ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ইলিশ বিক্রি শুরু হওয়ায় মাছের বাজারে স্বস্তি

প্রকাশিত: ০২:৩৪, ২ নভেম্বর ২০১৮

ইলিশ বিক্রি শুরু হওয়ায় মাছের বাজারে স্বস্তি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ফের ইলিশ বিক্রি শুরু হওয়ায় রাজধানীর বাজারগুলোতে কমতে শুরু করেছে সব ধরনের দেশীয় জাতীয় মাছের দাম। পরিবহন সঙ্কটের সমাধানে সরবরাহ বাড়ায় দাম কমতে শুরু করেছে সবজির। আমন কাটা শুরু হওয়ায় নতুন চাল বাজারে। এছাড়া ডাল, চিনি, পেঁয়াজ, ভোজ্যতেল ও আটার দাম স্থিতিশীল রয়েছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ে ভোক্তাদের স্বস্তি রয়েছে নিত্যপণ্যের বাজারে। সাপ্তাহিক ছুটি হওয়ায় সকাল থেকে রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রায় এক মাস পর বাজারভর্তি ইলিশ মাছ দেখে খুশি ক্রেতারা। দাম কিছুটা কম হওয়ায় ইলিশ মাছ বিক্রি হয়েছে বেশি পরিমাণে। দেশী মাছ কিনতে এসে অনেক ক্রেতা ইলিশ নিয়ে ঘরে ফিরেছেন। সাধারণত নবেম্বর ও ডিসেম্বরে সাগর ও নদীতে বেশিরভাগ ছোট সাইজের ইলিশ ধরা পড়লেও এ বছর ব্যতিক্রম। বাজারে বড়, মাঝারি ও ছোট তিন সাইজের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে সমান তালে। এসব মাছের দামও কম। মাঝারি সাইজের ইলিশের জোড়া বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১২শ’ টাকা। এক কেজি সাইজের ইলিশ ১১শ’ থেকে ১২শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। ৫০০ গ্রাম সাইজের এক জোড়া ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৮০০ টাকা। এছাড়া ছোট সাইজের প্রতিজোরা ইলিশ ৫০০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে, ফকিরাপুল বাজার থেকে ইলিশ কিনে ঘরে ফিরছিলেন শহীদবাগের বাসিন্দা ইকবাল হাসান। তিনি জনকণ্ঠকে জানান, এক মাস পর বাজারে এসে সস্তায় ইলিশ পাওয়া গেছে। তাই দেশী জাতের মাছের পরিবর্তে ইলিশ কেনা হলো। বাসার সবার পছন্দের মাছ ইলিশ। তিনি বলেন, সাধারণত, এ সময়টাতে বাজারে ইলিশ তেমন সরবরাহ থাকে না, দামও হয় বেশি। কিন্তু এ বছর অন্যরকম মনে হচ্ছে। ভরা মৌসুমের মতো ইলিশ উঠেছে রাজধানীর বাজারে। ইলিশ মাছ রক্ষা করা গেলে সারাবছর কম দামে ভাল সাইজের ইলিশ পাওয়া সম্ভব। এদিকে, ২২দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকার পরও বাজারগুলোতে ডিমওয়ালা বড় সাইজের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে সাগর ও নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে বড় সাইজের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণে রাজধানীর বাজারগুলোতে মিলছে ডিমওয়ালা ইলিশ। ফকিরাপুল বাজারের মাছ বিক্রেতা বাশার জানান, এবার বড় সাইজের ইলিশ আসছে। মৌসুমের শুরুতে এ বছর ইলিশের আকাল ছিল। কিন্তু জেলেদের জালে যখন ব্যাপকহারে ইলিশ ধরা পড়ছিল, তখনই এবার নিষেধাজ্ঞার সময় শুরু হয়। এ কারণে ২২দিন পরও ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে। এদিকে, বাজারে ইলিশের সরবরাহ বাড়ায় অন্যজাতের দেশীয় মাছের দাম কমতে শুরু করেছে। চিংড়ি, রুই, কাতলা, কাচকি, পুঁটি, টেংরা, মৃগেল, কই, তেলাপিয়া, মলাসহ সব ধরনের মাছের দাম কিছুটা কমেছে। বাজারে প্রতিকেজি টেংরা মাছ ৩৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, শিং ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, পাবদা ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০ থেকে ১৬০ টাকা, কাচকি ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, মলা ২৭০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা, রুই ১৮০ থেকে ৩৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহ ব্যবধানে এসব মাছের দাম কেজিতে ৩০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। এছাড়া পরিবহন সঙ্কটের সমাধানে রাজধানীতে শীতের সবজির সররবাহ বাড়তে শুরু করেছে। এ কারণে সবজির দাম কিছুটা কমতির দিকে। প্রতিপিস ফুলকপি ৪০-৫০, শিম ৭০-৮০, বেগুন ৪০-৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রায় সব ধরনের সবজি গড়ে ৪০-৫০ টাকার মধ্যে রয়েছে। সবজি বিক্রেতারা বলছে, সরবরাহ বাড়ায় সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। আগামী দিনগুলোতে দাম আরও কমবে। এছাড়া বাজারে ডিমের দাম বাড়তির দিকে রয়েছে। প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকায়। প্রতি হালি দেশী হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৬-৫০ টাকায়। এছাড়া বাজারে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, লেয়ার ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা, গরুর মাংস ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা, খাসির মাংস ৭৮০ টাকা থেকে ৮০০ টাকায়। মুদি পণ্যের মধ্যে চাল মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫৮-৬০ টাকা, আটাশ চাল ৫০ টাকা, উনত্রিশ চাল ৪৫ টাকা, নাজির ৬০-৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি মানের পাইজাম লতা গড়ে ৫০-৫৫ এবং স্বর্না ও চায়না ইরি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়। এছাড়া প্রতিকেজি মসুর ডাল দেশি ১০০-১২০ টাকা, মোটা নেপালী মসুর ডাল ৫০-৭০ টাকা, মুগ ডাল ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ, রসুন ও আদা আগের দামে বিক্রি হচ্ছে।
×