ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

৩৮৭ কোটি ব্যয়ে সিলেট ওসমানী বিমান বন্দর সংস্কার করা হবে

প্রকাশিত: ০৪:৫৬, ১৭ অক্টোবর ২০১৮

৩৮৭ কোটি ব্যয়ে সিলেট ওসমানী বিমান বন্দর সংস্কার করা হবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পর্যটন নগরী হিসেবে খ্যাত সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংস্কার করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এলক্ষ্যে ৩৮৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে নৌ-ট্রানজিট কার্যকর করতে অবকাঠোমো উন্নয়নে ২২৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকার ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৮হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১৬ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। এরমধ্যে রাজধানীর উত্তরায় ছয় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৮৭৩টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মান করা হবে। বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ক্রয় প্রস্তাবগুলোর অনুমোদন দেয়া হয়। কমিটির সভাপতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত রাষ্ট্রীয়কাজে দেশের বাইরে থাকায় বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। এছাড়া বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়রে সচিব এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরের রানওয়ে ও ট্যাক্সিওয়ে শক্তিশালী করা হবে। এ সংস্কার কাজ বাস্তবায়নে কাজ পেয়েছে যৌথভাবে মেসার্স হাল্লা এবং মির আকতার হোসেন লিমিটেড। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিদ্যমান রানওয়ে ও ট্যাক্সিওয়ে শক্তিশালীকরণ শীর্ষক প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োগের ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, গত পাঁচ বছরে সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দর দিয়ে যাত্রী চলাচল বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। কিন্তু জনবল এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন সে অনুপাতে বাড়েনি। দিন দিন যাত্রী বাড়লেও বিমানবন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, লোকবল এবং কারিগরি ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা সে হারে বাড়েনি। ওসমানী বিমানবন্দরে প্রতিদিন আট থেকে ৯টি ফ্লাইট ওঠানামা করে। এর মধ্যে লন্ডন, আবুধাবি, দুবাই, জেদ্দা থেকে সরাসরি ফ্লাইট নামছে এ বিমানবন্দরে। তবে এখান থেকে সরাসরি বাংলাদেশ বিমানের কোনো ফ্লাইট দেশের বাইরে যাচ্ছে না। লন্ডন থেকে সরাসরি সিলেটে ফ্লাইট অবতরণ করলেও সিলেট থেকে ঢাকা হয়ে লন্ডন যেতে হয় যাত্রীদের। তবে বিমানবন্দরের রানওয়ে ও ট্যাক্সিওয়ে শক্তিশালী করার জন্য গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি ৪৫২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (একনেক)। সেই প্রকল্পে ব্যয় কিছুটা কমিয়ে এবার ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হলো। এছাড়া বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে নৌ ট্রানজিট কার্যকর করতে ২২৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকার ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন করা হয়েছে। এর আওতায় সিরাজগঞ্জ থেকে দাকুয়া পর্যন্ত অবস্থিত নৌপথ সংস্কার করা হবে। এ সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করতে ধরিত্রী বঙ্গ জয়েনভঞ্জার। এ কাজ বাস্তবায়নে যে খরচ হবে তার ৮০ শতাংশ দেবে ভারত এবং ২০ শতাংশ দেবে বাংলাদেশ। অর্থাৎ এটি যৌথ মূলধনে করা হবে। এছাড়া রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতাধীন উত্তরা এপার্টমেন্ট প্রকল্পের ‘বিও সি’ ব্লকে ১৬-তলা বিশিষ্ট (১টি বেইসমেন্টসহ) ১০৪টি ভবনে ৮,৭৩৬টি ফ্ল্যাট (৫২টি ভবনের নীট ১২৫০ বর্গফুট আয়তনের ৪,৩৮টি ফ্ল্যাট এবং ৫২টি ভবনে নীট ৮৫০ বর্গফুট আয়তনের ৪,৩৮৮টি ফ্ল্যাট) ‘জি টু জি’ ভিত্তিতে মালয়েশিয়া সরকারের কারিগরি ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ডিজাইন বিল্ড ট্রান্সফার পদ্ধতিতে নির্মানের ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ৫,০৯৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (এসএফসিএল) এর সাধারন ঠিকাদার মেসার্স কমপ্ল্যান্ট,চায়নার সঙ্গে ডিপিএম এ সীমিত আকারে ৩০ জন চাইনিজ বিশেষজ্ঞ জনবল সরবরাহের লক্ষ্যে ২০১৮ সালের ১লা মার্চ থেকে ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এক বছর মেয়াদে চাইনিজ বিশেষজ্ঞ জনবল সরবরাহের জন্য অপারেশন এ্যান্ড মেইনটেইন্যান্স অ্যাসিসট্যান্স সার্ভিস ফেস-৩ চুক্তি সম্পাদনের প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৪৯ কোটি ১২ লাখ টাকা। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের শতভাগ পল্লী বিদ্যুতাযন নেটওয়ার্ক সম্প্রসারন (ঢাকা, ময়মনসিংহ,চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ) শীর্ষক প্রকল্পের একটি প্যাজের চারটি লটে ৬৯ হাজার ৬৫৬টি ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমার ক্রয়ের একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৩৯৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। এছাড়াও ৩০১ কোটি ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের আরো তিনটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বৈঠকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ৫টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ১৩ টি বাফার সার গুদাম তৈরির একটি ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সেনাকল্যান সংস্থা। এতে ব্যয় হবে ৪২১ কোটি টাকা।
×