ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নতুন প্রজন্ম ও প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৩:২৯, ১৯ অক্টোবর ২০১৮

নতুন প্রজন্ম ও প্রধানমন্ত্রী

সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে দৃপ্ত মনোবল এবং অমিত সাহস নিয়ে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় সবাইকে সম্পৃক্ত করছেন, সেখানে সর্বসাধারণের অংশীদারিত্ব দৃশ্যমান হচ্ছে। কৃষিভিক্তিক সমাজব্যবস্থাকে উন্নত প্রযুক্তিতে আধুনিকায়নই শুধু নয়, প্রান্তিক শ্রমজীবী মানুষদের জীবনযাত্রার মানকে যে পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, সেখানে অর্থনীতির এই প্রধান খাতটি আজ বিশ্বমর্যাদায় আসীন। নিজ অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্পকে বাস্তবে রূপ দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থায় যে নবযুগের সূচনা হলো, সেটা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলকে যে মাত্রায় উন্নীত করবে, তার উত্তর সময়ই দেবে। যে অবিস্মণীয় পরিকল্পনা আর বাস্তবায়নের চিত্র দৃশ্যমান হচ্ছে অর্থনীতির প্রতিটি সূচকে, তার যুগান্তকারী প্রভাব পড়ছে সর্বক্ষেত্রে। সম্মিলিতভাবে পুরো দেশবাসী তার সুফল উপভোগ করছে। সেখানে উদ্দীপ্ত তারুণ্যের সম্ভাবনাময় জীবনকে বিশ্বসভায় স্থান দিতে যেসব প্রয়োজনীয় এবং সময়োপযোগী কর্মপ্রবাহ গ্রহণ করা হয়েছে তাও আধুনিকতার এই বলয়কে অনন্য এক মাত্রায় সন্নিবেশিত করবে। সময়ের প্রজন্মকে তথ্যপ্রযুক্তি এবং নাগরিক সমস্ত অধিকার আর সুযোগ-সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে দেশের ভাবি কর্ণধারের যথার্থ আসনে বসানোর আকাক্সক্ষায় বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনার যোগসাজশ প্রধানমন্ত্রীর অনবদ্য আবদান। তিনি দৃঢ় কণ্ঠে সব সময় বলেন- উন্নত বিশ্বের সঙ্গে নিজের ভূমিকা প্রমাণ করে কোন অবস্থাতেই পিছিয়ে থাকা যাবে না। নিজেকে যোগ্য হিসেবে তৈরি করে বিশ্বদরবারেও অবস্থান মজবুত করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে বর্তমান প্রজন্মকে আধুনিকায়নের কলাকৌশল আয়ত্তে আনাই শুধু নয়, যোগ্যতম বিবেচনায় দেশে-বিদেশে নিজের ক্ষেত্রকে সম্প্রসারিত করাও জরুরী। এই লক্ষ্যে যেমন হরেকরকম প্রকল্প, কর্মসূচীর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, একইভাবে সাধারণের মধ্যেও তাকে অবারিত করে দেশকে অনন্য উচ্চতায় নিতে হবে। প্রধান প্রধান মহৎ ও বৃহৎ কর্মোদ্যোগের অনেক সুফল এখন আমরা পেতে শুরু করেছি। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের এক বার্ষিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে ভবিষ্যত প্রজন্ম গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয়তম স্থানে। বিশ্বব্যাংক ১৫৭টি দেশের ওপর জরিপ চালায়। শ্রীলঙ্কার স্থান ৭৪তম এবং নেপালের স্থান ১০২তম। এখান থেকে সামান্য পিছিয়ে বাংলাদেশ ১০৬তম স্থানে নিজের অবস্থান তৈরি করে। ভারত এবং পাকিস্তানের অবস্থান আরও পেছনে। ১১৫ ও ১৩৪তম। এক দশক ধরে বর্তমান সরকার মানবসম্পদ উন্নয়নে যে অভাবনীয় কর্মযোগ অবারিত করে সেখানে নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যত তৈরিতে প্রশংসিত ভূমিকা রেখে বিশ্ব প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ায় একটি শক্ত অবস্থানে পৌঁছেছে। প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন দশকের এই এক অসাধারণ সাফল্য যা উদীয়মান প্রজন্মকে দেশের যথার্থ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সর্ববিধ উন্নয়ন সহায়ক সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছে। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে মানবসম্পদ অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ সফলতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ তার নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনায় শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যখাতকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় আনায় মানবসম্পদ উন্নয়নে প্রভাব পড়ছে সুদূরপ্রসারী। সর্বজনীন স্বাস্থ্য সেবাকে তার লক্ষ্যমাত্রায় উন্নীত করতে সরকার যে যুগান্তকারী কর্মযোগ সম্প্রসারিত করেছে, তার সরাসরি প্রভাব পড়ে শিশুমৃত্যু এবং প্রাইমারি শিক্ষায় ঝরে পড়াকে প্রতিরোধ করার গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্যে। আর এখানেই বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অবস্থান বেশ জোরালো এবং উল্লেখ করার মতো। এই প্রতিবেদন স্পষ্টভাবে তুলে ধরে বাংলাদেশে যত শিশু জন্ম নেয় সেখানে পাঁচ বছর বয়স হওয়ার পরও ৯৭% বেঁচে থাকে। শুধু বেঁচে থাকা নয় সম্ভাবনাময় জীবন নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবার ক্ষমতাও রাখে। সদ্যভূমিষ্ঠ এবং ৫ বছরের মধ্যে শিশুর মৃত্যুর হার কমাতে বাংলাদেশ যে সাফল্য দেখায়, সেখানে স্বাস্থ্যখাতে হরেকরকম প্রকল্প তৈরি ও বাস্তবায়নের গুরুত্ব সর্বাধিক। শুধু চিকিৎসা সেবায় নয়, শিক্ষার আঙিনায়ও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের ছাত্রজীবনের সময়ও অনেক বেশি। আমাদের দেশে ৪ বছর বয়সে কোন শিশু তাদের শিক্ষা জীবনে প্রবেশ করে। আর ১৮ বছর পার হওয়া অবধি প্রায় ১১ বছর তার শিক্ষাকার্যক্রম অব্যাহত থাকে। প্রয়োজনীয় ও স্বাস্থ্যসম্মত উচ্চতা নিয়ে বেড়ে ওঠা বাংলাদেশের শিশু-কিশোররা ৬৪% এর আওতায় থাকে। মানবসম্পদ উন্নয়নে শিশু-কিশোরদের ওপর এমন ইতিবাচক প্রভাব আগামী প্রজন্ম তৈরিতে যথাযথ ভূমিকা রাখবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। আর এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্য শুধু আশাব্যঞ্জকই নয়, অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতায়ও পড়বে এর দীর্ঘ মেয়াদী প্রভাব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন দশকের যে ক্রমবর্ধমান অগ্রযাত্রা, তা সাধারণ মানুষের জীবনমান বাড়াতে যে উৎসাহ আর উদ্দীপনার সঙ্গে বিভিন্ন রকমের বাস্তব কর্মযোগের শুভ উদ্যোগের নিরন্তর গতি সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিকে হাতের নাগালে পৌঁছে দেয়। আর ভবিষ্যত প্রজন্মের ক্ষেত্রে এই সমৃদ্ধি তাদের যে স্বর্ণদুয়ারে নিয়ে যাবে, সেটা ভাবার সময় এসেছে। কারণ গত দশ বছরের প্রবৃদ্ধির অবারিত ধারাকে যদি আরও বেগবান করতে হয়, তাহলে শেখ হাসিনাকে আবারও তাঁর শক্ত আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এছাড়া বিকল্প কোন পথ সামনে নেই। অসংখ্য তরুণের যথার্থ অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী তাদের জন্য যা যা করেছেন, সেসব খতিয়ে দেখার প্রয়োজন পড়বে এবার। সামনে নির্বাচন। আর বর্তমান প্রজন্ম নতুন করে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে ভোট দেয়ার অধিকার পাবে। তাদেরকেই অনুধাবন করতে হবে, আধুনিক সময়ের স্রোতে সম্পৃক্ত করতে তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে নতুন উদ্ভাবন আর জ্ঞান সাধনাকে নিয়মিত চর্চার মাধ্যমে দেশ ও জাতির উন্নয়ন ছাড়াও নিজেদের যুগোপযোগী করে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে আরম্ভ করে পেশাজীবী পর্যায়ে যথার্থভাবে নিজেদের স্থান গড়ে তোলা এমনকি মেধা ও মননের ভিত্তিতে যোগ্যতা যাচাইÑ সব ধরনের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে তাদের জন্য। শিক্ষা কার্যক্রমকে আধুনিকায়ন ও সার্বজনীনই শুধু নয় বিশ্বমানের অবস্থানে নিয়ে যেতে অনেক প্রচলিত মান্ধাতা আমলের বিধিকে সংস্কারের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রসঙ্গক্রমে এসে যায় অনেক বেসরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সরকারী নিয়ন্ত্রণে এনে তার আর্থিক সচ্ছলতাসহ ছাত্রদের সার্বিক অগ্রযাত্রায় নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। যুগের চাহিদাকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে এই ধরনের প্রয়োজনীয় পরিবর্তনগুলো আনতে হয়েছে। চলে আসা দীর্ঘ ব্যবস্থাকে নতুনভাবে সাজাতে অনেক ঝামেলাও পোহাতে হয়। বিধি নিয়মের সংস্কার করতে হয়। সরকারী আইনানুগ ব্যবস্থাকে অন্তর্ভুক্তি করা ছাড়াও প্রাতিষ্ঠানিক অনেক জটিলতাকে চলমান প্রক্রিয়ার অনুষঙ্গ করার বিকল্প কোন উপায় থাকে না। এসব করতে গেলে নতুন বাজেট প্রণয়ন করা ছাড়াও অনেক অসঙ্গতিকে বৈধতার রূপ দিতে হয়। শিক্ষা পাঠ্যসূচীকেও নানা প্রক্রিয়ায় নতুন সময়ের সঙ্গে মেলাতে হয়। ছাত্রদের মেধা ও মনন বিকাশের মাত্রাকে সঙ্গত কারণে বিবেচনায় আনতে হয়। দেশীয় শিক্ষা আর ঐতিহ্যের সঙ্গে বিশ্বায়নের অবিমিশ্র যোগসাজশ আধুনিক প্রজন্মের অন্যতম নিয়ামক শক্তি। অগ্রযাত্রার এমন অভিগামিতায় প্রধানমন্ত্রীর অবদান যেমন বিবেচনায় আসে সর্বাগ্রে, একইভাবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরাও নিজেদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে এই ধরনের মহৎ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হয়ে সাফল্যের গতিধারায় নিমগ্ন হয়। তা না হলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যক্রম সাফল্যের দ্বারে পৌঁছাতে বিলম্ব হতো। সুতরাং একজন সচেতন নাগরিক যেভাবে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় নিজের অংশীদারত্বকে দৃশ্যমান করে তোলে, পাশাপাশি সমৃদ্ধির কর্ণধারের প্রধান ভূমিকায় যিনি থাকেন তাকেও সমানভাবে চিহ্নিত করা বিশেষ জরুরী। ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গণজাগরণ মঞ্চের অভ্যুত্থান এবং সারা বাংলাদেশে তার আবেদন সম্প্রসারিত হওয়া, সেই সময়ের এক আন্দোলনপ্রসূত অভিযাত্রা। শাহবাগের চত্বরে নিরবচ্ছিন্ন একাত্মতায় সেই যুগান্তকারী সমাবেশ আধুনিক প্রজন্মের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। সর্বস্তরের পেশাজীবী মানুষ এই নতুন অভিযাত্রায় শরিক হয়েছিল। এমন দুর্বার আন্দোলনে সারা বাংলা বিস্মিত হলেও আশ্বস্তও হয়েছে সময়ের প্রজন্মের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক এমনতরো দুঃসাহসিক দেশাত্মবোধে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনরত আধুনিক প্রজন্মের প্রতি দায়বদ্ধতায় তাদের সুরক্ষারও ব্যবস্থা করেছিলেন। অবোধ শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে উদীয়মান তরুণই শুধু নয়, উদ্দীপ্ত যুবকদেরও প্রধানমন্ত্রী কি অসীম স্নেহ মমতায় আগলে রাখেন, সে প্রমাণ তিনি বহুবার দিয়েছেন। ছাত্রদের আন্দোলনকে আমলে নিয়ে তাদের যৌক্তিক দাবি দাওয়াকে গুরুত্ব দিয়ে সব সময় পাশে থেকেছেন। তাদের প্রতি সহৃদয় সহানুভূতিতে অধিকার এবং স্বাধীনতার ক্ষেত্রে সম্মান দেখাতেও তিনি কখনও দ্বিধা করেননি। কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা তার প্রিয় এবং অনেক কাছের মানুষ। যাদের তিনি বটবৃক্ষের মতো ছায়া দিয়ে যাচ্ছেন। মাত্র কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সমর্থন দিয়ে উদীয়মান প্রজন্মকে তাদের মেধা ও মনন কাজে লাগাতে পরামর্শ দেন তিনি। আপত্তি থাকা সত্ত্বেও তিনি ভবিষ্যত প্রজন্মের পাশে দাঁড়িয়ে কোটা পদ্ধতি বাতিলের আইন মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করেন। যদিও উপজাতি, নৃগোষ্ঠী, প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেকেরই এই সংস্কার আন্দোলনের শিকার হয়ে কোন মর্যাদাসম্পন্ন চাকরি থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়Ñ মেধা ও মনন থাকা সত্ত্বেও। তারপরেও প্রধানমন্ত্রীর কাছে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য দাবিটি ছিল মেধা ও মনন বিবেচনায় সরকারী কর্মকর্তা নিয়োগ। শেষ অবধি সেটাই গুরুত্ব পেয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা তাদের দাবি আদায়ে সফল হয়। সর্বশেষ যে ছাত্র-আন্দোলন সারা বাংলা কাঁপিয়ে দেয় সেটা হলো সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার অনিয়ম আর অবৈধ নিয়মনীতি পরিবর্তনের দাবিতে। বনানী সেনানিবাসের সামনে দুই শিক্ষার্থীর বাসচাপায় নিহত হওয়াকে কেন্দ্র করে প্রথমে তাদের সতীর্থরা রাস্তায় নেমে আসে। কালক্রমে সেই ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ে। টানা ১০ দিন কিশোর-তরুণ ছাত্রছাত্রীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নিজেদের অবস্থান সংহত করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে একাত্ম হয়ে তারা সড়ক পরিবহনের সমস্ত অনিয়মকে যাচাই-বাছাই করে লাইসেন্সবিহীন চালকই শুধু নয়, মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি চিহ্নিত করে তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদানেও বাধ্য করে। এখানেও প্রধানমন্ত্রীর কাছে মনে হয়েছিল শিক্ষার্থীর যৌক্তিক দাবি মানাই সঙ্গত এবং সেটা তিনি কার্যক্ষেত্রে করেও দেখান। পরিস্থিতি বিবেচনায় তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে তিনি নতুন সড়ক পরিবহন আইন মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেন। দুই নিহত শিক্ষার্থীর বাবা-মাকে ২০ লাখ করে অর্থ প্রদান করে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় এবং কলেজটিতেও প্রয়োজনীয় দায়-দায়িত্ব পালন করেন। এখানে শিক্ষার্থীদের এমন সুরক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন, যাতে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা কোন ধরনের বিপর্যয়ের মুখে না পড়ে। মাতৃত্বের এমন মহিমান্বিত রূপ প্রদর্শন করতে ক্ষমতাধর এই রাজনীতিজ্ঞকে মোটেও ভাবতে হয়নি। মমত্ববোধে রোহিঙ্গা সমস্যা সামলানোর জন্য তাঁকে ‘মানবতার জননী’র সম্মানে অভিষিক্ত করা হয় বিশ্বব্যাপী। সুতরাং নতুন প্রজন্ম থেকে তৈরি হওয়া বর্তমান ভোটারদের এসব বিবেচনায় এনে তাদের মূল্যবান মতামতকে ঠাণ্ডা ও যৌক্তিক বুদ্ধিতে ভাবা এই মুহূর্তে জরুরী। শুধু সুযোগ্য নাগরিকই নয়, বিশ্ব সীমানায় সদর্প বিচরণের ক্ষেত্রেও প্রধানমন্ত্রীর অবিস্মরণীয় কর্মদ্যোতনা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য যথার্থ নির্দেশনা। লেখক : সাংবাদিক
×