স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন নিলে ৫০ হাজার টাকা আর দেড় লাখ টাকায় সরাসরি ভর্তির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফেঁসে গেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি জালিয়াত চক্রের এক সদস্য। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রিফাত আরা মুন নামের এক ভর্তিচ্ছুকে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষার্থী গোলাম রাব্বানী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রতিশ্রুতির অগ্রিম ২০ হাজার টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিতে এসে ধরা পড়েন তিনি। পরে রিফাত আরা মুনের বন্ধুরা ধরে গণপিটনী দিয়ে প্রতারক গোলাম রাব্বানীকে থানায় দিয়েছে। রাবির শহীদ হবিবুর রহমান হলের পাশ থেকে তাকে আটক করেছে পুলিশ।
প্রতারক চক্রের সঙ্গে জড়িত গোলাম রাব্বানীর বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা থানায়। ২০১৬ সালে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ পাস করেন তিনি। বর্তমানে রাজশাহীর সিটি কলেজ থেকে বিবিএস ডিগ্রি করছেন।
রিফাত আরা মুন ও গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক মাস আগে বাসে তাদের পরিচয় হয়। সেখানে টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন দেয়া ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেয়ার মতো লবিং আছে বলে রিফাত আরা মুনকে জানায় গোলাম রাব্বানী। সেই সূত্র ধরে এক সপ্তাহ আগে রিফাত আরাকে ফোন করেন গোলাম রাব্বানী।
তখন গোলাম রাব্বানী রিফাত আরাকে জানায়, ‘যদি তুমি আমাকে ৫০ হাজার টাকা দাও, তাহলে আমি পরীক্ষার রাতে প্রশ্ন দিতে পারব। আর যদি সরাসরি ভর্তি হতে চাও তাহলে দেড় লাখ টাকা লাগবে। তাদের কথোপকথোন অনুযায়ী রিফাত আরা প্রশ্ন নেয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা দিয়ে প্রশ্ন নিতে রাজি হন। পরবর্তীতে রিফাত আরা মুন তার বন্ধু শেখ সৌরভকে জানায়।
রিফাত আরার বন্ধু শেখ সৌরভ জানায়, আমি ও রিফাত আরা দুজনেই এবার রাবিতে ভর্তি পরীক্ষা দিব। কিছুদিন আগে রিফাত আরা আমাকে জানায় তাকে রাব্বানী নামের একজন টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন দিবে। রিফাত আরার কাছ থেকে রাব্বানীর ফোন নম্বর নিয়ে আমি যোগাযোগ করি। তার সঙ্গে আমার কয়েকবার কথা হয়েছে।
সে আজকে (বৃহস্পতিবার) অগ্রিম ২০ হাজার টাকা নিতে এসেছিল। সেই সঙ্গে আমাদের সার্টিফিকেট সঙ্গে নিতে চেয়েছিল। পরীক্ষার আগের রাতে আমাদেরকে নিয়ে গিয়ে তার কাছে রাখতে বলে আমাকে জানিয়েছিল। কিন্তু ঘটনাটি আমি অন্য বন্ধুদের জানালে তারা রাব্বানীকে আটক করে পুলিশের কাছে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সে অনুযায়ী রাব্বানী ক্যাম্পাসে টাকা নিতে আসলে তাকে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়।
নগরীরর মতিহার থানায় গোলাম রাব্বানী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি মোবাইলে তাদেরকে টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন দেয়া ও সরাসরির ভর্তি কথা বলেছিলাম। কিন্তু তাদের সঙ্গে সেটা আমি ফাজলামো করেছিলাম। তাদেরকে আমি বুঝাতে এসছিলাম যে, এসব ভুয়া। কেউ প্রশ্ন দিতে পারে না, টাকা দিয়ে কেউ ভর্তিও করাতে পারে না। কিন্তু তারা আমাকে ধরে মারধর করে পুলিশে দিল।
নগরীরর মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহাদাৎ হোসেন বলেন, এক যুবককে ধরে আনা হয়েছে। সে ভর্তিচ্ছু এক শিক্ষার্থীকে টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন দিতে চেয়েছিল। তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: