ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সময় আসলে সবাই ঐক্যবদ্ধ হবে ॥ নজরুল

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ১৯ অক্টোবর ২০১৮

সময় আসলে সবাই ঐক্যবদ্ধ হবে ॥ নজরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের স্বার্থে বৃহত্তর আন্দোলনের জন্য জাতীয় ঐক্যকে শক্তিশালী করার কাজ চলছে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন সময় আসলে সবাই ঐক্যবদ্ধ হবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সম্মিলিত ছাত্র ফোরাম আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এদিকে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গ্রেনেড হামলা মামলার রায় বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে নজরুল ইসলাম বলেন, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আরও ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। তিনি বলেন, ২০১৬ সালের মে মাসে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া যেসব দাবি জানিয়েছিলেন আজকে আমরা দেখছি দেশের প্রায় সব বিরোধী রাজনৈতিক দল সেই দাবির প্রতি একমত। নজরুল বলেন, ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কি রায় হতে পারে তা আগেই অনুমান করা যায়। আমরা এমন একটা সময় অতিক্রম করছি, যখন কেউ সুবিচার পাচ্ছে না। যে দেশের বিচারককে রায় দেয়ার কারণে দেশ ছাড়তে হয়, সে দেশে কেউ বিচার পাবে তা বলা যায় না। তিনি বলেন, গ্রেনেড হামলার বিষয়ে সুবিচার করার সুযোগ যদি কখনও হয় তাহলে অবশ্যই করা হবে। নজরুল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণ ফসল গণতন্ত্র অর্জনের জন্য আমাদের আরও ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে। যারা জীবন দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছেন, তারা আমাদের কাছে অনেক কিছু প্রত্যাশা করেন। ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থের উর্ধে উঠে আমাদের তাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য আন্দোলন জোরদার করতে হবে। আগামী দিনে স্বৈরাচারী ব্যবস্থার পরিবর্তন করে দেশে সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বর্তমান সরকারের ওপর দেশের জনগণ ক্ষুব্ধ মন্তব্য করে নজরুল বলেন, এ সরকার জনগণের অধিকার ক্ষুণœ করছে। তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে। এসবের বিরুদ্ধে আন্দোলনতো হবেই। সেই আন্দোলনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যেই বৃহত্তর ঐক্য গঠিত হয়েছে। আমরা আগে ২০ দলীয় জোটের মাধ্যমে যেসব দাবিতে আন্দোলন করছিলাম এখন সেই আন্দোলন এগিয়ে নিতে হবে। নজরুল বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছে, আমরা সেখানে আছি। আমাদের দাবির সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দাবি মিলে গেছে। বাম রাজনৈতিক দল এমনকি চরমোনাইর পীরও যে দাবি উত্থাপন করেছেন সেটাও এ দাবির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। কাজেই আমরা একসঙ্গে আন্দোলন করতে পারি। তিনি বলেন, যারা দেশে যথার্থ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা চায়, একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়, জনগণের শাসন কায়েম করতে চায়, দেশকে দুর্নীতি ও অনাচার থেকে রক্ষা করতে চায়, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চায়, তারা সবাই একটা সময়ে ঐক্যবদ্ধ হবে এটাই স্বাভাবিক। অতীতে তাই হয়েছে, এবারও হচ্ছে। নজরুল বলেন, সরকার ঐক্যের বিষয়ে নানা রকমের অপপ্রচার চালাচ্ছে। তবে এতে জনগণ বিভ্রান্ত হবে না। এমনকি দু’একটা দল যদি সেখান থেকে ছিটকে পড়ে তাতেও জনগণ মোটেও বিভ্রান্ত হবে না। বরং যারা ছিটকে পড়ে তারাই আঁস্তাকুড়ে চলে যায়। কাজেই জোট থেকে দু’একজনের চলে যাওয়া নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। নজরুল বলেন, ড. কামাল হোসেনকে এক সময় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী করেছিল আওয়ামী লীগ। অথচ তিনি এখন খারাপ হয়ে গেছেন। এ ছাড়া মাহমুদুর রহমান মান্না, আ.স.ম. আবদুর রব সবাই তাদের লোক ছিল। কিন্তু তারা এখন আওয়ামী লীগের কাছে খারাপ হয়ে গেছে। কারণ আওয়ামী লীগের খারাপ কাজগুলো পছন্দ করতে না পেরে তারা সবাই দল থেকে বের হয়ে গেছেন। বিএনপির নিবন্ধন বাতিলের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একটি দলের নেতা বলেছেন বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে নিষিদ্ধ করা হোক। যিনি বলেছেন, তাদের একসময় সন্ত্রাসী বলেছে আওয়ামী লীগ।
×