ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ১৯ অক্টোবর ২০১৮

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

মোরসালিন মিজান ॥ এভাবে কেউ চলে যায়? সবকিছুর সঙ্গে এত জড়িয়ে থাকা, জড়িয়ে রাখা, ভরপুর প্রাণ, এত সহজে মিথ্যে হয়ে যায়? কেন সব মিথ্যে করে দিলেন আইয়ুব বাচ্চু? উত্তর জানা নেই কারও। দেশজুড়ে তাই শোক। শহর ঢাকা বিষণ্ণ। বাংলা ব্যান্ড সঙ্গীতের উজ্জ্বল নক্ষত্রের এমন অবেলায় চলে যাওয়া, না, মেনে নিতে পারছেন না ভক্ত-অনুরাগীরা। আহা কত গান! হৃদয় ছোঁয়া সুর! সব রেখে বৃহস্পতিবার আচমকা বিদায় নিলেন এবি। ‘রুপালি গিটার’ পড়ে রইলো। ভালবাসার মানুষ প্রিয় ‘বস’ নেই। বৃহস্পতিবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। চির বিদায় নেন। খবরটি ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতালে ছুটে আসতে থাকেন ভক্ত অনুরাগীরা। ভেতরে যাওয়ার সুযোগ নেই। রাস্তার ধারে তাই বড় জটলা। বেদনায় নীল মুখগুলো ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে ছিল। ঘুম অসমাপ্ত রেখে ছুটে এসেছিলেন বন্ধু শিল্পীরা। কেউ বয়সে বড়। কেউ ছোট। প্রায় সবার সঙ্গে ছিল বন্ধুতার সম্পর্ক। এ বন্ধুতা ছেড়ে ছুড়ে চলে গেলেন আইয়ুব বাচ্চু? সত্যি মানা যায় না। একসঙ্গে বেড়ে ওঠা প্রাণের সজন কুমার বিশ্বজিৎ স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ছিলেন বারবার। বলছিলেন, বাচ্চুর সঙ্গে আমার প্রায় ৪৫ বছরের সম্পর্ক। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসে ও প্রথমে আমার বাসায় উঠেছিল। মিউজিকের জন্য কত ত্যাগ স্বীকার করেছি আমরা! অনেক দিন দুজন এক বিছানায় ঘুমিয়েছি। পরে আমার বাসার পাশে ও বাসা ভাড়া নেয়। জানালা দিয়েও তাদের কথা হতো বলে জানান তিনি। একইরকম কাতর দেখাচ্ছিল ফাহমিদা নবীকে। আইয়ুব বাচ্চুর দেশপ্রেমের বিষয়টি সামনে আনেন এই শিল্পী। বলেন, বাচ্চু ভাই জাতীয় সঙ্গীত দিয়ে কনসার্ট শেষ করতেন। অনেকবার এমনটি আমি দেখেছি। শ্রোতাও তাকে ভালবাসতেন। সেই ভালবাসা সঙ্গে নিয়েই এবি পৃথিবী ছেড়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। তবে শুধু হাসপাতালের করিডোরে নয়, ঢাকার যেখানেই কান পাতা গেছে শোনা গেছে আইয়ুব বাচ্চুর নাম। সারাদিনই তার কথা হয়েছে। এখানে ওখানে প্রয়াত শিল্পীর গান বেজেছে। অনেকদিন হয়ত শোনা হয়নি ‘আমি কষ্ট পেতে ভালবাসি।’ ‘মাধবী’ ‘মেয়ে’ কিছুটা হলেও বিস্মৃতির আড়ালে চলে গিয়েছিল। গায়কের মৃত্যুতে ফিরে এলো তারা। বেদনার রং ছড়িয়ে দিল। আজ শুক্রবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রিয় শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হবে। এর পর প্রিয় শহর ঢাকা ছেড়ে যাবেন আইয়ুব বাচ্চু। শহর শূন্য করে দিয়ে তিনি চলে যাবেন। আগেও গেছেন বহুবার। এবার শেষবারের মতো যাওয়া। যাবেন শুধু। ফিরে আসবেন না আর! এদিকে সকালটা বেদনার সংবাদে শুরু হলেও সন্ধ্যায় ছিল পূজার আনুষ্ঠানিকতা। ঢাকার মন্দিরে মণ্ডপে ভিড় লেগে ছিল। ঢাক বেজেছে। সুর তুলেছে শঙ্ক। কোন কোন মঞ্চে গান হয়েছে। আসলে জীবন এমনই। আজ প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। রাজধানী ঢাকাতে এবার ২৩৪টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বছর মণ্ডপের সংখ্যা ছিল ২২৫টি। মণ্ডপের সংখ্যা যেমন বেড়েছিল, তেমনি জমজমাট ছিল উৎসব। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মের মানুষও এতে যোগ দেন। এভাবে দারুণ মূর্ত হয়ে ওঠে অসাম্প্রদায়িক বাংলা। সকলের প্রার্থনা- অসুর বদ হবে। জয় হবে শুভ শক্তির। এগিয়ে যাবে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। বিশ্বকাপ কিক্রেট প্রসঙ্গ। আর মাত্র কয়েক মাস বাকি। আগামী বছরের মে মাসে ইংল্যান্ডে শুরু হবে ওয়ান ডে ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ও আকর্ষণীয় আসর। তার আগে বাংলাদেশে চলে এসেছে ট্রফি। বৃহস্পতিবার ঢাকার একাধিক স্থানে প্রদর্শিত হয়েছে। জিম্বাবুয়ে সিরিজ সামনে রেখে এখন মিরপুর স্টেডিয়ামে প্রাকটিসে ব্যস্ত বাংলাদেশ দল। তাদের দেখানোর জন্য শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ট্রফি। যমুনা ফিউচার পার্কে ভিড় লেগেছিল সর্বসাধারণের। এখানে বিপুল কৌত‚হল নিয়ে ট্রফি দেখেছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। চারদিনের জন্য বাংলাদেশে আসা ট্রফি এর পর যাবে চট্টগ্রাম ও সিলেট। রবিবার বাংলাদেশ থেকে যাবে নেপালে। মোট পাঁচটি মহাদেশের ২১টি দেশ ও ৬০টি শহর ভ্রমণ করবে এই ট্রফি।
×