ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

গর্ভের সন্তান টেনে বের করা

তদন্ত কমিটির রিপোর্ট, তিন ডাক্তারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ১৯ অক্টোবর ২০১৮

তদন্ত কমিটির রিপোর্ট, তিন ডাক্তারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত

নিজস্ব সংবাদদাতা, কুমিল্লা ॥ দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফাতেমা বেগম নামে এক প্রসূতির গর্ভের সন্তান স্বাভাবিকভাবে প্রসবের জন্য ভর্তি হওয়ার পর ওই হাসপাতালের দুই নার্স ও এক আয়া মিলে প্রসূতির সন্তানের হাত-পাসহ অর্ধেকাংশ টেনে ছিঁড়ে বের করার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে কুমিল্লা সিভিল সার্জন জানান, এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি ৩ চিকিৎসকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগের কমবেশি প্রমাণ পেয়েছে। এর আগে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় এক চিকিৎসককে ওএসডি, এক চিকিৎসককে অন্যত্র বদলি এবং একজন আয়া ও একজন পরিচ্ছন্ন কর্মীকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। জানা গেছে, উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের সেলিম মিয়ার স্ত্রী ফাতেমা বেগমের সন্তান স্বাভাবিকভাবে প্রসবের জন্য গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাঃ নীলা পারভীনের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে ভর্তি হন। তার প্রসব বেদনা থাকলেও কোন চিকিৎসক না থাকায় সন্তান প্রসবের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। হাসপাতালের ২ নার্স রোগীর স্বজনদের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের জন্য বাইরের দোকান থেকে একাধিকবার ওষুধপত্র ক্রয় করান। পরবর্তীতে প্রসব বেদনায় প্রসূতি কাতর হয়ে পড়লেও সময়মতো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। একপর্যায়ে ওই রাত সাড়ে ১১টার দিকে নার্স আছিয়া, ঝর্ণা ও আয়া জেসমিন মিলে ফাতেমার গর্ভের সন্তানের পা এবং হাত ধরে টানাটানি শুরু করলে হাত-পাসহ অর্ধেকাংশ ছিঁড়ে প্রসূতির পেট থেকে বেরিয়ে আসে এবং মাথাসহ অর্ধেকাংশ ছিঁড়ে পেটে থেকে যায়। এ অবস্থায় প্রসূতির জীবন সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়লে রাতে প্রসূতিকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরদিন ২৪ সেপ্টেম্বর ওই হাসপাতালে অপারেশন করে প্রসূতির পেটে থাকা সন্তানের মাথাসহ অর্ধেকাংশ বের করে আনা হয়। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি দৈনিক জনকণ্ঠসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে তোলপাড় শুরু হয়। এ ঘটনায় জেলা সিভিল সার্জনের তত্ত্বাবধানে একটি এবং দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে আরও একটিসহ মোট ২টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এর মধ্যে হাসপাতালের আয়া শিরিন আক্তার ও পরিচ্ছন্নকর্মী জেসমিন আক্তার ডলিকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
×