ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় ঐক্য হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে ॥ নৌমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ২১ অক্টোবর ২০১৮

জাতীয় ঐক্য হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে ॥ নৌমন্ত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ২০ অক্টোবর ॥ নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান এমপি বলেছেন, কিসের জাতীয় ঐক্য ? জাতীয় ঐক্য হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে। দলছুট ড. কামাল হোসেন স্বাধীনতাবিরোধী জনবিচ্ছিন্ন কিছু লোক নিয়ে ঐক্য করে নির্বাচন বানচালের বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছেন। সামনে জাতীয় নির্বাচন। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন চক্রান্ত শুরু হচ্ছে। বিভিন্ন মতপথের লোক নিয়ে কোন ঐক্য হয় না। যে ঐক্য গড়ে উঠেছে সেখানে খুনী, রাজাকার, আলবদর, কিছু মুক্তিযোদ্ধা এবং দেশের তথাকথিত কিছু সুশীল সমাজের নেতারা জড়িত। এ ঐক্যের স্থায়িত্ব বেশি সময়ের জন্য নয়। গোটা জাতিকে বিভ্রান্ত করতেই এই ঐক্যজোট হয়েছে। ড. কামালের জাতীয় ঐক্যের উদ্দেশ্য হলো চক্রান্ত করে শেখ হাসিনাকে উৎখাত করা। রাজাকার, আলবদর, স্বাধীনতা বিরোধীর সঙ্গে জাতীয় ঐক্য যারা গড়বেন মনে করতে হবে তারা আসলে স্বাধীনতার বিরুদ্ধে। শনিবার সকালে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা সদরের বেপারীপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন শেষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা আছে বলেই আজ সারা দেশে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। শেখ হাসিনা আছে বলেই দেশ আজ মুক্তিযুদ্ধের ধারায় পরিচালিত হচ্ছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে। ’৭১-এর খুনী, রাজাকার, আলবদর, ধর্ষণকারী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না হলে দেশ পাপ মুক্ত হতো না। শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে জাতিকে পাপমুক্ত করেছেন। যারা স্বাধীনতার কথা বলে স্বাধীনতা বিরোধীদের মদদ দিচ্ছে তারা কোনক্রমেই দেশপ্রেমিক হতে পারে না। এ ধরনের জাতীয় ঐক্য দেশ ও জনগণের অকল্যাণের জন্যই তারা করেছেন। দেশকে পাকিস্তান বানানোর এক গভীর ষড়যন্ত্রে তারা লিপ্ত। কোনমতেই বাংলার মানুষ এ ধরনের ঐক্যকে মেনে নেবে না, তাদের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত প্রতিরোধ করবেই। তাদের এ ধরনের ঐক্য আদর্শহীন ঐক্য। তাসের ঘরের মতো চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাবে। শাজাহান খান বলেন, ২০১৪-১৫ সালে যখন বিএনপি-জামায়াত দেশকে অশান্ত করার জন্য জ্বালাও-পোড়াও করেছিল। অনেক নিরীহ মানুষকে খুন করে, বাড়ি-ঘর পুড়িয়েছে, বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জা¡লিয়েপুড়িয়ে ছারখার করেছে, বাসে পেট্রোলবোমা মেরে চালক, হেলপার, যাত্রী, শ্রমিক, ব্যাংকারসহ নিরীহ মানুষ হত্যা করল তখন ড. কামাল হোসেনরা কোথায় ছিলেন ? সন্ত্রাসীদের জন্য গণতন্ত্র হতে পারে না উল্লেখ করে নৌমন্ত্রী বলেন, সে সময়ে ড. কামাল হোসেন গং, খুন, জ্বালাও-পোড়াও ও আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একটুও প্রতিবাদ করেননি। এখন বড় বড় কথা বলছেন, গণতন্ত্রের কথা বলছেন। সন্ত্রাসীদের গণতন্ত্রের জন্য ড. কামাল হোসেন এখন ফাঁকা মাঠে বুলি আওড়াচ্ছেন। শাজাহান খান বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছে বলে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। সামাজিক অস্থিরতা নেই। এক সময়ের গরিব বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর হচ্ছে। আজ বিশ্বব্যাংকও স্বীকার করেছে বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশ। সবকিছুই সম্ভব হয়েছে একমাত্র শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকার কারণে। পাকিস্তানের প্রসঙ্গ টেনে নৌমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানে এখনও ষড়যন্ত্র আছে বলে সে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন হয়নি। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আগামী ৫ বছরের মধ্যে পাকিস্তানকে সুইজারল্যান্ডের মতো বানাতে চেয়েছেন। কিন্তু সে দেশের বুদ্ধিজীবীরা, আগামী ৫ বছরে পাকিস্তানকে বাংলাদেশের মতো হওয়ার স্বপ্ন দেখতে বলেছেন। এতেই প্রমাণ হয়, বাংলাদেশ আজ কতটা এগিয়েছে। রাজৈর পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুরের পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার, রাজৈর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহানা নাসরিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ মোতালেব মিয়া, পৌর মেয়র শামীম নেওয়াজ প্রমুখ।
×