ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

মহাষ্টমীতে সাড়ম্বরে কুমারী পূজা

প্রকাশিত: ০৬:০১, ১৮ অক্টোবর ২০১৮

মহাষ্টমীতে সাড়ম্বরে কুমারী পূজা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাষ্টমীতে মণ্ডপে মণ্ডপে ও মন্দিরগুলোতে ঢাকের বাদ্য, কাসরের শব্দে মুখরিত ছিল। বুধবার সকাল থেকেই ভক্তরা পূজাৎসবে যোগ দেন। দিনব্যাপী চলে দেবীর আরাধনা ও অঞ্জলি প্রদান। এ দিন রামকৃষ্ণ মিশনসহ বিভিন্ন মন্দিরে কুমারী পূজাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকালে পূজারম্ভ ও অঞ্জলি প্রদানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দেবীর আরাধনা। সন্ধিপূজাসহ মন্দির এবং পূজামণ্ডপগুলোতে ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আরতি প্রতিযোগিতা। এদিকে আজ মহা নবমীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে মÐপগুলোতে। এ দিনও থাকছে পূজারম্ভ, অঞ্জলি প্রদান সন্ধ্যা আরতির মতো অনুষ্ঠান। এদিকে মহাষ্টমীর দিনে অষ্টমীর পূজা ছাড়াও রামকৃষ্ণ মিশনসহ বেশ কিছু মÐপে পালিত হয়েছে কুমারী পূজা। বেলা ১১টায় রামকৃষ্ণ মঠে কুমারী পূজা শুরু হয়। পূজা শেষে ভক্তরা মহাষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলি দেন। সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে মহাষ্টমীর বিহিত পূজা অনুষ্ঠিত হয়। দুপুরে মহাষ্টমীর মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়। নারীতে পরমার্থ দর্শন ও পরমার্থ অর্জন বিশ্বাস নিয়ে দুর্গোৎসবের অষ্টমী তিথিতে সর্ববিদ্যাস্বরূপিনী কুমারীরূপে দেবী দুর্গার বন্দনা করেন তারা। তাদের বিশ্বাস, যে ত্রিশক্তির বলে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি-স্থিতি-লয়ের চক্রে আবর্তিত হচ্ছে, সেই শক্তি বীজ আকারে কুমারীতে নিহিত। সেই বিশ্বাস থেকেই দেবী দুর্গার কুমারীরূপের আরাধনা করেন ভক্তরা। এবারের রামকৃষ্ণ মিশনের কুমারী পূজায় কুমারী দেবী হিসেবে ছিলেন মিতালী চক্রবর্তী। মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার খাবাশপুর গ্রামের সুচিত্রা চক্রবর্তী ও কালীপ্রসাদ চক্রবর্তীর মেয়ে মিতালীর বয়স আট বছর। খাবাশপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী। আট বছর বয়সী এই মিতালীর শাস্ত্রীয় নাম দেয়া হয় কুষ্ঠিকা। এদিকে বুধবার মহাষ্টমীর দিনে ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। মন্দির আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ সময় বলেন, শারদীয় এই দুর্গোৎসব কল্যাণ ও উন্নয়নের বার্তা বহন করে। বাংলাদেশ এবং ভারতের মানুষের মধ্যে শান্তি সম্প্রতি বয়ে আনে। এ সময় তিনি মন্দিরে ভক্তদের উপস্থিতি দেখে অভিভূত হয়ে পড়েন। অনুষ্ঠানে তিনি ভক্তদের মাঝে প্রসাদও বিতরণ করেন। এছাড়া ঢাকেশ্বরী মন্দির ঘুরে দেখেন। বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ ও মহানগর পূজা উদ্যাপন পরিষদের আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত, সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি, মহানগর পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি শৈলেন্দ্রনাথ মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক কিশোররঞ্জন মÐল প্রমুখ। এদিকে মহা অষ্টমীর দিনে সকাল থেকেই মন্দির ও মÐপ ঘুরে দেখা গেছে, লাখো ভক্তের উপচেপড়া ভিড়। পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা মণ্ডপগুলোতে পূজা অঞ্জলিতে শরিক হয়েছে। সনাতন সমাজকল্যাণ সংঘের পক্ষ থেকে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের পাশে আয়োজিত মণ্ডপে গিয়ে দেখা যায়, ভক্তদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে মণ্ডপজুড়ে। কেউ দেবী দর্শনে ব্যস্ত। কেউ দেবীকে পেছনে রেখে পরিবার-পরিজন নিয়ে সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। পূজা কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, মহা অষ্টমীর দিনে বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার পরে শুরু হয় মহা অষ্টমীর পূজারম্ভ। বেলা পৌনে ১১টার দিকে অঞ্জলি প্রদান ছাড়াও দুপুরে চলে মহা প্রসাদ বিতরণ। এ সময়ে সন্ধিপূজা আরম্ভ করা হয়। দুপুরের বিরতির পর সন্ধ্যায় ৬টা থেকে আবার শুরু হয় পূজা অর্চনা। এদিন মÐপ প্রাঙ্গণে এবারে এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএপ্রাপ্তদের সংবর্ধনা দেয়া ছাড়াও মÐপ প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয় আলোচনা অনুষ্ঠান। এছাড়াও আয়োজন করা হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সন্ধ্যায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এবং রাতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মণ্ডপ পরিদর্শন করেন। রাত সাড়ে ১০টায় আরতি প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে শেষ হয় মহা অষ্টমী।
×