরবেন। গার্ডিয়ান। ডাউনিং স্ট্রিট আশা করছে, দলের যেসব সদস্য টেরেসা মে’র নেতৃত্ব ও ব্রেক্সিট নিয়ে দর কষাকষির সক্ষমতা নিয়ে উদ্বিগ্ন নতুন অভিবাসী নীতি তাদের পছন্দ হতে পারে। মে গত সপ্তাহে অস্ট্রিয়ার সালজবার্গে ইউরোপীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তার নিজের ব্রেক্সিট পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। মে’র নিজস্ব বেক্সিট পরিকল্পনাটি চেকার্স পরিকল্পনা নামে পরিচিত। ইউরোপীয় নেতৃবৃন্দ জানিয়ে দিয়েছেন চেকার্স পরিকল্পনাটি বাস্তবসম্মত নয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ মে সরকারের অভিবাসন পরিকল্পনাটি মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করেন। এতে বলা হয়েছে, দক্ষ শ্রমিকরা সহজেই ব্রিটেনে প্রবেশের ভিসা পাবেন। তবে ইইউ দেশগুলো থেকে আসা অদক্ষ শ্রমিকরা কোন অগ্রাধিকার পাবে না। ইইউসহ যেসব দেশ যুক্তরাজ্যের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করবে সেসব দেশের শ্রমিকদের ব্রিটিশ শ্রম বাজারে ঢোকার সুযোগ থাকবে। ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাসহ আরও কয়েকটি দেশ এই চুক্তির মধ্যে আসতে পারে। বৈঠকে ব্রেক্সিট আলোচনা নিয়ে কোন উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়নি। তবে মে’র পরিকল্পনাবিরোধী অংশটি তার ওই পরিকল্পনা বাদ দেয়ার জন্য চাপ দেন। এ বিষয়ে ‘কানাডা স্টাইলের’ একটি চুক্তি করার কথাও আসে। কানাডা স্টাইল চুক্তির কথা বলেন স্বয়ং মে। তিনি তার বক্তব্যে গত সপ্তাহে ইইউ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তার আলোচনার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘এখানে উপস্থিতি অনেকের চেয়ে ইইউ নেতৃবৃন্দ ছিলেন বেশি গঠনমূলক।’ তবে কোন ইইউ নেতৃবৃন্দ গঠনমূলক মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন সেটি মে স্পষ্ট করে বলেননি। মন্ত্রিসভার সোমবারের বৈঠকটি ছিল মে’র জন্য স্বস্তিমূলক। ব্রেক্সিট পরিকল্পনা নিয়ে কয়েক সপ্তাহ যাবত তিনি যথেষ্ট রাজনৈতিক চাপের মধ্যে ছিলেন। এদিকে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে মঙ্গলবার তার নিউইয়র্ক রওনা হওয়ার কথা রয়েছে। গত সপ্তাহে সরকারের মাইগ্রেশন এ্যাডভাইজরি কমিটি দক্ষ শ্রমিকদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ভিসা দেয়ার প্রস্তাব করেছিল। সোমবার জাভিদের উত্থাপিত অভিবাসন নীতিতে কমিটির সুপারিশের প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায়। স্বাধীন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়ে ওই কমিটি গঠিত। তবে প্রস্তাবিত নীতিমালায় অদক্ষ শ্রমিকদের ভিসার সুযোগ না রাখায় বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারেন। নির্মাণ, পরিবহন ও সেবাখাতে প্রচুর দক্ষ-অদক্ষ শ্রমিক প্রয়োজন হয়। মাইগ্রেশন কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছিল অদক্ষ শ্রমিকরা অর্থনীতিতে কিছু সংযোজন করে না, তবে পরিবহন ও সেবাখাতে যথেষ্ট শ্রমিকের প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করেছেন সাজিদ। তাই তিনি এসব খাতের জন্য শ্রমিকের প্রবাহ রাখার কথা বলেছেন। বৈঠক শেষে ব্রেক্সিট মন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেছেন, ‘সবমিলিয়ে একটি ভাল আলোচনা হয়েছে।’ সরকারী সূত্র জানায়, ব্রিটেন যদি কোন চুক্তি ছাড়াই ইইউ ছাড়াই ছাড়ে সেক্ষেত্রে ইইউ নাগরিকরা ব্রিটেনে আসার পর ৩০ মাসের একটি অন্তর্বর্তী সময় পাবে, সাজিদ এমন একটি প্রস্তাব করেছিলেন তবে সেটি গৃহীত হয়নি। ক্ষমতাসীন দলের একজন এমপি বলেছেন, চেকার্স পরিকল্পনা নিয়ে মে যথেষ্ট সমর্থন পাননি। তাই তিনি কানাডা স্টাইলে একটি বাণিজ্য চুক্তি করার বিষয়টি বিবেচনা করছেন।
×