ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জেলেদের জালে ধরা পরছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ

প্রকাশিত: ২৩:৪৩, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

জেলেদের জালে ধরা পরছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ মৌসুমের শেষ ভাগে নদীতে ধরা পরতে শুরু করেছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। তবুও হাসি নেই ব্যবসায়ী এবং জেলেদের মুখে। কারন ইলিশ ধরা পরার শুরুর মুহুর্তেই এসে পরেছে নিষেধাজ্ঞার সময়। প্রজনন মৌসুমের কারনে আগামী ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। আর এ কারনেই ক্ষতির আশংকা করছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবী আবহাওয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ইলিশ শিকারের মৌসুম পরিবর্তন হলেও পরিবর্তন আসেনি নিষেধাজ্ঞার সময়ের। অবশ্য মৎস্য বিভাগের দাবি, ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্যই বৈজ্ঞানিকদের দেয়া সময় অনুযায়ী ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হচ্ছে। নগরীর পোর্ট রোডের অন্যতম মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ আগেও সকালটা কর্মব্যস্ত সময় পার করলেও বিকেলে অলস সময় কাটাতে হয়েছে পোর্ট রোডের মৎস্য আড়তের ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের। কিন্তু গত তিনদিন ধরে হঠাৎ করেই পাল্টে গেছে সেই চিত্র। কাকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় কাটাতে হচ্ছে তাদের। গত তিন দিন ধরে পোর্ট রোডের মোকামে ইলিশের আমদানী দ্বিগুনের বেশি বেড়ে গেছে। এগুলো সবই নদীর মোহনা থেকে শিকার হওয়া ইলিশ। গত তিন দিনে এই অবতরণ কেন্দ্রে প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার মন ইলিশ আসছে। এমনকি প্রতিদিন ২০ থেকে ২২টির মত ট্রাকে তা রফতানী হয়েছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। হঠাৎ করে নদীর ইলিশ ধরা পরতে শুরু করলেও হতাশা এবং উৎকন্ঠা কাটছে না জেলে এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে। লাখ লাখ টাকা দাদন দিয়ে ব্যবসা করে আসা মৎস্য আড়ৎদাররা আশংকা করছেন ক্ষতির। এর কারন হিসেবে সামনে নিয়ে আসা হচ্ছে আগামী ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি। কেননা ২০০৮ সাল থেকে সরকারের ইলিশ সংরক্ষন পদ্ধতি এবং নিষেধাজ্ঞার কারনে সাগর ও নদ নদীতে ইলিশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন বড় বড় সাইজের ইলিশও পাওয়া যাচ্ছে। বরিশাল মৎস্য আড়তে ইলিশ কমে যাবার পেছনে অন্য কারণ রয়েছে। আগে দক্ষিণাঞ্চল থেকে দেশের অন্যান্য জেলা উপজেলাগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো ছিলোনা। তাই ভোলা, কলাপাড়া, মহিপুরসহ অন্যান্য অঞ্চলের মাছও বরিশাল পোর্ট রোডে নিয়ে আসা হতো। পরবর্তীতে এখান থেকে সেগুলো দেশের বিভিন্নস্থানে রফতানী করা হতো। কিন্তু এখন সবখানে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতী হয়েছে। তাই বরিশালে না এসে মাছগুলো সরাসরি নির্দিষ্টস্থানে রফতানী করা হচ্ছে। এ কারনেই বরিশালের আড়তে মাছের আমদানী কমে গেছে। তিনি আরও বলেন, মা ইলিশের প্রজনন জো চারটি। অর্থাৎ আগস্ট, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বরে মা ইলিশগুলো ডিম ছেড়ে থাকে। তার পরেও আমরা দুইটি মাত্র জোতে এই নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকি। বাকি দুটি জোর মধ্যে জেলেদের ইলিশ শিকারের সুযোগ দেয়া হচ্ছে। এতে করে এক জোতে ব্যর্থ হলে অন্য জোতে তারা ইলিশ ধরতে পারছেন। এক্ষেত্রে কোন বাঁধা আসছে না। মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, চলতি মৌসুমে একটু দেরিতে নদীতে ইলিশ ধরা পরেছে। তবে এখন যা ধরা পরছে তার সবই এলসি সাইজের ইলিশ। নিষেধাজ্ঞার মধ্যে এই ইলিশগুলো বড় হবে। যা ধরা পড়বে নিষেধাজ্ঞা শেষে। সুতরাং হতাশ হওয়ার কোন কারণ নেই।
×