ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

কূটনীতিকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের বৈঠক

আদালতের রায়ে প্রমাণিত গ্রেনেড হামলায় বিএনপি জড়িত

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১৬ অক্টোবর ২০১৮

আদালতের রায়ে প্রমাণিত গ্রেনেড হামলায় বিএনপি জড়িত

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার এবং তারেক রহমানের ‘সম্পৃক্ততা ও ভূমিকার’ কথা বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের অবহিত করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। বৈঠকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে আমরা সন্তুষ্ট, কিন্তু কিছু আপত্তি আছে। সেটা হলো হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে বিএনপি চেয়ারপার্সন (ভারপ্রাপ্ত) তারেক রহমানের সর্বোচ্চ শাস্তি কাম্য ছিল। আমরা সেটাই চাই। সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে লেকশোর হোটেলের ল্যা ভিটা হলে ঢাকার বিভিন্ন দূতাবাসের কূটনীতিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উপ-কমিটি সভাটির আয়োজন করে। সভায় বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য লে. কর্নেল (অব) মুহাম্মদ ফারুক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ দীপু মনি, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, আন্তর্জাতিক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জমির প্রমুখ। বক্তব্য শেষে রুদ্ধদ্বার কক্ষে কূটনীতিকরা মতবিনিময় করেন। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ থাকতে পারে, প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক কৌশল দিয়ে মোকাবেলা করতে হবে। কিন্তু তা না করে কি আপনি গ্রেনেড দিয়ে হামলা করে নির্মূল করবেন? এমনটাই করেছিল তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকার। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন, তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে গিয়েছিলেন। কতটা হাস্যকর কথা। গত ১৪ বছর ধরে বিএনপি একই জায়গাতে আছে। ২১ আগস্টের হামলার মূল পরিকল্পনা হয়েছিল হাওয়া ভবন, বাবরের অফিস ও পিন্টুর বাসায়। এখান থেকেই জঙ্গীদেরকে হামলার বিষয়ে সরকারী সহায়তার সমস্ত নিশ্চয়তাগুলো দেয়া হয়। বৈঠক সূত্র জানায়, রুদ্ধদ্বার বৈঠকে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কূটনীতিকদের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ছাড়াও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, নির্বাচনী পরিবেশ, নির্বাচনে বিদেশী পর্যবেক্ষকদের আসা নিয়ে আলোচনা হয়। আওয়ামী লীগ নেতারা গ্রেনেড হামলা মামলার রায় প্রসঙ্গে বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল বিএনপি ও জামায়াত জড়িত ছিল- আদালতের রায়ে সেটা প্রমাণিত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এ ধরনের হামলা কখনও হতে পারে না। তাই আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। তবে এ ঘটনার মাস্টারমাইন্ড তারেক রহমানের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত ছিল- আমরাও সেটা চাই। বৈঠকে ওইদিন গ্রেনেড হামলায় আহত কয়েকজন ভুক্তভোগী তাদের যন্ত্রণা ও নৃশংস সেই হামলার কথা তুলে ধরেন কূটনীতিকদের কাছে। এ সময় কূটনীকিতরা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেমন হবে ও নির্বাচনী পরিবেশ বিষয়ে জানতে চান। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, এটা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। সংবিধানে নির্বাচন কমিশনকে ব্যাপক ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। স্বাধীন নির্বাচন কমিশন অনেক শক্তিশালী। নিশ্চয়ই তারা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। আমরা চাই সব দল নির্বাচনে অংশ নেবে। কোন দল যদি নির্বাচনে অংশ না নিয়ে থাকে, সেটা তাদের বিষয়, সে বিষয়ে আমাদের বলার বা করার কিছু নাই। তবে নির্বাচন বর্জন করে কেউ যদি তা প্রতিহতের নামে জ্বালাও-পোড়াও বা নাশকতা করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জনগণের জানমাল রক্ষায় তার ব্যবস্থা নেবে। একপর্যায়ে আগামী নির্বাচনে বিদেশী পর্যবেক্ষক আসতে পারবেন কি না কূটনীতিকরা জানতে চাইলে, প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশের প্রচলিত আইন মেনে পর্যবেক্ষক আসতে পারবেন।
×