ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিচিত্র খবর ॥ সেরা গরু সুন্দরী!

প্রকাশিত: ০৭:৫৯, ১২ অক্টোবর ২০১৮

বিচিত্র খবর ॥ সেরা গরু সুন্দরী!

সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা সাধারণত নারীদের নিয়েই হয়ে থাকে এবং এটাই বেশি প্রচলিত। তবে নারীদের পাশাপাশি আমরা বিভিন্ন প্রাণীরও সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার কথা শুনে এসেছি। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গরুর সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার একটি অভিনব ও মজার আয়োজন। জার্মানির লোয়ার স্যাক্সনি রাজ্যে গরুর রূপগুণ বিচার করতে অভিনব এক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। মূল প্রতিযোগিতার পাশাপাশি ছিল আরও অনেক কার্যকলাপ। যেমন গরুর ছবির শূটিং। ‘আফ্রিকা’ নামের একটি গরুর মুখচ্ছবিতে কৌতূহলের অভিব্যক্তি আনতে একটি বল ব্যবহার করা হয়। মঞ্চের আড়ালে স্টিভ ম্যাকলাউলিন নামের একজন ছিলেন গরুর সৌন্দর্য বাড়ানোর কাজে ব্যস্ত ছিলেন। নারীর সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার মতো এক্ষেত্রেও বিশেষজ্ঞদের আনা হয়। আয়ারল্যান্ড থেকে স্টিভ ম্যাকলাউলিন নামে একজন গরুর স্টাইলিস্টকে এ প্রতিযোগিতায় আনা হয়েছিল। প্রতিযোগিতাটির নাম ছিল ‘হলস্টাইন শো’। ফাইনালের আগে ছিল বাছাই পর্ব। জার্মানি আর লুক্সেমবুর্গের অন্তত ২০ লাখ সুন্দরী ও স্বাস্থ্যবতী গরু“অংশ নেয় এই পর্বে। ২০ লাখ থেকে ‘গ্র্যান্ড চ্যা¤িপয়ন’ হওয়ার আশা নিয়ে ফাইনালে উঠেছিল মাত্র দু’শ সুন্দরী। মানবীদের বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতার মতো কোন প্রতিযোগী জিরো ফিগার নিয়ে এলে বাছাই পর্বেও নাম লেখাতে পারেনি। বিচারকরা এমন সব গরুই বেছে নিয়েছেন যাদের দু’জোড়া শক্ত পায়ের ওপর রয়েছে সবল, সুদৃঢ় কাঠামো এবং যাদের দুধের বানও বেশ বড়। গরু“সুন্দরীদের সাজগোজের জন্য ছিল ব্যাপক আয়োজন। শীতপ্রধান দেশ বলে গরুদের গায়ের রোম অনেক বড় বড় হয়। মাথার পাশে অনেক গরুর এমন ঘন ও দীর্ঘ রোম থাকে যে তাদের ‘সুকেশিনী’ বলা যায় নির্দ্বিধায়। তাদের চুল কাটার জন্য ছিল বিশেষ সেলুন। পাঁজর আর দুধের বাটে মাখানোর জন্য ছিল বেবি অয়েল। চুল রং করানোর জন্যও ছিল বিশেষ ব্যবস্থা। বিশ্ববিখ্যাত মডেলদের মতো ক্যাটওয়াকেও অংশ নিয়েছে গরু-সুন্দরীরা। কান খাড়া করে, নিতম্ভটা একটু যৌনাবেদনময়ীর ভঙ্গিতে তুলে সামনের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রেখে আত্মবিশ্বাসী পদক্ষেপে যারা এগিয়ে যেতে পেরেছে, তাদেরই ফুল মার্কস দিয়েছেন বিচারকরা। প্রশিক্ষকরা প্রতিযোগীদের বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, পরিমিত খাবে এবং ঘুমাবে। শরীর কখনও নোংরা করা যাবে না। প্রতিদিন শাওয়ারের নিচে দাঁাঁতে হতো প্রতিযোগীদের। চার পায়ের খুরও পরিষ্কার করা হতো প্রতিদিন। বিশ্রাম নিতে হতো বাঁধা সময় মেনে। এসব সুঅভ্যাস রপ্ত করে তবেই সবাই ফাইনালে হাজির হয়েছিল বিচারকদের প্যানেলের সামনে। বিচারকদের কাছে জরুরী বিষয় হলো শারীরিক গঠন, দীর্ঘ আয়ু এবং দুধ দেয়ার ক্ষমতা। বয়স্ক ও কম বয়সী গরুর মূল্যও আলাদা। প্রতিযোগিতায় জয়ী হওয়ার জন্য গরুর শারীরিক গঠন ভাল হতে হবে। তাছাড়া অনেক খাদ্য খাওয়ার জন্য পেট যথেষ্ট গভীর হওয়া চাই, পাঁজর শক্ত হওয়া চাই। বাঁট মজবুত হতে হবে এবং তা গোঁড়ালি থেকে অনেক ওপরে থাকতে হবে। যতটা সম্ভব দীর্ঘ সময় ধরে গরুকে অনেক দুধ উৎপাদন করতে হবে। অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্য, এমন গরু“দিনে ৪০ লিটার দুধ উৎপাদন করতে পারে। তারা যাতে নিজেদের বাঁটের ভারে কাবু না হয়ে পড়ে, তা নিশ্চিত করতে প্রজননকারীদের গরুর শারীরিক গঠনের প্রতি মনোযোগ দিতে হয়। শুধু তাই নয়, প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার জন্য গরুর দীর্ঘ আয়ুও নিশ্চিত করতে হয়। এই অভিনব সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় জার্মানি আর লুক্সেমবুর্গের দু’শরও বেশি গরু“প্রদর্শিত হয়। অভিনব এ প্রতিযোগিতায় অনেক গরুই পুরস্কার পেয়েছে। তবে তাদের মধ্যে সেরা সৌন্দর্যের স্বীকৃতি পায় আট বছর বয়সী ‘লেডি গাগা’ নামের একটি গরু। সেরা সুন্দরীর এই শিরোপা তার অক্ষুণœ থাকবে দুই বছরের জন্য।
×