ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভায় ১৩ সিদ্ধান্ত

জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা সুষ্ঠু, নকলমুক্ত করতে প্রস্তুতি সম্পন্ন

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১৬ অক্টোবর ২০১৮

জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা সুষ্ঠু, নকলমুক্ত করতে প্রস্তুতি সম্পন্ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী ১ নবেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে প্রবেশ ছাড়াও আগেই কেন্দ্রে একাধিক প্রশ্ন সেট পাঠানো হবে, তবে পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে কেন্দ্রীয়ভাবে লটারির মাধ্যমে প্রশ্ন নির্বাচন করে প্রশ্নপত্রের খাম খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা সুষ্ঠু, নকলমুক্তভাবে আয়োজন করতে জাতীয় মনিটরিং এবং আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সভায় মোট ১৩টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ সোহরাব হোসাইন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মাহামুদ-উল হক, মোঃ জাবেদ আহমেদ ও নাজমুল হক খান এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম জাকির হোসেন ভূঞা সভায় উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া পুলিশ, র‌্যাব ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, জননিরাপত্তা বিভাগ, তথ্য মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, আসন্ন জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা সুষ্ঠু, নকলমুক্ত ও ইতিবাচক পরিবেশে সম্পাদনের লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণায়ের আওতাধীন শিক্ষা বোর্ডসমূহ, মাঠ প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও নির্ধারিত সময়ে জেএসসি পরীক্ষা ১ নবেম্বর শুরু হবে। নির্ভেজাল, প্রশ্নফাঁসমুক্ত, নকলমুক্ত ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠানে যা যা করা দরকার, সেসব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষা বোর্ডসমূহ এবং মাঠ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট পূর্বে অবশ্যই পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে। ২৫ মিনিট আগে এসএমএসের মাধ্যমে কোন সেটে পরীক্ষা হবে তা কেন্দ্র সচিবকে জানানো হবে। মিথ্যাচার বা প্রশ্ন ফাঁসের গুজব ছড়ালে কেউ রেহাই পাবে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে কঠোর অবস্থানে থাকবে। শিক্ষামন্ত্রী জানান, পরীক্ষা চলাকালীন কেবল কেন্দ্র সচিব ক্যামেরা ছাড়া মোবাইল ব্যবহার করতে পারবেন। তবে পরীক্ষা কক্ষে মোবাইল ফোনসহ প্রবেশ করতে পারবেন না। তার বাইরে আর কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না, ট্রেজারি বা থানা হতে প্রশ্নপত্র গ্রহণ ও পরিবহন কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা/শিক্ষক/কর্মচারীরা ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না এবং প্রশ্নপত্র বহন কাজে কালো কাঁচযুক্ত গাড়ি ব্যবহার করা যাবে না, ট্রেজারিতে রক্ষিত প্রশ্নপত্র পরীক্ষা শুরুর তিনদিন পূর্বে দিনভিত্তিক ও সেটভিত্তিক সটিং করে সিকিউরিটি খামে সংরক্ষণ করতে হবে। জেলার ক্ষেত্রে ট্রেজারি এবং উপজেলার ক্ষেত্রে উপজেলার থানা লকারে প্রশ্নপত্রের ট্রাঙ্ক সংরক্ষণ করতে হবে, পরীক্ষার দিন সিকিউরিটি খামে সংরক্ষিত প্রশ্নপত্র প্যাকেটের সকল সেট ট্রেজারি/থানা হতে ট্যাগ কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে কেন্দ্রে পৌঁছাতে হবে, পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট পূর্বে সংশ্লিষ্ট বোর্ড থেকে সেট ব্যবহারের নির্দেশনা মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ পাওয়ার পর নির্ধারিত সেটের সিকিউরিটি খাম খুলতে হবে। পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র নেয়ার সকল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত গুজব কিংবা একাজে তৎপর চক্রগুলোর কার্যক্রমের বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর নজরদারি জোরদার করা হবে, প্রশ্নপত্র ফাঁস কিংবা পরীক্ষার্থীদের কাছে উত্তর সরবরাহে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও জেলা প্রশাসন কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা ডিজিটাল কোন ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবে না, প্রতিষ্ঠান প্রধান/শিক্ষকরা কোনভাবে এ পরীক্ষায় বে-আইনী কোন কাজ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং প্রয়োজনে পরীক্ষা কেন্দ্র বাতিল করা হতে পারে। শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা আয়োজন করতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রশ্নফাঁস হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। এবার গুজব করে কেউ পার পাবে না, অভিভাবদেরও শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে সবাইকে সহযোগিতার আহ্বান জানান শিক্ষামন্ত্রী।
×