ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সব ধরনের মাছের দাম এখন চড়া

প্রকাশিত: ০২:৪৪, ১৯ অক্টোবর ২০১৮

সব ধরনের মাছের দাম এখন চড়া

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নিত্যপণ্যের বাজারে সব ধরনের মাছের দাম এখন চড়া। স্থিতিশীল রয়েছে চাল, ডাল, আটা, ভোজ্যতেল, চিনি ও পেঁয়াজের দাম। শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়লেও ভোক্তাকে কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। শুক্রবার রাজধানীর কাপ্তান বাজার, কাওরান বাজার, ফকিরাপুল বাজার এবং ফার্মগেট কাঁচা বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে, ইলিশ ধরা ও বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সব ধরনের মাছের দাম বেড়ে যাচ্ছে। পুনরায় ইলিশ ধরা, সরবরাহ ও বিক্রি শুরু হলে মাছের দাম কমবে বলে জানিয়েছেন মাছ ব্যবসায়ীরা। পুরান ঢাকার কাপ্তান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন জনকণ্ঠকে বলেন, বাজারে ইলিশ নাই। এ কারণে মাছের দাম চড়া। তিনি বলেন, ইলিশের পর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে বাজারে আবার মাছের সরবরাহ বাড়বে। মাছের সরবরাহ বাড়লে দামও কমে আসবে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, জাত ও মানভেদে প্রতিকেজি চিংড়ি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে দেড় হাজার টাকায়। গত সপ্তায় মাঝারি সাইজের প্রতিকেজি বাগদা চিংড়ি ৪৫০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সেই চিংড়ি কিনতে ভোক্তাকে এখন প্রতিকেজিতে দেড়শ থেকে ২০০ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। এছাড়া পুঁিট, পাবদা, রুই, কাতলা, মৃগেল ও পাঙ্গাস মাছের দামও বেড়ে গেছে। ভালমানের প্রতিকেজি রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫৫০ টাকায়। এছাড়া কই মাছ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-২২০ টাকায়, সরপুঁটি আকারভেদে ১৮০-২২০ টাকা কেজি, পাঙ্গাশ প্রতিকেজি ১৩০-১৬০ টাকা, ছোট মলা মাছ ৩৫০-৪৫০ টাকা কেজি, চাষের শিং ও মাগুর মাছ ৫০০-৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। বাজারে মাছের দাম বাড়লেও মাংসের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। মাছের বাজার চড়া হলেও ভোগ্যপণ্যের বাজারে চাল, পেঁয়াজ ও ভোজ্যতেলসহ সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। মিনিকেট ও মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চালের দাম কিছুটা কমতির দিকে রয়েছে। চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমন কাটা শুরু হয়েছে। এ বছর আমনের বাম্পার ফলন হওয়ায় চালের দাম বাড়ার আর কোন আশঙ্কা নেই। বরং সবকিছু ঠিক থাকলে চালের দাম সামনের দিনগুলোতে আরও কমে আসবে। এদিকে, বাজারে প্রতিকেজি মিনিকেট ও নাজিরশাইল জাতীয় চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮-৬৬, মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চাল ৪৮-৫৫ এবং মোটা জাতীয় চায়না ইরি স্বর্ণা জাতীয় চাল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়। কাওরান বাজারের চাল ব্যবসায়ী মতিন বলেন, এ সপ্তায় চালের দাম বাড়েনি। সামনে পুরোদমে আমন কাটা শুরু হলে চালের দাম কমবে। তিনি বলেন, আমনে পাশাপাশি সরকারী উদ্যোগেও দেশে কমদামে চাল বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে চালের বাজার নিয়ে কারসাজি করার তেমন কোন সুযোগ পাবে না অসাধু ব্যবসায়ীরা। জানা গেছে, সরবরাহ বাড়ায় কমে গেছে পেঁয়াজের দাম। প্রতিকেজি আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩৫ টাকায়। এছাড়া উন্নতমানের দেশী জাতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়। এছাড়া আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে নতুন পেঁয়াজ উঠা শুরু হবে। এ কারণে সামনে পেঁয়াজের দাম আরও কমবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে, বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ বাড়লেও দাম কমার তেমন কোন খবর নেই। কম দামে সবজি পেতে ভোক্তাদের আরও একমাস অপেক্ষা করতে হবে জানিয়েছেন সবজি ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে, এখন শীতের আগাম সবজি পাওয়া যাচ্ছে। মৌসুমের সবজি বাজারে আসা শুরু হলে ফুলকপি, বাধাকপি, শিম, টমেটোসহ সব ধরনের সবজির দাম কমে আসবে। প্রতিকেজি সবজি ৪০-৬০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। তবে টমেটো ও ফুলকপির দাম চড়া। নতুন সবজি হওয়ায় ৮০ টাকা কেজি টমেটো এবং ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ফুলকপি। সবজি ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতের আগাম সবজি হিসেবে ফুলকপি, বাধাকপি এ শিম বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে শীঘ্রই সবজির সরবরাহ বাড়বে। এজন্য ভোক্তাকে আরও একমাস অপেক্ষা করতে হবে।
×