ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মঞ্চ নয়, ইন্টারনেটেই জাদু দেখান জুলিয়াস

প্রকাশিত: ০৭:৫৮, ১২ অক্টোবর ২০১৮

মঞ্চ নয়, ইন্টারনেটেই জাদু দেখান জুলিয়াস

লন্ডনের ২৩ বছরের তরুণ জুলিয়াস ডেইনকে রাস্তার ম্যাজিশিয়ান বলা চলে। অপরদিকে তিনি ইন্টারনেটের, ফেসবুকের ম্যাজিশিয়ান, কেননা সেখানেই তাঁর অগুনিত ফ্যান আর ফলোয়ার। মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে এই ভিডিওটা ফেসবুকে দেখা হয়েছে দুই কোটি চল্লিশ লাখ বার। ম্যাজিক দেখিয়ে ইন্টারনেটে লাখ লাখ দর্শককে খুশি করার, চমকে দেয়ার ক্ষমতা আছে লন্ডনের এই ২৩ বছর বয়সী তরুণের। ইন্টারনেট ম্যাজিশিয়ান জুলিয়াস ডেইন বললেন, ‘আমার বাবা ব্যাপারটা এখনও বুঝে উঠতে পারেননি। সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে ওঁর কোন সম্পর্ক নেই। কাজেই আমি যখন বাবাকে বললাম, গত সপ্তাহে আমার এই ভিডিওটা ফেসবুকে পাঁচ কোটি বার দেখা হয়েছে, তখন বাবা বললেন- ‘বাঃ বেশ। তোমার পরীক্ষা কেমন চলছে?’ তখন আমি সবে ভিডিও তৈরি করা শুরু“করেছি।’ ইন্টার্নশিপের বদলে ম্যাজিক মাত্র বছর দুয়েক আগে নেশা বা পেশাটার শুরু“: এক্সচেঞ্জ স্টুডেন্ট হিসেবে ক্যালিফর্নিয়ায় গিয়ে, সেখানে তাঁর প্রথম ক্লিপগুলো তৈরি করেন জুলিয়াস ডেইন। সতীর্থরা যখন ইন্টার্নশিপ নিয়ে ব্যস্ত, জুলিয়াস তখন নেটে তাঁর জনপ্রিয়তা বাড়ানোয় মশগুল। দেশে ফিরে নিজের ট্রিকগুলোকে আরও চমকদার করার ফাঁকে পড়াশোনা শেষ করে, পুরোপুরি জাদুবিদ্যায় মন ঢেলে দেন জুলিয়াস। বিশেষ করে যেসব ভিডিও তিনি ছোটখাট ম্যাজিক দেখিয়ে মহিলাদের মুগ্ধ করেন, সেগুলো বিশেষভাবে জনপ্রিয়। তাঁর ‘কী করে একটি মেয়েকে ম্যাজিক দেখিয়ে চমকে দিতে হয়’ পর্যায়ের ভিডিওগুলো সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ কোটি ক্লিক পেয়েছে। ছাত্রাবস্থাতেই ঘরোয়া আসর বা পার্টিতে ম্যাজিক দেখিয়েছেন জুলিয়াস। আজ তাঁর ফেসবুকে ফলোয়ারের সংখ্যা ৮০ লাখের বেশি। তাদের নানারকম প্রতিক্রিয়া শোনা যায়। ফর্মুলা ধরা যাক জুলিয়াস বেরিয়েছেন ইস্ট লন্ডনে, কয়েকটা নতুন ম্যাজিক ট্রাই করে দেখার জন্য। কিন্তু ঠিক দর্শক পাওয়া চাই। জুলিয়াসবলেন, ‘পাঁচ কোটি ভিউয়ারের পছন্দের মতো ভিডিও তৈরি করার জন্য এমন দর্শক চাই, যাদের প্রতিক্রিয়া দেখার মতো হবে। সাধারণত সে ধরনের মানুষদের দেখলে বোঝা যায়, তারা নিজের ওপর আস্থা রাখে, তারা খোশমেজাজের, তাদের সঙ্গে কথা বলা যায়।’ খানিক বাদেই একটা চুল কাটার সেলুনের সামনে সেরকম দর্শক পাওয়া গেল। আজকের ম্যাজিকটা দেখানোর জন্য জুলিয়াসের একটা ফেল্টপেনের বেশি কিছু লাগবে নাÑ এক জাদুবিদ্যা ছাড়া? তাহলে তো হয়েই যেত। ‘ইন্টারনেটে এক থেকে পাঁচ মিনিটের ভিডিও দেখলে মনে হবে যেন তৈরি করতে কোন কষ্টই হয়নিÑ আসলে কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লাগে। ঠিক টিম, ঠিক লোকেশান, ঠিক ম্যাজিক যা শিখতে ১০ ঘণ্টা থেকে ১০০ ঘণ্টা সময় লেগে যেতে পারে,’ জানালেন জুলিয়াস ডেইন। শুধু ভেলকি দেখানোই নয়, লোকজনকে বোকা বানাতেও জুলিয়াসের জুড়ি নেই, বিশেষ করে রাস্তাঘাটে সম্পূর্ণ অচেনা মানুষদের। নিজের দাদিমাও জুলিয়াসের ফাজলামো থেকে রেহাই পাননি- ফেসবুকে ন’কোটি বিশ লাখ বার দেখা হয়েছে সে ভিডিও, জুলিয়াসের বিগেস্ট হিট। তবে ভাইরাল ভিডিও তৈরি করতে গেলে খেয়াল রাখতে হবে, ফ্যানরা ঠিক কি চায়Ñ ‘চটপটে উপস্থাপনা; সেই রকমই চটপটে কন্টেন্ট, চটপট পাতা উলটে যাওয়ার মতো। শীর্ষকগুলো বেশি বড় হলে চলবে নাÑ পুরোটা একটা ফর্মুলা। ফর্মুলা ফলো না করলে ভাইরাল হওয়া যাবে না।’ এ এমন একটা ফর্মুলা, যার কল্যাণে জুলিয়াস আজ অনলাইনে ম্যাজিক দেখিয়েই জীবনধারণ করতে পারেন। তবে বড় বড় ম্যাজিশিয়ানরা যা রোজগার করেন, জুলিয়াসের আমদানি তার ধারে-কাছে নয়। অথচ তাঁর রাস্তার ম্যাজিক দেখিয়েই দুনিয়াকে মুগ্ধ করেছেন জুলিয়াস ডেইন। সূত্র : ডয়েচে ভেলে
×