বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ প্রশ্নফাঁসের অভিযোগের মুখেই মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটের ফল প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যেখানে কিছু শিক্ষার্থীর দুটি ইউনিটের ফলের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।
ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মেধাতালিকায় প্রথম দিকে স্থান পাওয়া বেশ কিছু শিক্ষার্র্থী নিজ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় পাস করতে পারেননি।
এবারের ‘ঘ’ ইউনিটে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে প্রথম হয়েছেন জাহিদ হাসান আকাশ। ১২০ নম্বরের মধ্যে তার প্রাপ্ত স্কোর ১১৪.৩০। তিনি বাংলায় ৩০-এর মধ্যে ৩০, ইংরেজীতে ৩০-এর মধ্যে ২৭.৩০ পেয়েছেন। অন্যদিকে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ১২০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছিলেন ৩৪.৩২। তিনি ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ইংরেজী অংশে ২৭.৩০ পেলেও ‘গ’ ইউনিটের ইংরেজীতে পেয়েছিলেন ২.৪০। অন্যদিকে ‘ঘ’ ইউনিটের বাংলা অংশে ৩০-এর মধ্যে ৩০ পেলেও ‘গ’ ইউনিটে পেয়েছিলেন ১০.৮।
জাহিদ হাসান আকাশ রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজের অধীনে ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ অর্জন করেন। গত ১২ অক্টোবর তিনি সমাজবিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটে পরীক্ষা দিয়ে ব্যবসায় শাখা বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। তবে গত ১৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ৩৪.৩২ নম্বর পেয়ে ভর্তির জন্য অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়েছিলেন।
আরেক শিক্ষার্থী তাসনিম বিন আলম ‘ঘ’ ইউনিটে (বিজ্ঞান শাখায়) ১২০ নম্বরের মধ্যে ১০৯.৫০ পেয়ে সম্মিলিত মেধা তালিকার প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। অথচ বিজ্ঞান শাখার এই শিক্ষার্থী তার নিজের অনুষদ ‘ক’ ইউনিটের পরীক্ষায় ১২০ নম্বরের মধ্যে ৪৩.৭৫ পেয়ে ভর্তির অযোগ্য বিবেচিত হয়েছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২০ বছরের ভর্তি পরীক্ষায় এত সর্বোচ্চ নম্বর কেউ পায়নি। এছাড়া ‘ঘ’ ইউনিটে বাণিজ্য শাখায় যিনি দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন ১২০-এর মধ্যে তিনি পেয়েছেন ৯৮.৪০। মেধাক্রম প্রথম থেকে দ্বিতীয়র ব্যবধান নজিরবিহীন।
প্রসঙ্গত, ‘ঘ’ ইউনিট হচ্ছে বিভাগ পরিবর্তনের ইউনিট। বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও কলা- সবার জন্য একই ভর্তি পরীক্ষা হলেও মেধাতালিকা আলাদা হয়। গত ১২ অক্টোবর শুক্রবার উক্ত ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ২৬.২১ শতাংশ শিক্ষার্থী ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে। গত বছর এই ইউনিটে পাসের হার ছিল ১৪.৩৫ শতাংশ।
এদিকে ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি প্রক্রিয়া বাতিল দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে অনশনে বসা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আখতার হোসেনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতারা। বুধবার বিকেলে তারা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশনরত আখতার হোসেনের সঙ্গে সংহতি জানাতে আসেন।