ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শীঘ্রই ব্যাক টু ব্যাক সাবস্টেশন নির্মাণে দরপত্র আহ্বান

ত্রিপুরা থেকে আরও ৩৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি হবে

প্রকাশিত: ০৫:১২, ২০ অক্টোবর ২০১৮

ত্রিপুরা থেকে আরও ৩৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি হবে

রশিদ মামুন ॥ ত্রিপুরা থেকে আরও ৩৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি করা হবে। এখন ত্রিপুরা থেকে ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি করা হচ্ছে। এর পরিমাণ আরও ৩৪০ মেগাওয়াট বৃদ্ধি করে ৫০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হবে। ত্রিপুরা এবং বাংলাদেশ সরকারের চুক্তির ভিত্তিতে এই বিদ্যুত বাংলাদেশে আসবে। পাওয়ার গ্রিডে কোম্পানি সূত্র বলছে শীঘ্রই বিদ্যুত আনার জন্য এইচভিডিসি (ব্যাক টু ব্যাক সাবস্টেশন) নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করবে। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র বলছে, এর বাইরেও ভারত থেকে আরো দুই হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে। এরমধ্যে ভারতের আদানি গ্রুপের কাছ থেকে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট আর পশ্চিম বাংলা থেকে আরও এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি করা হবে। সম্প্রতি ভারত-বাংলাদেশ ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি উদ্বোধনের সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দপাধ্যায় বাংলাদেশে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত বিক্রি করার আগ্রহের কথা জানান। তিনি ভিডিও সংলাপের অন্যপ্রান্তে থাকা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, কেন্দ্র অনুমোদন দিলে তিনি বাংলাদেশকে আরও এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত দিতে পারেন। যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পশ্চিম বঙ্গের এই আগ্রহের কথা আগেই সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। বিদ্যুত বিভাগ বলছে সব মিলিয়ে ২০২১ সালের মধ্যে সরকারের পরিকল্পনায় চার হাজার ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়াও ভারতকে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বিদ্যুত নেয়ার অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ। ওই গ্রিড দিয়ে প্রবাহিত বিদ্যুত থেকেও বাংলাদেশ দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত চাইছে। যদিও ভারত এই বিদ্যুত দেয়ার বিষয়ে এখনও বাংলাদেশকে কোন সিদ্ধান্ত জানায়নি। পাওয়ারগ্রিড কোম্পানি সূত্র বলছে, এখন সূর্যমণিনগর এলাকায় ব্যাক টু ব্যাক সাবস্টেশন নির্মাণের জন্য ভূমি উন্নয়নের কাজ চলছে। শিঘ্রই প্রকল্পর জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে। সব কাজ শেষ করে আগামী দুই বছরের মধ্যে ত্রিপুরার বিদ্যুত জাতীয় গ্রিডে যোগ হওয়ার আশা করছে সরকার। পিডিবির একজন কর্মকর্তা বলেন, এখন ত্রিপুরা থেকে যে ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি করা হচ্ছে তা দিয়ে জেলার একটি অংশের চাহিদা মেটানো হচ্ছে এই বিদ্যুত সরাসরি গ্রিডে আসছে না। আমাদের বিদ্যুত এবং ত্রিপুরার বিদ্যুতের সঞ্চালনে ভিন্নতা থাকায় ওই এলাকাকে পৃথক করে দেয়া হয়েছে। এখন কোন কারণে ত্রিপুরার বিদ্যুত পেতে সমস্যা হলে জাতীয় গ্রিড থেকে সেখানে বিদ্যুত সরবরাহে কিছুটা বিলম্ব হয়। তবে ব্যাক টু ব্যাক সাবস্টেশন নির্মাণ করা হলে এই সমস্যা আর থাকবে না। তখন আমরা ভেড়ামারা দিয়ে যে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত ভারত থেকে আনছি ওই পদ্ধতিতে বিদ্যুত আসবে। প্রকল্পর জন্য এক হাজার ৩৪২ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয় হবে। ‘সূর্যমণিনগর (ত্রিপুরা, ভারত) থেকে কুমিল্লা উত্তরে (বাংলাদেশ) বিদ্যুত সরবরাহের জন্য কুমিল্লা উত্তর দিয়ে এই বিদ্যুত বাংলাদেশে আসবে। প্রকল্প ব্যয়ের ২৫২ কোটি ৫১ লাখ টাকা আসবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এবং ১ হাজার ১৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা আসবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণ থেকে। বাকি ৬৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশর গ্রিড সরাসারি ভারতের গ্রিডের সঙ্গে দুই দিক দিয়ে সংযুক্ত হবে। বাংলাদেশ এককভাবে বিদ্যুত আমাদনির পরিবর্তে বিদ্যুত বিনিময়ের প্রস্তাব দিয়েছে। শীতে আমাদের চাহিদা কমে যাওয়ায় এখন ভারত তাদের দেশে নতুন চাহিদা তৈরি হলে বাংলাদেশ থেকেও বিদ্যুত আমদানি করতে পারে। তবে এই আলোচনা একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।
×