ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঐক্যফ্রন্ট করায় আওয়ামী লীগের মধ্যে ভয় ঢুকেছে ॥ মওদুদ

প্রকাশিত: ০৪:৫১, ২০ অক্টোবর ২০১৮

 ঐক্যফ্রন্ট করায় আওয়ামী লীগের মধ্যে ভয় ঢুকেছে ॥ মওদুদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে বিএনপির জনপ্রিয়তা আছে কিনা তা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রমাণিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ইয়ুথ ফোরাম’ নামক একটি সংগঠন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে বিএনপি ঐক্যফ্রন্ট নামে জোট করায় আওয়ামী লীগের মধ্যে ভয় ঢুকেছে। মওদুদ বলেন, সরকার যখন ঐক্যের সমালোচনা করে তার মানে বুঝতে হবে আমাদের কাজ সঠিক হচ্ছে। কিন্তু দুঃখ লাগে তারা অনেক অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য রাখছে। তাতে আরও প্রমাণ হয় যে, তারা এখন নিশ্চিত হয়ে গেছে, যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তাহলে বর্তমান সরকারের ভরাডুবি হবে। বর্তমান সরকার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করছে না বলে অভিযোগ করে বিএনপি নেতাকর্মীর উদ্দেশে মওদুদ বলেন, সময় কম, তাই অল্প সময়ের মধ্যে এ সরকারের বাঁধ ভাঙ্গতে হবে। সবাইকে মাঠে নামতে হবে। আন্দোলন করে সরকারকে বাধ্য করতে হবে সংলাপে আসতে। তিনি বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন করে সরকার আজ মানুষকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। এটা সরাসরি সংবাদ মাধ্যমে হস্তক্ষেপ। আর সম্প্রচার আইন করা হয়েছে নির্বাচনের আগে সরকারের সমালোচনা যাতে না করতে পারে। গণমাধ্যমগুলোকে শুধু সরকারের উন্নয়নের গান গেতে হবে, কোন সমালোচনা করা যাবে না। মওদুদ বলেন, সরকার মনে করেছিল খালেদা জিয়াকে বন্দী করলে বিএনপি খ-বিখ- হয়ে যাবে। কিন্তু তা হয়নি, বরং বিএনপি এখন আগের যেকোন সময়ের চেয়ে ঐক্যবদ্ধ। এ পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে পরাজিত হবে। তিনি বলেন, ঐক্যফ্রন্ট হওয়ার পর দেশের মানুষের মধ্যে একটা আশা তৈরি হয়েছে । এখন গ্রামগঞ্জের মানুষ একটাই কথা বলে, ঐক্য হয়ে গেছে। তাদের মনে একটা আশা তৈরি হয়েছে। তারা নিজেদের মধ্যে একটা আস্থা ফিরে পেয়েছে। তারা এখন মনে করছে, নিজেদের ইচ্ছেমতো ভোট দিতে পারবেন। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রতিহিংসার রাজনীতি করবে না মন্তব্য করে মওদুদ বলেন, আমরা আগামীতে প্রমাণ করব দেশের মানুষ বিএনপিকে পছন্দ করে। তবে আওয়ামী লীগের লোকেরা বলছেÑ এ সরকার ক্ষমতায় না থাকলে তিন লাখ লোক মারা যাবে। আপনারা যদি এতই ভাল কাজ করে থাকেন তাহলে ভয় কিসের? আমি বলে রাখতে চাই, আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি করব না। এ সরকার এককভাবে নির্বাচন করতে চায় অভিযোগ করে মওদুদ বলেন, দেশে যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তাহলে বর্তমান মন্ত্রিসভার একজন মন্ত্রীও জিততে পারবেন না। আর এ ভয়ে তারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চান না। মওদুদ বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে ১ সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজার গায়েবি মামলা দেয়া হয়েছে। একেকটি মামলায় ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। বিভিন্ন জেলা থেকে আজকে নেতাকর্মীদের আগাম জামিনের জন্য আসতে হচ্ছে ঢাকায়। এটা কি নির্বাচনের পরিবেশ? আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা সাঈদ আহমেদ আসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সাইদুর রহমান প্রমুখ। ২৯ অক্টোবরের রায়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার প্রতিফলন ঘটবে- নজরুল: ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার প্রতিফলন ঘটবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আফসার আহম্মদ সিদ্দিকীর ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। সরকারকে উদ্দেশ করে নজরুল বলেন, জনগণের ন্যায্য দাবিগুলো নিয়ে আলোচনার ব্যবস্থা করা হোক। আলোচনার মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু ও অংগ্রহণমূলক নির্বাচনের আয়োজন করা হোক। তিনি বলেন, আমাদের সংবিধানবলে, নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনকালীন সরকার কমিশনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে। কিন্তু যদি দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকে তাহলে সে সরকার কমিশনকে সহায়তা করে না বরং প্রভাবিত করে। আমরা প্রভাবিত করার সরকার চাই না, নির্বাচনকালে একটি সহায়তাকারী সরকার চাই। অর্থমন্ত্রীর অনেক কথা হাস্যকর উল্লেখ করে নজরুল বলেন, সাংবাদিকরাও অর্থমন্ত্রীর কথা শুনে হাসে। অর্থমন্ত্রী বললেন, কামাল হোসেন জিরো। বিচারপতি সাত্তারের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী দেয়ার জন্য আওয়ামী লীগ আর যোগ্য লোক খুঁজে না পেয়ে তাকেই প্রার্থী করেছিল। আর আজ নাকি তিনি জিরো। স্বাধীনতার পর প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী যিনি আপনাদের সরকারের মন্ত্রী ছিলেন চার খলিফার একজন তিনিও নাকি জিরো। আর যে বিএনপি বার বার নির্বাচনের মাধ্যমে আপনাদের পরাজিত করেছে সেই বিএনপিও জিরো। আর অর্থমন্ত্রী আপনি সরকারী চাকরি করে এরশাদের মন্ত্রী হলেন, উপদেষ্টা হলেন পরে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে প্লাস হয়ে গেলেন? আয়োজক সংগঠনের সভাপতি জাহানারা সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, ডাঃ এজেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়াপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল প্রমুখ।
×