ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আবারও ইসি বৈঠক বর্জন মাহবুব তালুকদারের

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১৬ অক্টোবর ২০১৮

আবারও ইসি বৈঠক বর্জন মাহবুব তালুকদারের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কমিশনের সভায় নিজের প্রস্তাব গৃহীত না হওয়ায় সোমবার আবারও কমিশনের বৈঠক বর্জন করেছেন ইসি মাহবুব তালুকদার। সকাল ১১টায় আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে ইসির ৩৬তম সভায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা। এ সময় নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার অংশ নিলেও তার প্রস্তাব আলোচনার জন্য গৃহীত না হওয়ায় নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে সভা ত্যাগ করেন। পরে সন্ধ্যায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তার দেয়া প্রস্তাবসমূহ আলোচনার জন্য গৃহীত না হওয়ায় তিনি অপমানিতবোধ করছেন। এর মাধ্যমে ইসি তার বাক স্বাধীনতা হরণ করেছে বলে অভিযোগ আসেন। বৈঠক শুরু হওয়া ১৩ মিনিটের মাথায় তিনি বৈঠক ত্যাগ করে চলেন যান। এরপর আর বৈঠকে ফিরে আসেননি। চলে যাওয়া সময় সাংবাদিকরা তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। সে সময় তিনি বৈঠক ত্যাগ করছেন কিনা, নোট অব ডিসেন্ট বা আপত্তি দিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে শুধু হ্যাঁ সূচক জবাব দেন। পরে বিষয়টি নিয়ে সাড়ে ৫টার দিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি লিখিত অভিযোগ উপস্থাপন করেন। সাংবাদিকদের কোন প্রশ্নের জবাব দেননি। তিনি নোট অব ডিসেন্টে’ উল্লেখ করেছেন ‘বাকস্বাধীনতা ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা সংবিধান প্রদত্ত আমার মৌলিক অধিকার। নির্বাচন কমিশন কোনভাবেই আমার এই অধিকার খর্ব করতে পারে না। এমতাবস্থায় অনন্যোপায় হয়ে আমি নির্বাচন কমিশনের এরূপ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নোট অব ডিসেন্ট প্রদান করছি এবং এর প্রতিবাদস্বরূপ কমিশনের সভা বর্জন করছি। মাহবুব তালুকদার বলেন, গত বছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত কমিশন অংশীজনের সঙ্গে অর্থাৎ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের আয়োজন করে। এতে ৪০টি দল অংশ নেয়। এসব দলের প্রস্তাব ও সুপারিশ নিয়ে এখন পর্যন্ত কমিশনের বৈঠকে কোন আলোচনা হয়নি। এ কারণে তিনি তা পর্যালোচনা করে কমিশনের সভায় উত্থাপন করার অনুরোধ জানান। তিনি আরও উল্লেখ করেন তিনি যেন কমিশন সভায় প্রস্তাবগুলো উত্থাপন করতে না পারেন, সে জন্য অপর তিনজন নির্বাচন কমিশনার প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) অনুরোধ জানান। সিইসি ওই তিনজন কমিশনারের সঙ্গে একমত পোষণ করে বক্তব্য উপস্থাপন করতে দেননি। এই সিদ্ধান্তে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বিস্মিত ও মর্মাহত হয়েছেন বলে ‘নোট অব ডিসেন্টে’ উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, গতবছর আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় তিন মাস নির্বাচন কমিশন অংশীজনের সঙ্গে সংলাপের আয়োজন করে। এতে ৪০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ছাড়াও সুশীল সমাজ, মিডিয়া, পর্যবেক্ষণকারী, নারী নেত্রী প্রমুখ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। এই সংলাপ ছিল একপক্ষীয়। নির্বাচন কমিশন তাদের বক্তব্য শোনা ছাড়া নিজেদের মতামত প্রদান করেনি। সবার সংলাপ সুদৃশ্য গ্রন্থাকারে প্রকাশ করা হলেও সংলাপের সুপারিশ বা প্রস্তাব সম্পর্কে এ পর্যন্ত কোন আলোচনা হয়নি। সংলাপের কোন কার্যকারিতা না দেখে ব্যক্তিগতভাবে আমি উক্ত সংলাপ পর্যালোচনা করে কমিশন সভায় কতিপয় প্রস্তাব পেশ করতে চেয়েছি এবং কমিশনের মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ রাখতে চেয়েছি। তিনি আরও বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশীদারমূলক ও গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে কতিপয় প্রস্তাবনা শিরোনামে আমি যা আলোচনা করতে চেয়েছিলাম নির্বাচন কমিশন সভায় তা উপস্থাপনা করতে দেয়া হয়নি। অথচ বিগত ৮ অক্টোবর কমিশন সচিবালয় থেকে ইউ ও নোটের মাধ্যমে আমাকে সোমবারের সভায় তা উপস্থাপনার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। আমাকে আমার প্রস্তাবনা উপস্থাপনা করতে বলে তা না দেয়ায় আমি অপমানিত বোধ করেছি।
×