ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

উন্নয়নের চিত্র আজ দৃশ্যমান : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০২:৩৮, ২৩ অক্টোবর ২০১৮

উন্নয়নের চিত্র আজ দৃশ্যমান : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ উন্নয়নের রোল মডেল হওয়ার স্বীকৃতি ধরে রাখতে নৌকায় ভোট দেয়ার বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাস্তবায়িত স্বাস্থ্য সেক্টরসহ দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের চিত্র আজ দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। আরও অনেক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। অনেক আগেই উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আসার সুযোগ দিতে হবে। বর্তমান সরকারের ব্যাপক উন্নয়নে দিশেহারা হয়ে পড়েছে বিরোধী পক্ষ। তাই গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তারা দেশকে অন্ধকারে ঠেলে দিতে চায়। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধীদের যেকোন ষড়যন্ত্র রুখে দিবে দেশের জনগণ। মঙ্গলবার স্বাস্থ্যখাতে গত দশ বছরে সরকারের সাফল্য উদযাপন এবং ভবিষ্যতে উন্নয়নে রোম্যাপের কর্মপরিকল্পনা বিষয়ক জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, এমপি, স্বাস্থ্য সচিব(স্বাস্থ্য ও শিক্ষা) জি এম সালেহউদ্দিন, অতিরিক্ত সচিব(পাবলিক হেলথ ও ওয়ার্ল্ড হেলথ) মো. হাবিবুর রহমান খান, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. এম ইকবাল আর্সলান সহ ইউনিসেফ,ইউএনএফপিএ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। সম্মেলনে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। দেশের সেরা মেডিক্যাল কলেজের স্বীকৃতি পেয়েছে ‘ ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বের প্রশংসা করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, তলাবিহীন ঝুঁড়ির বদনাম ঘুচিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এখন বিশ্বে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। তিনি ইতোমধ্যে মানবতার নেত্রী হিসেবে পরিচিত। তাঁর যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মর্যাদা থেকে উত্তরণ হয়ে উন্নয়নশীল মর্যাদা লাভ করেছে। স্বাস্থ্য সেক্টরের উন্নয়নের খন্ডচিত্র তুলে ধরে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, স্বাস্থ্যসেক্টর দেখেছে সফলতার মুখ। কর্মসূচী গ্রহণ, জনবল নিয়োগ ও অবকাঠামো নির্মাণকাজ অব্যাহত রয়েছে। জনবল বৃদ্ধি, অবকাঠামোর উন্নয়ন, মাতৃ ও শিশু মৃত্যু হ্রাস, ওষুধের সরবরাহ বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য খাতে ডিজিটাল বাংলাদেশ কার্যক্রম ইত্যাদি উন্নয়নমূলক উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সফলতা পেয়েছে সরকার। আশ্রিত রোহিঙ্গাদের যথাযথ সময়ে সঠিক চিকিৎসাসেবা প্রদানের ব্যবস্থা করে সুনাম কুড়িয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সব মিলিয়ে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের নেটওয়ার্ক আজ দেশের আনাচে কানাচে বিস্তারলাভ করেছে। স্বল্প খরচে উন্নত চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে দেশের মানুষ। দেশের ৯৯ ভাগ উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে রয়েছে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিসেবার ব্যবস্থা। বর্তমানে প্রতি মাসে ৮০ থেকে ৯০ লাখ মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সেবা নেন। দেশে অনুর্ধ ১২ মাস বয়সের শিশুদের সকল টিকা প্রাপ্তির হার ৮১ ভাগ। পোলিও, ধনুষ্টংকর মুক্ত হয়েছে দেশ। দেশব্যাপী একটি ব্যাপক-ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে সরকারের সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা রয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা নেটওয়ার্কের স্তরগুলো উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যকর্মী, প্রাইমারী, সেকেন্ডারী, টারসিয়ারী ও বিশেষায়িত হাসপাতাল এবং উভয়মুখী রেফারেন্স পদ্ধতি প্রবর্তন করেছি। যা বিশ্বে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত বিষয়গুলোকে কর্মপরিকল্পনায় গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। দেশে গড়ে উঠেছে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবার মজবুত অবকাঠামো। স্বাস্থ্যখাতে সাফল্য অর্জনের মাধ্যমে দেশের জনগণের প্রতি নিজেদের অঙ্গীকার পূরণ করছে বর্তমান সরকার। আর সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা করতে নিজেদের দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নেও সরকার সব সময় আন্তরিক। দেশের সাধারণ মানুষ আজ ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবার সুবিধা পাচ্ছে। ডিজিটাল বাংলদেশ এখন আর শুধু শ্লোগান নয়, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এর সুবিধা পৌঁছে গেছে। দেশের সকল পর্যায়ের হাসপাতালে বেডের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে আধুনিক যন্ত্রপাতি। নির্মাণ করেছি নতুন নতুন জেনারেল হাসপাতাল ও বিশেষায়িত হাসপাতাল। সরকার নতুন নতুন মেডিক্যাল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ, হেলথ টেকনোলজি ইনস্টিটিউট, নার্সিং কলেজ এবং নার্সিং ট্রেনিং ইনস্টিটিউট স্থাপন করেছে। আর ডাক্তার, নার্সসহ স্বাস্থ্যখাতের প্রতিটি বিভাগেই জনবল বাড়ানো হয়েছে। দারিদ্র বিমোচন, শিক্ষা, জেন্ডার সমতা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং পরিকল্পিত পরিবার নিশ্চিত করতে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। নারী ও শিশু স্বাস্থ্য উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে নারী ও শিশুর স্বাস্থ্য এবং জীবনমান সহায়ক নানামুখী সেবা ও সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে সরকার। জাতিসংঘের মা ও শিশু স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশ্ব কৌশলপত্র বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশব্যাপী মা ও শিশুর নিবিড় পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়েছে ।
×