ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রিজার্ভ চুরির পর এবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তথ্য চুরি

প্রকাশিত: ০৭:৪৬, ১৬ অক্টোবর ২০১৮

রিজার্ভ চুরির পর এবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তথ্য চুরি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ রিজার্ভ চুরির পর এবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তথ্য চুরির ঘটনা ঘটেছে। এবারও ভুয়া আবেদনে সাড়া দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে দিয়েছেন প্রতারক চক্রের হাতে। প্রতারক চক্রটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পেতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। বিষয়টি ধরা পড়তেই দ্রæত ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবর্নর ফজলে কবিরের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক। গত ৯ অক্টোবর পররাষ্ট্র সচিবের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য চুরির বিষয়ে দ্রæত ব্যবস্থা নিতে গবর্নরকে অনুরোধ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। অবশ্য ফজলে কবির দেশের বাইরে থাকায় চিঠি পাওয়ার দিনই (১০ অক্টোবর) দ্রæত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন ডেপুটি গবর্নর আহমেদ জামাল। জানা যায়, গত সেপ্টেম্বর মাসে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (ইউএন বা জাতিসংঘ অনুবিভাগ) পরিচয় দিয়ে জনৈক নাসির আহমেদ দেশের সব তফসিলী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) তালিকা চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি পাঠায়। ওই চিঠি পাওয়ার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা নাসির আহমেদকে তফসিলী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের তালিকা দিয়ে দেন। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নাসির আহমেদকে তালিকা দেয়ার পর গত ১৭ সেপ্টেম্বর বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়। এরপরই এই জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়ে। কারণ, নাসির আহমেদ নামে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কোন পরিচালকই নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর বরাবর পাঠানো পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘গত ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে আমরা একটি পত্র পাই। যার মাধ্যমে তথাকথিত নাসির আহমেদ, পরিচালকের (ইউএন) দৃষ্টি আকর্ষণ করত, দেশের সব তফসিলী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককের তালিকা দেয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নাসির আহমেদ নামে কোন পরিচালক কর্মরত নেই। জাতিসংঘ অনুবিভাগেও (ইউএন) এই নামে কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী কর্মরত নেই। এ কারণেই পত্র পাওয়া মাত্র আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখায় যোগাযোগ করি। জানতে পারি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (ইউএন) পরিচয় দিয়ে জনৈক নাসির আহমেদ সব তফসিলী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের তালিকা চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের কাছে জাল চিঠি পাঠিয়েছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে ওই ব্যক্তিকে তালিকা পাঠানো হয়েছে। আমরা ওই বিভাগ থেকে আরও জানতে পেরেছি, ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে জালিয়াতকারী নাসির আহমেদকে ওই তালিকার সফট কপি ই-মেইলের মাধ্যমেও পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে পররাষ্ট্র সচিব উল্লেখ করেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে দ্রæত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন।
×