ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বাগেরহাটে পানগুছির ভাঙনে বিলীন আরও ৫০ একর জমি

প্রকাশিত: ০২:৩৭, ১৫ অক্টোবর ২০১৮

বাগেরহাটে পানগুছির ভাঙনে বিলীন আরও ৫০ একর জমি

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে পানগুছি নদীর ভাঙ্গনে বিলিন হয়ে গেছে বসতবাড়ি। সোমবার দুপুরে ভাঙ্গর ঠেকাতে টেকসই বেড়িবাঁধের দাবিতে নদী পাড়ের ক্ষতিগ্রস্থ মানুষেরা মানববন্ধন করেছেন। গাবতলা, কাঠালতলা ও খাউলিয়া গ্রামের দুই শতাধিক নারী পুরুষ ঘন্টাব্যাপি এ মানববন্ধনে অংশ গ্রহন করেন। মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মাহমুদ আলী জানান, প্রতিদিন ভাঙছে নতুন নতুন এলাকা। বসতবাড়িসহ বহু প্রতিষ্ঠান, রাস্তা ঘাট চলে গেছে নদীগর্ভে। গত ৪০ বছরে পারগুছি নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে শত শত পরিবার নি:স্ব হয়ে গেছে। দিন দিন বদলে যাচ্ছে উপজেলা মানচিত্র। পানগুছি নদীর আয়তন তিনগুন বেড়েছে। ৩৫/২পোল্ডারের অধিনে বেড়িবাঁধ নির্মানের প্রস্তাব করা হলেও দীর্ঘ ৫০ বছরেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। মন্ত্রী, এমপি ও পাউবোর কর্মকর্তারা পরিদর্শনও করেছেন বহুবার। কিন্তু কাজের কিছুই হয়নি। গত ৪০ বছরে শুধু উপজেলা সদর থেকে নদীগর্ভে চলে গেছে, খাদ্যগুদাম, সাবরেজিষ্ট্রি অফিস, টেলিফোন অফিস, আব্দুল আজিজ মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এসিলাহা উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল ভবন, ডাকবাংলো, বারইখালী ইউনিয়ন পরিষদ, পুলিশ কোয়াটার, আনছার ময়দান, বারইখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পোষ্ট অফিস, স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের অফিস, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, থানা জামে মসজিদ, সার্বজনীন হরিসভা মন্দির, শ্মশানঘাটসহ বহু প্রতিষ্ঠান ও রাস্তা ঘাট। বর্তমানে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে গাবতলা, কাঠালতলা, বারইখালী, ফেরিঘাট, কুমারখালী, সন্নাসী, শ্রেণিখালী, ঘষিয়াখালী, সোনাখালী, ফুলহাতাসহ ২০টি গ্রাম। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে স্থানীয় সংদস্য সদস্য ডা. মোজাম্মেল হোসেন ভাঙ্গনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। ওই সময় তিনি গাবতলা হতে পশুরবুনিয়া অভিমুখে আড়াই কিলোমিটার বেড়িবাঁধের জন্য ডিও লেটার দেন। ডিও লেটারে বলা হয়েছে, ‘স্বাধীনতার পূর্বে বেড়িবাঁধ নির্মানের লক্ষে পোল্ডার নং-৩৫/২ নামে একটি প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছিল যা অদ্যাবধি বাস্তবায়িত হয়নি’। ডিও লেটারের ভিত্তিতে পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম গেল বছরের ১২ জুলাই পাউবো মহা পরিচলকেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু আজঅবধি কার্যকরি কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। ক্ষতিগ্রস্থদের পক্ষে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মাহমুদ আলী বলেন, কয়েক শ’ পরিবার তাদের মাথা গোজার ঠাই হারিয়ে ছিন্নমূলে পরিনত হয়েছে। গতকাল ধসে গেছে ২৫একর জমি। পৌর শহর রক্ষার্থে এ পর্যন্ত মাত্র ১ কিলোমিটার পায়লিং হয়েছে। খরাস্রোতে পানগুছির ভাঙ্গন থেকে মোরেলগঞ্জ পৌর শহরসহ ২০টি গ্রাম রক্ষা করতে প্রয়োজন টেকসই বেড়িবাঁধ। দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে চলছে শুধু পরিদর্শন ও চিঠি চালাচালি। কাজের কিছু হয়নি। এ বিষয়ে পাউবো বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী রিফাত রাব্বির বলেন, বাঁধ নির্মানের বিষয়টি সরকারের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
×