ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রীষ্মকালীন পালংশাক চাষে সফল ফরিদপুরের বাচ্চু মোল্লা

প্রকাশিত: ০৪:৪৬, ১৩ অক্টোবর ২০১৮

 গ্রীষ্মকালীন পালংশাক চাষে সফল ফরিদপুরের বাচ্চু মোল্লা

গ্রীষ্মকালীন পালংশাক উৎপাদন করে সফলতা পেয়েছেন ফরিদপুরের কৃষক বাচ্চু মোল্লা (৩৮)। নিজের ১২ শতাংশ জমিতে উপরে পলিথিনের শেড দিয়ে তিনি আবাদ করেছেন এ পালং শাক। অনুসন্ধিৎসু এ চাষী নিজের বুদ্ধিতেই গতবছর শীতকালীন পালং শাকের বীজ দিয়ে দুই শতাংশ জমিতে পালংশাক রোপণ করে অবাক করা সাফল্য পেয়েছিলেন। সে অভিজ্ঞতা পুঁজি করে এ বছর ১২ শতাংশ জমি বেদি আকারে ছয় ভাগ করে বাঁশ দিয়ে উঁচু মাচা বানিয়ে পলিথিনের শেড তৈরি করে তার মধ্যে রোপণ করেন পালংশাক। ফরিদপুর সদর উপজেলার আলীয়াবাদ ইউনিয়নের বিল মাহমুদপুর গ্রামে বাচ্চু মোল্লার বাড়ি ও বাড়ি সংলগ্ন জমিতে গিয়ে তার সঙ্গে গ্রীষ্মকালীন পালং চাষ নিয়ে কথা হয়। তিনি জানান, গত ২২ আগস্ট তিনি মাটিতে বীজ রোপণ করেন। রোপণের ১৮ দিনের মাথায় তিনি শাক বিক্রি শুরু করেন। এ পর্যন্ত দুই দফা শাক তুলে বিক্রি করেছেন। আগামী ১০ দিনের মধ্যে আরও দুই দফা বিক্রি করতে পারবেন। দুই শতাংশ করে ছয়টি শেড নির্মাণ করেছেন তিনি। শেড নির্মাণ এবং বীজ বপন সার দেওয়া ও পরিচর্যাবাবদ প্রতি শেডের পিছনে তার খরচ পড়েছে পাঁচ হাজার টাকা। ছয় শেডের জন্য খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত গত দুবার তিনি যে পরিমাণ পালংশাক তুলেছেন আগামীতে আরও যে দুই বার শাক তুলবেন তাতে প্রতি শেড থেকে তাঁর আয় হবে নয় হাজার টাকা করে মোট ৫৪ হাজার টাকা। অর্থাৎ ২২ আগস্ট থেকে মাত্র দেড় মাসের মধ্যে এই পালংশাক থেকেই তার আয় হচ্ছে ২৪ হাজার টাকা। বিলমাহমুদপুর গ্রামের মৃত সৈয়জদ্দিন মোল্লার ছেলে বাচ্চু মোল্লা। তিনি বিবাহিত এবং এক ছেলের বাবা। তার জমির পরিমাণ ২৮০ শতাংশ। তবে আগে তিনি নিজে চাষাবাদ করতেন না। বর্গা দিয়ে চাষ করাতেন। নিজে ঢাকা থেকে কসমেটিক সামগ্রী এনে ফরিদপুরে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। পাঁচ বছর আগে তার জমির প্রতি ঝোক বাড়ে তাঁর এক আত্মীয় (ফুপা) মহিউদ্দিন ফকির সরকারী উদ্যোগে ফিলিপিন্স থেকে কৃষিবিষয়ক প্রশিক্ষণ নিয়ে আসার পর। তাঁর সাহচার্য ও পরামর্শে জমিতে চাষাবাদের ব্যাপারে উৎসাহী হন বাচ্চু। চাষাবাদে উৎসাহী হওয়ার পাশাপাশি তার কৌতূহলী মন নিত্যনতুন কিছু করে দেখানোর চেষ্টা করে। গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষের কথা শুনে তিনি টমেটো চাষে শুরু করেন। এক সময় ভাবেন গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করা গেলে গ্রীষ্মকালীন পালংশাক কেন করা যাবে না। সে চিন্তা থেকে পলিথিনের আচ্ছাদন দিয়ে গ্রীষ্মকালীন পালং চাষের এ উদ্যোগ। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, বিলমামুদপুর এলাকার কৃষক বাচ্চু মোল্লা নিজ উদ্যোগে পালংশাক উৎপাদন করে ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন। এ খবর শোনার পর আমি তার ক্ষেত পরিদর্শন করেছি। কৃষকদের উৎসাহ এবং পাশাপাশি আমাদের সহযোগিতা থাকলে অচিরেই ফরিদপুর অঞ্চলে গ্রীষ্মকালীন পালং শাক একটি জনপ্রিয় ও অর্থকরী সবজি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। -অভিজিৎ রায়, ফরিদপুর থেকে
×