ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আমিরাতে অবৈধরা বৈধ হওয়ার সময় পেয়েছেন

দুবাইতে অবৈধ ৩০ হাজার ৮৪১ বাংলাদেশী পেলেন নতুন পাসপোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ১৬ অক্টোবর ২০১৮

দুবাইতে অবৈধ ৩০ হাজার ৮৪১ বাংলাদেশী পেলেন নতুন পাসপোর্ট

ফিরোজ মান্না ॥ দুবাইতে অবৈধ ৩০ হাজার ৮শ’ ৪১ বাংলাদেশী কর্মীর পাসপোর্ট নতুন করে ইস্যু করা হয়েছে। অন্যদিকে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের কয়েক লাখ কর্মী বৈধ হওয়ার জন্য আরও কিছু সময় পেয়েছেন। আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে তারা বৈধ হওয়ার সুযোগ পাবেন। গত ১ আগস্ট থেকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে অবৈধ কর্মীদের বৈধ হওয়ার জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে দেশটির কর্তৃপক্ষ। দুবাইতে অবস্থিত বাংলাদেশ কনস্যুলেট জানিয়েছে, দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলে রি-ইস্যু পাসপোর্ট ইস্যুর বিষয়টি একটি উল্লেখযোগ্য কাজ হয়েছে। কম সময়ের মধ্যে এত সংখ্যক পাসপোর্ট রি-ইস্যু করা কঠিন চ্যালেঞ্জ। এর মধ্যে বেশ কিছু পাসপোর্ট হাতে লিখে দেয়া হয়েছে। তবে বেশির ভাগ পাসপোর্ট মেশিন রিডেবল (এমআরপি) হিসেবে কর্মীদের হাতে তুলে দেয়া হয়। এদিকে দুবাইয়ে কয়েক হাজার অবৈধ কর্মী দেশে ফেরার জন্য ‘আউট পাস’ নিয়ে রেখেছেন। তারা যে কোন সময় দেশে ফিরবেন। দেশটিতে বেশ কয়েক দফা অবৈধ কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করেছে। ৩০ হাজার ৮৪১ জনের মতো পাসপোর্ট রি-ইস্যু করা হয়েছে। তার মধ্যে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) রয়েছে ২১ হাজার ৩৮৩ জনের। হাতে লেখা পাসপোর্ট রয়েছে ৭ হাজার ৮৪৯ জনের। ইস্যুকৃত পাসপোর্টের অর্ধেকের বেশি লোক ভিসা ছাড়া এ দেশে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে, আমিরাতে অবৈধ কর্মীদের বৈধ হওয়ার সুযোগ রয়েছে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। কর্মীদের এই সময়ের মধ্যে ‘স্পন্সর’ খুঁজে বৈধ হওয়ার সুযোগ দিয়েছে সরকার। আরব আমিরাতে থেকে বেশ কয়েকজন কর্মী জানিয়েছেন, এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে আরও কিছু নতুন সুবিধা পাবে বাংলাদেশ। ভবিষ্যতে ধাপে ধাপে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভিসা খোলা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ আসতে পারে। সাধারণ ক্ষমায় হাজার হাজার অবৈধ প্রবাসীরা বৈধ হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। দেশটিতে অবস্থিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান জানিয়েছেন, যেসব অবৈধ প্রবাসী বাংলাদেশীরা আমিরাতে রয়েছেন তাদের কোন ধরনের ডকুমেন্টস বা কাগজপত্র না থাকলেও, তাদের ডিজিটাল পাসপোর্ট বা এমআরপি দেয়ার সুযোগ দেয়া হবে। তাই অবৈধ অভিবাসীদের দূতাবাসে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এরপর থেকে কর্মীরা দূতাবাসে এসে পাসপোর্ট রি-ইস্যু করে নিচ্ছেন। একজন কর্মীও যাতে পাসপোর্ট পেতে কোন প্রকার অসুবিধার সম্মুখীন না হন তা নিশ্চিত করা হয়েছে। আমিরাতে কর্মরত বিভিন্ন পেশার প্রবাসীরা ভিসা পরিবর্তনের এ ঘোষণার কথা শুনে স্বস্তিতে রয়েছেন। তারা এটাকে অনেক বড় সাফল্য বলে মনে করছেন। নতুনভাবে কর্মীদের ভিসা ট্রান্সফারের বিষয়টি দুবাই সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা আসে। সৌদি আরবের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার আমিরাতে বর্তমানে ছয় লাখেরও বেশি বাংলাদেশী কর্মী রয়েছেন। তবে সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে গঠিত ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির’ বৈঠক গত ১১ মাসেও অনুষ্ঠিত হয়নি। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে দেশটির কর্তৃপক্ষের কাছে কয়েক দফা বৈঠকের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু ওই সব চিঠির কোন জবাবও দেশটির কর্তৃপক্ষ দেয়নি। ফলে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের কর্মী নিয়োগ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। মন্ত্রণালয় বলছে, বাজারটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত বছর বাজারটি খুলে দেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়। কিন্তু সেই আশ্বাসটি এখনও বাস্তবে রূপ নেয়নি। কবে নাগাদ সংযুক্ত আরব আমিরাতে কর্মী নিয়োগ হবে তা বলা মুশকিল। মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, দক্ষ কর্মী নেয়ার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের ঘোষণা এখন শুধু ঘোষণার মধ্যেই রয়ে গেছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ কর্মী নিয়োগের বিষয়ে এখন আর কোন কথাই বলছে না। সরকারের শেষ সময়ে এসে এমন এক পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে তা প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান কোন কর্মকর্তাই উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না। সংযুক্ত আরব আমিরাত ইতিবাচক সাড়া দিলেও এখন কেন তারা কর্মী নিয়োগের বিষয়ে কোন কথা বলছে না এটা রহস্যজনক বলে মনে করছেন। প্রতিমাসে দুই দেশের মধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্ত ১১ মাস কেটে গেলেও যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি। দেশটিতে কর্মীরা আকামা পরিবর্তনের কোন সুযোগ পাননি। কবে নাগাদ এই বৈঠক হবে তারও কোন হদিস নেই। দেশটিতে বাংলাদেশের শ্রমবাজার আদৌ খুলবে কিনা তা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। সরকারীভাবে বাজারটি না খুলতে পারলে বেসরকারীভাবে বাজারটি কোনভাবেই খোলা সম্ভব না। বেসরকারীভাবে বাজারটি খোলার চেষ্টা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু কোনভাবেই বাজারটি খোলা সম্ভব হয়নি।
×