ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ক্ষমা চাইলেই হবে না, মইনুলকে ঘৃণা করা উচিত ॥ তোফায়েল

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ২২ অক্টোবর ২০১৮

 ক্ষমা চাইলেই হবে না, মইনুলকে  ঘৃণা করা  উচিত ॥ তোফায়েল

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা, ২১ অক্টোবর ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, রাজনৈতিক চরিত্র নষ্ট হচ্ছে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের। কারণ ২০০৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর শিবিরের একটা প্রতিনিধি সম্মেলনে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন এবং সেখানে তিনি শিবিরের গুণকীর্তন করেছেন। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মাসুদা ভাট্টি একজন সম্মানিত সাংবাদিক। তার অনেক খ্যাতি রয়েছে। তাকে ‘চরিত্রহীন’ বলেছেন, মইনুল হোসেন। জাতির সামনে ব্যারিস্টার মাইনুলের ক্ষমা চাইলেই হবে না। তার প্রতি মানুষের ঘৃণা প্রকাশ করা উচিত হবে। রবিবার সকালে ভোলা সদর উপজেলার টবগী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে আসন্ন সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে কেন্দ্র কমিটি গঠন অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। মন্ত্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনী ছিলেন, খন্দকার মোস্তাক। খন্দকার মোস্তাক যখন একটা রাজনৈতিক দল করেছিল, মইনুল হোসেন সেই দলের নেতা হয়েছিলেন। এখন আবার তিনি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকারী, ২০০১ সনের পর অত্যাচার নির্যাতন করেছে তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। কেন্দ্র কমিটি গঠন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, বিএনপির এখন দুর্দিন। ওদের নেতা নেই। ওদের বড় নেতা চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় জেলে। তার এক ছেলের খুনের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়েছে। আগেও বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার করার কারণে তার জেল হয়েছে। তিনি বিদেশে। তাকে বানিয়েছে চেয়ারম্যান। একটা খুনীকে বানিয়েছে দলের চেয়ারম্যান। কিন্তু তাতে যখন কাজ হয় না, দেশী-বিদেশী মানুষ পছন্দ করে না। তখন আবার ভাড়া করেছে ড. কামাল হোসেনকে। মন্ত্রী বলেন, ড. কামাল হোসেন আমাদের দল করত। তার কী ক্ষমতা সক্ষমতা আছে তা আমরা জানি। তিনি নিজে সরাসরি কোন দিন ভোটে জিতেননি। বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেয়া আসন থেকে ২ বার এমপি হয়ে একবার আইনমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী হয়েছেন। তাকে নিয়েছেন মইনুল হোসেন। তোফায়েল আহমেদ বলেন, শনিবার ৫৫ জন বড় বড় সাংবাদিক তাকে ক্ষমা চাইতে বলেছেন। একজন নারী সাংবাদিক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান মাসুদা ভাট্টিকে চরিত্রহীন বলেছেন। এখন সারা দেশের নারী সমাজ মইনুল ইসলামকে ধিক্কার দিচ্ছে। এই মইনুল হোসেন ২০০৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর শিবিরের প্রতিনিধি সম্মেলনে বলেছিলেন, শিবির একটা নাম করা দল আমি তার পক্ষে আছি। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যিনি আপনাদের উন্নয়ন দিয়েছেন। ভোলা-বরিশাল ব্রিজ করে দেবেন। এখানে ভোলায় অনেক শিল্প হবে। আমরা যে কাজ করি অন্য কেউ করে না। আর এক বার শেখ হাসিনা যদি ক্ষমতায় থাকে, বাংলাদেশ হবে বিশ্বের মধ্যে এমন একটি দেশ যে দেশকে মানুষ তুলনা করবে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে। সে জন্য আগামীতে ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানান নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে। ভোটের মাধ্যমে ধিক্কার জানাবেন। খুনীদের নিয়ে যারা দল করে, খুনীদের নিয়ে ঐক্য করে। যারা বাবুলের সম্মান নিয়ে কঠাক্ষ করে। তাদের প্রত্যাখ্যান করে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে আবার প্রধানমন্ত্রী করবেন। ২০০১ সনের পর এই বাপ্তায় যারা আওয়ামী লীগ করতো তাদের ওপর কি অমানুষিক মামলা হয়েছে। মামলার পর মামলা হয়েছে। আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তখন ভোলায় এসেছিলেন। তাকে মিটিং করতে দেয়নি। তিনি আমার বাসায় বসে ছোট একটা মিটিং করে চলে গেছেন। তিনি বলেন, ২০০১ সনের পর আমি যখন ভোলায় আসি আমার গাড়ি ভেঙ্গেছে। আমার গাড়িতে গুলি মেরেছে। আমার বাড়িতে বোমা মেরেছে। কিন্তু এখন তো বিএনপির ওপর আমরা কোন অত্যাচার করি না। মন্ত্রী বলেন, সময় এসে আপনারা ঐক্যবধ্য হয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আস্থাশীল হয়ে এই বাপ্তা ইউনিয়নকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। ভোলার বাপ্তা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইয়ানুর রহমান বিপ্লব মোল্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, ভোলা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মমিন টুলু, কাচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম নকিব। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ভোলা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ মোশারেফ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি দোস্ত মাহামুদ, হামিদুল হক বাহালুল মোল্লা, যুগ্ম সম্পাদক এনামুল হক আরজু, সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল ইসলাম বিপ্লব, আজিজুল ইসলামসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। পরে কেন্দ্র কমিটি ঘোষণা করা হয়। খুলনায় কুশপুতুল দাহ, অবাঞ্ছিত ঘোষণা ॥ খুলনা অফিস জানায়, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে খুলনায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ খুলনা মহানগরীর সদর থানা শাখা নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়ে এক মানববন্ধন শেষে তার কুশপুতুল দাহ করে এ ঘোষণা দেয়। একটি বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেলের টকশো’তে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে কটূক্তি করায় রবিবার দুপুরে মহানগরীর পিকচার প্যালেস মোড়ে এ কর্মসূচী পালিত হয়। আওয়ামী লীগ খুলনা সদর থানা শাখার সভাপতি এ্যাডভোকেট মোঃ সাইফুল ইসলাম অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এ সময়ে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ মহানগর শাখার শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ শহীদুল হক মিন্টু, কৃষক লীগ মহানগর সভাপতি শ্যামল সিংহ রায়, আওয়ামী লীগ সদর থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক ফকির মোঃ সাইফুল ইসলাম, জামাল উদ্দিন বাচ্চু, শ্রমিক লীগ মহানগর সভাপতি আবুল কাশেম ও সাধারণ সম্পাদক রনজিৎ কুমার ঘোষ রনো প্রমুখ। বক্তারা বলেন সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি সম্পর্কে কটূক্তিকারী এক-এগারোর অন্যতম কুশীলব ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। এ সময় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে সামাজিকভাবে বয়কট করে তারা মইনুল হোসেনকে গ্রেফতার, গণমাধ্যমে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করাসহ বিভিন্ন দাবি জানান।
×