ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারে নারী পুরুষের বৈষম্য সবচেয়ে বেশি

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ৩ অক্টোবর ২০১৮

দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারে নারী পুরুষের বৈষম্য সবচেয়ে বেশি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আফটার এ্যাকসেস সমীক্ষায় বাংলাদেশে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটের ব্যবহার এবং প্রাপ্যতা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে। মঙ্গলবার ঢাকার একটি হোটেলে এ তথ্য প্রকাশ করে আইসিটি পলিসি ‘থিংক ট্যাংক’ লার্ন এশিয়া। প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৭ সালের শেষ নাগাদ ১৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সী মাত্র ১৩ শতাংশ বাংলাদেশী নাগরিক ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছে। যদিও এই বয়সের মানুষদের ৪৫ শতাংশেরই কমপক্ষে একটি ইন্টারনেটবান্ধব ডিভাইস (স্মার্টফোন, ট্যাব, ল্যাপটপ ইত্যাদি) রয়েছে। তবে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারে নারী-পুরুষের বৈষম্য সবচেয়ে বেশি। গ্লোবাল সাউথে (উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে) মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটের ব্যবহার ও প্রাপ্যতা বিষয়ে আফটার এ্যাকসেস গবেষণার অংশ হিসেবে এ তথ্যগুলো উঠে এসেছে। মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সর্বব্যাপী হয়ে উঠছে। মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী এবং এর ব্যবহার বিষয়ে তথ্য সরকার এবং সিদ্ধান্ত প্রণেতাদের কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে- বলেন এশিয়া বিভাগের প্রধান গবেষক ও লার্ন এশিয়ার প্রধান নির্বাহী হিলানি গালপায়া। তিনি বলেন, এ বিষয়ে তথ্য এখনও অপ্রতুল। এ গবেষণায় বাংলাদেশের ৪০টি জেলার ১০০টি ওয়ার্ড ও গ্রামে ২ হাজার পরিবার ও ব্যক্তির ওপর সমীক্ষা চালানো হয়েছে। বাংলাদেশসহ আফ্রিকা, এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার ১৮টি দেশে একই গবেষণা পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে। এর ফলে প্রাপ্ত তথ্যগুলো নিঃসন্দেহে গ্লোবাল সাউথে (উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলোর) মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের সবচেয়ে নির্ভুল ও বিস্তারিত তথ্যের ডেটাবেজ। ৩৮ হাজার ৫ জন ব্যক্তি ও পরিবারের মুখোমুখি সাক্ষাতকার এবং সাক্ষাতকার প্রদানকারীদের নারী-পুরুষের সংখ্যাগত বিভাজন, গ্রামীণ বা শহর এলাকার বাসিন্দা কিনা এবং বয়সসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে তথ্যগুলো সন্নিবেশ করা হয়েছে। লার্ন এশিয়ার সিনিয়র পলিসি ফেলো আবু সাইদ খান বলেন, এই গবেষণা প্রতিবেদনটি টেলিকম খাতের মূল বিষয়গুলো তুলে ধরেছে এবং এতে মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের যে বৈষম্য রয়েছে সেই চিত্রটি ফুটে উঠেছে। ১৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সের যেসব বাংলাদেশী ইন্টারনেট ব্যবহার করেন না তারা এর কারণ হিসেবে জানিয়েছেন, ইন্টারনেট কী সে সম্পর্কে তাদের কোন ধারণা নেই। এই তথ্য প্রমাণ করে, বাংলাদেশের জনসাধারণের মধ্যে ইন্টারনেট এবং এর ব্যবহার সম্পর্কে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টির প্রয়োজন। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে শহর ও গ্রামের মোবাইল ফোনের মালিকানার ব্যবধান (৭ শতাংশ) এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার যে দেশগুলোতে জরিপ চালানো হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে কম। গ্রামাঞ্চলে বাস করা ১৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সী মানুষ শহরের একই বয়সের মানুষের চেয়ে ৪২ শতাংশ কম ইন্টারনেট ব্যবহার করে। যতগুলো দেশে সমীক্ষা চালানো হয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারে নারী-পুরুষের বৈষম্য সবচেয়ে বেশি। ১৫ থেকে ৬৫ বয়সের পুরুষদের তুলনায় একই বয়সের ৩৪ শতাংশ কম নারীর নিজস্ব মোবাইল ফোন আছে এবং ৬২ শতাংশ কম নারী ইন্টারনেট ব্যবহার করে।
×