ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঘরে ঘরে একই চিত্র!

প্রকাশিত: ০৪:১১, ১৮ অক্টোবর ২০১৮

ঘরে ঘরে একই চিত্র!

আমাদের মোট জনসংখ্যার একটি বিরাট অংশ প্রবীণ। জনসংখ্যার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের তুলনায় প্রবীণ জনগোষ্ঠী উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে প্রবীণের সংখ্যা দেড় কোটির মতো। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, প্রবীণ কে বা কারা? নবম জাতীয় সংসদে ‘জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা এবং পিতা-মাতার ভরণপোষণ আইন-২০১৩’ এ বলা হয়েছে, ৬০ বছর বা তার ঊর্ধ্ব বয়সের সকলেই প্রবীণ হিসেবে বিবেচিত। তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে জ্যেষ্ঠ নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। বর্তমান সরকারের এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তাছাড়া ১৯৯৭ সাল থেকে প্রবীণদের জন্য বয়স্কভাতা প্রদান করা হচ্ছে। তখন এ ভাতা পেত ৩ লাখের বেশি। এখন তা বেড়ে ৩২ লাখের মতো। ভাতার পরিমাণ ৫০০ টাকা। এখন মূল কথা হলো, আসলেই কি আমরা প্রবীণদের অধিকার দিতে পেরেছি? সমাজ, রাষ্ট্রকে সমৃদ্ধ করতে প্রবীণরা যে শ্রম ব্যয় করেছিল, তাঁরাই আজ সমাজ বিতাড়িত। এটি শুধু দেশে নয়, বিশ্বব্যাপী লক্ষ্য করার মতো। প্রবীণেরা একসময় ছিলেন টগবগে তরুণ; অষ্টক্লেশে লালন পালন করেছেন সন্তান, তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন জাতি, সমাজ। বয়সের ভারে আজ হয়তো প্রবীণ, প্রবীণ বলেই তো অবহেলার শিকার। আহারের খোঁজে কেউবা গ্লানি টানে কারও বা আশ্রয় হয় বৃদ্ধাশ্রমে। এটাই কি প্রাপ্য ছিল তাঁদের? ছেলেমেয়েকে প্রতিষ্ঠিত করে আজ উপার্জনক্ষম সময়ে বোঝা হয়ে যায়। ওরা নিজের সন্তান, সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে; কিন্তু তারা এটা ভুলে যায়, একসময় তারাও শিশু-কিশোর ছিল। মেয়ে ভরণপোষণ করতে গেলে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কথা শুনতে হয় আবার ছেলের সংসার সামলাতে গিয়ে বউ এর কথা শুনতে হয়। কোনদিকে যাবে সেই বৃদ্ধগণ! বৃদ্ধাশ্রমে বছরের পর বছর নিঃসঙ্গ জীবন কাটান; মৃত্যুকে ডাকতে থাকেন। নিঃসঙ্গতার সুযোগ নিয়েই মৃত্যুর দিনটাও হয়তো খুব কাছাকাছি চলে আসে। কখনও কাঁদেন, কখনও বা সেই অতীতের কল্পনায় হারিয়ে গিয়ে একটু স্বস্তি পান। তবুও তাঁরা সন্তানের ভালটাই চান। এটাই তো বাবা-মা। অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার হয়েও তাঁরা কোনদিন কোন অভিযোগ করেন না। আর আমরা তাঁদের কেমন সন্তান! শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট থেকে
×