ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নানা রঙের স্কার্ফ

প্রকাশিত: ০৭:৪৪, ১৯ অক্টোবর ২০১৮

নানা রঙের স্কার্ফ

প্রকৃতি থেকে শরৎ বিদায় নিয়েছে অনেক আগেই। বইছে হেমন্তের হাওয়া। আকাশ সেজেছে হাল্কা মেজাজের সাদা মেঘের পোশাকে। শীর্ণ নদীর পাশে কাশবনের রঙ মলিন হয়ে গিয়ে মেতেছে বাতাসের মিতালিতে। এ যেন এক অন্য রকম আবেশ। কমেছে বৃষ্টির রেশ। হুটহাট করে েেয বৃষ্টি নামছে না, তা নয়। কিন্তু রোদ্রজ্জ্বল আবহাওয়াটাই যেন বিরাজ করছে বেশি। সময় এবং স্রোত েেযমন কারও জন্য অপেক্ষা করে না। ঠিক তেমনি সে আবহমানতায় বদলাতে থাকে দেশ কাল পাত্র। অনেক কিছুই স্বাক্ষী হয়ে যায় ইতিহাসের আবার অনেক কিছুই ধরা দেয় নতুন করে। ঋতু বৈচিত্র্যের দেশ আমাদের এ বাংলাদেশ। ছয়টি ঋতুকে ঘিরে আবর্তিত হয় একটি বছর। শহুরে মানুষ এখন অনেক বেশি ব্যস্ত সময় কাটায়। প্রকৃতির এ অমোঘ পরিবর্তন যেন তাদের চোখ এড়িয়ে যায়। ঋতু পরিবর্তনের দোলাচল সহজেই আজ আর মন ছুঁয়ে যায় না। তবে প্রয়োজনের তাগিদে ঠিকই চিনে নিতে হয় ঋতুকে। যেমন গরম কিংবা বর্র্ষা কাল যেটাই হোক না কেন, চোখ মেলে ঋতু উপভোগ না করলেই প্রয়োজনের তাগিদে ঠিকই প্রস্তুতি নিতে হয়। সেটা পোশাক কিংবা খাওয়া-দাওয়ার বেলাই হোক। নইলে পথ চলাই দুরুহ হয়ে পড়ে। যে কারণে একেক ঋতুর একেক ধরনের প্রস্তুতি মানুষ নিয়ে থাকে। তাছাড়া মানুষ এখন অনেক বেশি সচেতন। ঋতু পরিবর্তন দেখার সুযোগ না হলেও এর আমেজের সঙ্গে মিশে যেতে দেরি হয় না কখনও। বৃষ্টির তেজ কমে আসাতে কিছুটা শুষ্ক হাওয়া খেলে যাচ্ছে। যে কারণে মৃদুমন্দ বাতাসের সঙ্গে দোল খেয়ে যাচ্ছে ধুলা। যা পথ চলায় বিঘœ ঘটায়। অস্বস্তিকর অবস্থার সম্মুখীন হয় পথিক। প্রস্তুতি চলে ধুলো থেকে নিজেকে রক্ষার। দিন যত গড়াচ্ছে মানুষ তত বেশি ফ্যাশন সচেতন হয়ে উঠছে। নিজেকে নিয়ে এখন অনেক বেশি ভাবে মানুষ। আর এ কারণেই প্রকৃতির যে কোন বৈরিতার প্রস্তুতি আগে থেকেই সেরে নেয়। নিজেকে এ বৈরিতার হাত থেকে রক্ষার তালিকায় মেয়েরা এগিয়ে। বাইরে বেরুনোর আগের প্রস্তুতি কিংবা পরের প্রস্তুতি সম্পর্কে বেশ ওয়াকিবহাল তারা। শহুরে পরিবেশ অনেক বেশি ধুলিময়। যে কারণেন মেয়েরা বাইরে বেরুনোর আগে ধুলা থেকে নিজেকে রক্ষার প্রস্তুতি সেরে নেয়। সবার আগে প্রস্তুতি নেয় চুলের। কিভাবে এই পরিবেশে চুলকে সতেজ রাখা যায় তা নিয়ে নানা রকম গবেষণা চালায় তারা। অনেকেই চুলের যতেœ স্কার্ফ ব্যবহার করে থাকে। প্রয়োজনের তাগিদে শুরু হলেও নানা রঙের স্কার্ফ এখন ফ্যাশনের অনুষঙ্গ। শুধু যে চুলের যতেœ স্কার্ফ ব্যবহার করা হয় তা নয় আজ স্কার্ফ ফ্যাশনের একটি অনুসঙ্গ হয়ে গেছে। মেয়েরা এখন ড্রেসের সঙ্গে ম্যাচ করে স্কার্ফ ব্যবহার করে থাকে। কোন্ ড্রেসের সঙ্গে কোন্ স্কার্ফ ব্যবহার করা হবে তা নিয়ে রীতিমতো চলে গবেষণা। অর্থাৎ স্কার্ফ এখন এতটাই জনপ্রিয় যা প্রায় প্রতিটি ফ্যাশন হাউসে পাওয়া যাচ্ছে। ফ্যাশনের ধারা ঘুরে-ফিরে আসে এ কথাটি সত্য। ষাট-সত্তর দশকে সিনেমার নায়িকাদের মাথায় স্কার্ফ ব্যবহার লক্ষ্যণীয় ছিল। তাছাড়া সে সময়ে ফ্যাশন সচেতন প্রতিটি মেয়েকেই দেখা যেত বিভিন্ন স্টাইলের স্কার্ফে চুল বাঁধতে বা চুল রক্ষায় ব্যবহার করত। সে প্রচলন আবার ঘুরেফিরে বর্তমান সময় পরিলক্ষিত হচ্ছে। কি ক্যম্পাস, কি আড্ডা সব জায়গাতেই তরুণীদের কাছে স্কার্ফের প্রাধান্যতা বিদ্যমান। বিভিন্ন সেপ এবং ডিজাইনে পাওয়া যাচ্ছে স্কার্ফ। সিল্ক, কটন, লিনেন, সিনথেটিক, জর্জেট বিভিন্ন কাপড়ে তৈরি হচ্ছে স্কার্ফ। একেকটি একেক সাইজের। দামেও রয়েছে ভিন্নতা। মজার বিষয় হচ্ছে, দিন দিন স্কার্ফ জনপ্রিয় হওয়াতে ডিজাইনে এসেছে ভিন্নতা। যেমন সুতার কাজ বা হাতের কাজের পাশাপাশি ব্যবহার করা হয়েছে স্টোন। আবার জরির কিছু কাজ করা হয়েছে। ম্যাচিং সুতার কাজও লক্ষণীয়। তবে এন্টিক স্টোন এবং পুঁতির কাজ স্কার্ফে যোগ করেছে বাড়তে আকর্ষণ। কিছু কিছু স্কার্ফ চওড়া এবং লম্বায় বেশ বড়। অনেক মেয়েই এ ধরনের স্কার্ফ ওড়না হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। কেউ জিন্স টি-শার্টের সঙ্গেও স্কার্ফ ব্যবহার করে । আবার ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে পরিধান করা কিংবা সব সময়ের জন্য মেয়েরা বড় স্কার্ফ ব্যবহার করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। বোরকার সঙ্গে ম্যাচ করেও বিভিন্ন স্কার্ফ এখন ফ্যাশন আউটলেটে শোভা পাচ্ছে। দাম পড়বে ৪৫০ থেকে ১২০০ টাকা। বসুন্ধরা সিটি, ইস্টার্ন প্লাজা, রাপা প্লাজা, নিউ মার্কেট, টুইন টাওয়ার, ইস্টার্ন প্লাস, নাভানা টাওয়ার, আড়ং , দেশী দশ ছাড়াও বিভিন্ন ছোটখাটো আউটলেটেও চোখে পড়বে ফ্যাশনেবল স্কার্ফ।
×