ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ম্যাড থেটারের তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে আয়োজন

প্রকাশিত: ০৭:২৫, ২৩ অক্টোবর ২০১৮

ম্যাড থেটারের তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে আয়োজন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশে নিরন্তর থিয়েটার চর্চায় সংযুক্ত নতুন পালকের নাম ম্যাড থেটার। ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে ‘নদ্দিউ নতিম’ নাটকের উদ্বোধনী প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে ম্যাড থেটারের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। দেখতে দেখতে তিন বছর বয়স হলো ম্যাড থেটারের। এ পর্যন্ত একটি প্রযোজনার একাধিক প্রদর্শনী করে দেশে-বিদেশে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে ম্যাড থেটার। ম্যাড থেটারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘দানে দানে তিন দান’ শিরোনামে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সংগঠন সূত্রে জানা গেছে আগামীকাল ২৪ অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হাসান আরিফ। এরপর ম্যাড থেটারের সাড়া জাগানো প্রযোজনা ‘নদ্দিউ নতিম’ নাটকের বিশেষ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। ‘নদ্দিউ নতিম’ নাটকের ৪৫তম মঞ্চায়ন হবে। নাটক শেষে শুভাকাক্সক্ষীদের দেয়া প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ফুলেল শুভেচ্ছা গ্রহণ করা হবে। প্রতিষ্ঠার প্রথম বছরেই ম্যাড থেটার আসামের গুয়াহাটিতে ব্যতিক্রম আয়োজিত উৎসবে ‘নদ্দিউ নতিম’ নাটকের প্রদর্শনী করে সাড়া ফেলে দেয়। এরপর একের পর এক ডাক আসে দেশের বাইরের প্রদর্শনীর। এর মধ্যে ২০১৭ সালে লন্ডনে বাংলাভাষীদের সবচেয়ে বৃহৎ উৎসব ‘এ সিজন অব বাংলা ড্রামা’য় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে ম্যাড থেটার। লন্ডনের ব্রাডি আর্টস সেন্টারে ম্যাড থেটার ‘নদ্দিউ নতিম’ নাটকের তিনটি প্রদর্শনী করে। ‘ম্যাড থেটারের ফার্স্ট ইয়ার’ শিরোনামে প্রথম বর্ষপূর্তিতে ‘বন্ধুর পথে বন্ধু’দের নিয়ে মিলন মেলা আয়োজন করে নাট্যাঙ্গনে নতুন ধারার সূচনা করে ম্যাড থেটার। দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি পালন করে আসামের গুয়াহাটিতে। সেখানে বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনারের বাসভবনে কেক কেটে দেশের বাইরে দলের বর্ষপূতি উদযাপন করে ম্যাড থেটার। এ বছর তৃতীয় বর্ষপূর্তির শিরোনাম ‘দানে দানে তিন দান’। কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের কালজয়ী উপন্যাস ‘কে কথা কয়’-এর নাট্যরূপ ‘নদ্দিউ নতিম’। নাটকটি ম্যাড থেটারের প্রথম প্রযোজনা। নাটক রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন আসাদুল ইসলাম, যিনি ম্যাড থেটারের হেড ম্যাড। নাটকে অভিনয় করেছেন আসাদুল ইসলাম, সোনিয়া হাসান ও আর্য মেঘদূত, যারা একই পরিবারের সদস্য, বাংলা নাটকের ক্ষেত্রে যা অনন্য ও নতুন মেরুকরণ। নাটকটির সহযোগী নির্দেশক আনিসুল হক বরুণ, সেট ও লাইট ডিজাইন ফয়েজ জহির, পোশাক সোনিয়া হাসান, আবহসঙ্গীত আর্য মেঘদূত, আলোক নিয়ন্ত্রণে আরিফ আহমেদ ও আবহসঙ্গীত নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন আতিক ও আদর। নাটকটি ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। নাটকটি দর্শকদের আকৃষ্ট করেছে এর অভিনয় গুণে, কাহিনীর চমৎকারিত্বে, ঘটনার বিন্যাসে ও চরিত্রের বিচিত্রতায়। নাটকটি নিয়মিতভাবে ঢাকায় মঞ্চস্থ হচ্ছে। প্রতিটি প্রদর্শনীতেই রয়েছে দর্শকদের আগ্রহ আকর্ষণ এবং পুনর্বার দেখার তাগিদ। দেশে ও দেশের বাইরে ‘নদ্দিউ নতিম’ নাটকের একের পর এক সফল প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে ম্যাড থেটার দর্শকদের মন জয় করে চলেছে। যে তিনটি কারণে নাটকটি দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এবং তীব্র আগ্রহের জন্ম দিয়েছে, সেগুলো হলো প্রথমত- বাংলাদেশের মূলধারার নাটকে ‘নদ্দিউ নতিম’ই প্রথম নাটক যেখানে একজন শিশু একটি কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছে। দ্বিতীয়ত- বর্তমান সময়ে একজন মানুষ অন্য একজনকে হত্যার জন্য নিজেকে আত্মাহুতি দিচ্ছে। এই নাটকে দেখা যায় একজন মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুকে বাঁচাতে একজন কবির নির্বিকার আত্মাহুতি। অর্থাৎ অন্যকে হত্যা করতে নয় বরং বাঁচাতেই আরেক মানুষের জীবন উৎসর্গ যা এই সময়ের জন্য এক অনন্য আদর্শ হিসেবে পরিগণিত। তৃতীয়ত এই নাটকে একটি কাল্পনিক পরিবারের কাহিনী মঞ্চস্থ হয় যা একটি বাস্তব পরিবারের সদস্যরা অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকের সামনে ফুটিয়ে তোলে।
×