ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তির জোট হলো ঐক্যফ্রন্ট ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ২১ অক্টোবর ২০১৮

সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তির জোট হলো ঐক্যফ্রন্ট ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তির এ্যালায়েন্স হলো ঐক্যফ্রন্ট। তাদের সঙ্গে কোন সংলাপে প্রস্তুত নয় আওয়ামী লীগ। শনিবার দুপুরে ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকম-লীর সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে সংলাপের কোন পরিবেশ ও প্রয়োজনীয়তা নেই। নির্বাচন কমিশন বলেছে, নবেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা হবে। তাহলে এখন আর ১০-১২ দিনের মধ্যে কে-কার সঙ্গে সংলাপ করবে? সংলাপ করার সময় কোথায়? জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে বিকল্পধারা বাংলাদেশ না থাকার দিকে ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, অলরেডি তাদের দুই উইকেট পড়ে গেছে। আরও কত উইকেট পড়বে তা সময় বলে দেবে। নির্বাচনের আগে আসন ভাগাভাগির সময় এলে দেখা যাবে-কত ধানে কত চাল। তিনি বলেন, আমরা কোনো দল বা জোটকে ভাঙতে চাই না। আওয়ামী লীগ ভাঙনে বিশ্বাসী নয়। যদি কোনো দল ভাঙ্গে, নিজেদের কারণেই ভাঙবে। এখানে আওয়ামী লীগের হাত থাকার প্রশ্নই আসে না। ঐক্যফ্রন্টের জাতীয় আন্দোলন গড়ে তোলার হুমকির জবাবে তিনি বলেন, ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে বিচলিত হওয়া কিংবা ভয় পাওয়ার কিছু নেই। যারা ১০ বছরে ১০ মিনিটের জন্য আন্দোলন করতে পারেনি, তারা এসেছে ঐক্যফ্রন্ট করতে! সিলেটে পুলিশের অনুমতি না পেলেও ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ করার ঘোষণা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনের আগে সিলেটের মাজার জিয়ারত আমাদের দেশের রাজনৈতিক ট্র্যাডিশন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যদি মাজার জিয়াতের জন্য সেখানে যায়, সেটা কোন বিষয় নয়। যদি সেখানে যায়, যেতে পারে। কিন্তু মাজার জিয়ারতের নামে কোন প্রকার নাশকতা-সহিংসতা সৃষ্টির পরিকল্পনা যদি থাকে, তাহলে উদ্ভূত পরিস্থিতিই নির্ধারণ করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, ঐক্যফ্রন্টের লক্ষ্য ক্ষমতায় যাওয়া নয়, শেখ হাসিনাকে হঠানো, আওয়ামী লীগকে ঠেকানো। নীতিগতভাবে তাদের সঙ্গে সংলাপ হতে পারে না। সেতুমন্ত্রী বলেন, ঐক্যফ্রন্টের জনগণের প্রতি কোন আস্থা নেই। তারা জনগণের কাছে যাওয়ার আগে বিদেশীদের কাছে তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে গেছে। তাই আমি মনে করি, তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। ওবায়দুল কাদের বলেন, ঐক্যফ্রন্ট জোটের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে যে কথা শোনা যাচ্ছে তা যদি সঠিক হয়, তাহলে এখানে নাশকতা ও সহিংসতার কথাও উড়িয়ে দেয়া যায় না। যদি এটাই উদ্দেশ্য হয়, তাহলে তাদের অনেক ষড়যন্ত্র, অনেক খেলা, অনেক নাশকতা, সহিংসতার পরিকল্পনা আছে। আসলে একটা অশুভ শক্তি এখানে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, একটি টেলিভিশন টকশোতে প্রখ্যাত নারী সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে নিয়ে এক-এগারোর কুশীলব, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন যে অশালীন, অশোভন আচরণ করেছেন আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই। এ ধরনের মন্তব্য নজিরবিহীন ও শিষ্টাচার বহির্ভূত। যে ভাষায় তিনি কথা বলেছেন তা বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী দ-নীয় অপরাধ। আমরা নারী সাংবাদিকদের দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করছি। নির্বাচন নিয়ে জাতীয় পার্টির (এ) চেয়ারম্যানের শঙ্কা প্রকাশ ও সম্মিলিত জোট থেকে বের হওয়ার ঘোষণা সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, এরশাদ সাহেব তো পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে বক্তব্য রাখতে পারেন। উনি তো সংসদে বিরোধীদলে আছেন, বিরোধীদলের পক্ষ থেকে যে কোন বক্তব্য উনি দিতেই পারেন। উনি তো আর ওনার পার্টিকে আওয়ামী লীগে দিয়ে দেননি। এরশাদ সাহেব আমাদের সঙ্গে জোটগতভাবে নির্বাচন করতে পারেন আবার নাও করতে পারেন। আগামী ১০/১২ দিনের মধ্যেই সব স্পষ্ট হয়ে যাবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, চলতি মাসের শুরুর দিকে শুরু করা গণসংযোগ কর্মসূচী আবার শুরু করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। ঢাকাসহ সারাদেশের সকল মহানগর, জেলা, উপজেলা, ওয়ার্ড পর্যায়ে যে গণসংযোগ কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছিল তা সফল হয়েছে। গণসংযোগকালে জনগণের ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। যা আওয়ামী লীগকে আরো উদ্বুদ্ধ করেছে। তিনি বলেন, দুর্গাপূজার আগে গণসংযোগ কর্মসূচী বন্ধ রাখা হয়েছে। সম্পাদকম-লীর বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারা দেশে এই কর্মসূচী আরও জোরদার করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুনন্নাহার লাইলী, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক শামসুনন্নাহার চাপা, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমীন, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আমিরুল ইসলাম মিলন, মারুফা আক্তার পপি প্রমুখ।
×