ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সন্তানের আশ্রয়ে বৃদ্ধা মাকে তুলে দিলেন ওসি

প্রকাশিত: ০০:০৮, ২২ অক্টোবর ২০১৮

সন্তানের আশ্রয়ে বৃদ্ধা মাকে তুলে দিলেন ওসি

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর ॥ ৮৫ বছর বয়সী মসিরন বেওয়া বয়সের ভারে ন্যুজমান। দেখলেই যে কেউ বলবে তিনি হয়তো আর বেশিদিন বাঁচবেন না। বার্ধক্যজনিত কারনে মৃত্যুর মুখোমুখি দাড়িয়েও আশ্রয়হীন ছিলেন তিনি। জীবন সংগ্রামে শত কষ্ট করে সন্তানদের মানুষ করলেও ছেলেরা তাকে নিরাশ্রয় করে রেখেছিলেন দীর্ঘ কয়েক বছর। অসহনীয় ব্যাথা বুকে চেপে পেটের ক্ষুধা নিবারনের জন্য তিনি কবর স্থানের পাশে ছোট্ট একটি দোকান দেন দু’মুঠো ভাতের আশায়। দোকানটি ঠিক দোকান নয়, রাস্তার পাশের চাটাই বিছিয়ে দুই চারটা জিনিস টাঙ্গিয়ে ক’টা পয়সা উপার্জনের চেষ্টা যেন। মসিরন বেওয়া নাটোরের সিংড়া পৌর শহরের দমদমা কবরস্থানের পাশেই বসে থাকতেন চকলেট ও বিড়ির দোকান খুলে। পাশাপাশি আশপাশের মানুষ যে যা পরতো সাহায্য করত। যে বয়সে সন্তানের আশ্রয়ে ও পরিচর্যায় থাকার কথা সে বয়সে অতি কষ্টে অন্যের দয়ায় কাটছিল স্বামীহারা মসিরনের জীবন। দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই চলছিল তার দুঃখের জীবন। বিষয়টি সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামের নজরে আসে। সরেজমিনে গিয়ে তিনি মসিরন বেওয়ার অবস্থা দেখে আর ঠিক থাকতে পারেননি তিনি। সিদ্ধান্ত নেন এই বৃদ্ধা দুঃখী মায়ের জন্য কিছু করার। এরই এক পর্যায়ে সোমবার দুপুরে তিনি মসিরন বেওয়ার ছেলে রিক্সাচালক আবু সাঈদকে ও মসিরনকে এনে পুলিশি হেফাজতে রাখেন এবং মাকে তার জিম্মায় রেখে ভরণপোষনের নির্দেশ দেন। এরপর আবু সাঈদ তার মায়ের ভরণপোষন করবে বলে মুচলেকা প্রদান করে। সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানান, বৃদ্ধাকে এ বয়সে দোকানদারি করতে দেখে খুব খারাপ লেগেছে, তাই উদ্যোগ নিয়েছি যাতে এ বয়সে একাকিত্ব নয়, সন্তানের ছায়ায় বাকি জীবন যেন সে কাটাতে পারে। সিংড়া পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, সিংড়া পৌরসভা থেকে ওই বৃদ্ধাকে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় চাল দেয়া দেয়া হয়। তিনি তার বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
×