ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

৩০ অক্টোবরের পর যে কোন দিন নির্বাচনের তফসিল

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ১৬ অক্টোবর ২০১৮

৩০ অক্টোবরের পর যে কোন দিন নির্বাচনের তফসিল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ৩০ অক্টোবরের পর যে কোন দিন সংসদ নির্বাচনের তফসিল দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ইসি সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, কমিশনের আগামী বৈঠকেই একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিলের বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ৩০ অক্টোবরের আগেই তফসিলের সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠক বসবে। সোমবারের বৈঠকে ইসির সার্বিক প্রস্তুতি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কমিশনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। সোমবার বেলা এগারোটায় নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি নিতে এক বৈঠক বসে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা। এছাড়া অপর তিন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, বিজে শাহাদতসহ ইসির উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তবে অপর কমিশনার মাহবুব তালুকদার শুরুতে অংশ নিলেও বৈঠকে তার প্রস্তাব গৃহীত না হওয়ায় নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে বৈঠক ত্যাগ করেন। বেলা দেড়টায় কমিশনের বৈঠক মুলতবি করে পুরনায় তিনটায় শুরু হলেও মাহবুব তালুকদার আর বৈঠকে অংশ নেননি। বিকেল সাড়ে চারটায় ইসির বৈঠক শেষে আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে ব্রিফ করেন সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ। এ সময় তিনি বলেন, সোমবার কমিশনের ৩৬তম সভায় মূলত একাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়েছে। কমিশনের বিভিন্ন শাখার প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠকে চুলচেরা আলোচনা হয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে ইতোমধ্যে ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। আসনভিত্তিক ভোটার তালিকার সিডি ইতোমধ্যে কমিশনের আঞ্চলিক অফিসে পাঠানো হয়েছে। এতে কোন ভুলত্রুটি থাকলে তা সংশোধনের জন্য ৩১ অক্টোবরের মধ্যে নির্বাচন কমিশন অফিসে পাঠাতে বলা হয়েছে। ভোটার তালিকার ভুলত্রুটি সংশোধন করে তফসিলের আগেই তা চূড়ান্ত করা হবে। তফসিলের পরে ভুলত্রুটি সংশোধনের কোন সুযোগ নেই উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, তিন শ’ আসনের সীমানা নির্ধারণ নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। কোন কোন আসনের সীমানা নিয়ে মামলা হয়েছে। তফসিলের আগেই মামলা নিষ্পত্তির জন্য আইন শাখাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, একাদশ জাতীয় নির্বাচনের জন্য সারাদেশে ৪০ হাজার ১৯৯ ভোট কেন্দ্র চূড়ান্ত করার পর শতকরা ৫ ভাগ কেন্দ্র অতিরিক্ত রাখতে বলা হয়েছে। দুর্যোগ বা অন্য কোন কারণে কোন ভোট কেন্দ্রে ভোট নেয়া সম্ভব না হলে অতিরিক্ত ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। তফসিল ঘোষণার পর ভোট কেন্দ্রের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের ব্যয়ের বিষয়ে উল্লেখ করে বলেন এবারের নির্বাচনে ৭শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সোমবারের বৈঠকে এই টাকার খাতওয়ারী ব্যয়ের জন্য কমিশনের পক্ষ থেকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক নির্বাচন সামগ্রী কিনে গুদামজাত করা হয়েছে। যেগুলো বাকি রয়েছে তা ৩০ অক্টোবরের মধ্যে ইসির সংগ্রহ সম্পন্ন হবে। প্রথমবারের মতো এবারে অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন প্রার্থীরা। তবে মনোনয়নপত্রে হিজড়াদের জন্য আলাদা কোন ঘর থাকবে না। তাদের জন্য আগের নিয়মই বহাল থাকছে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে বলেন, এবারের নির্বাচনে দেশী-বিদেশী পর্যবেক্ষকদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। নির্বাচনী ফল প্রকাশে এবার কেন্দ্রীয়ভাবে প্রযুক্তির সাহায্য নেয়া হবে। অনলাইনের মাধ্যমে নির্বাচনী ফল সংগ্রহ করা হবে নিজস্ব সিস্টেমে এবং প্রচার করা হবে। কমিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে মাঠ পর্যায় থেকেই বিভিন্ন সংস্থা থেকে লোকবল নিয়োগ দেয়া হবে। এছাড়া নির্বাচনের আগে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের কথা বলেন তিনি। ইভিএম ব্যবহার বিষয়ে বলেন, লোকজনকে এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে ২৭ তারিখে নয়টি আঞ্চলিক অফিসে ইভিএম মেলা আয়োজন করা হবে। এবং কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় দুদিন এই মেলার আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে ইসির বৈঠকে। তিনি বলেন, নির্র্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করার চিন্তা ইসির রয়েছে। এছাড়া পর্যাপ্ত ব্যালট পেপারও প্রস্তুত আছে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সংবিধানের বাইরে কোন সিদ্ধান্ত বা সুপারিশ ইসির গ্রহণ করার এখতিয়ার নেই। ইসির সংলাপে নির্বাচনের বিষয়ে যারা মতামত দিয়েছেন তাদের মধ্যে যেসব মতামত সংবিধানের ইসির এখতিয়ারভুক্ত সেগুলো গ্রহণ করা হয়েছে। অপরদিকে যেগুলোয় ইসির এখতিয়ার নেই তা গ্রহণ করার ক্ষমতা ইসির নেই। সংলাপে সীমানা নির্ধারণ, ভোটার তালিকা প্রণয়নসহ যেসব বিষয় ইসির এখতিয়ারে রয়েছে তা গ্রহণ করা হয়েছে।
×