ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ছবির গল্প ॥ ভিন্ন দেশের পরিচয়ে পরিচিত খাবার

প্রকাশিত: ০৭:২৮, ৯ নভেম্বর ২০১৮

ছবির গল্প ॥ ভিন্ন দেশের পরিচয়ে পরিচিত খাবার

জন্মদাতা এক, অথচ পরিচিত অন্য কারও নামে! সব কিছুর মতো খাবারের ক্ষেত্রেও এ রকম রয়েছে। এ সব খাবারের জন্ম বা উৎস এক দেশে, অথচ তা পরিচিত ও জনপ্রিয় অন্যদেশের খাবার হিসেবে। চলুন সেরকম জনপ্রিয় আটটি খাবার দেখে আসা যাক... সুইডিশ মিটবল! ইকেয়া রেস্তোরাঁ সারা দুনিয়ায় সুইডিশ মিটবলকে জনপ্রিয় করে তুলেছে। সুইডেন অবশ্য বলছে, এই খাবারের রেসিপি এসেছে তুরস্ক থেকে। অটোমান সা¤্রাজ্যের সময়, অর্থাৎ ১৮ শতকে, রাজা দ্বাদশ চার্লস নাকি এটি স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোতে নিয়ে এসেছিলেন। ইংলিশ মাফিন ইংলিশ মাফিন কিন্তু ইংল্যান্ড থেকে নয়, আমেরিকা থেকে এসেছে। যদিও এই বিশেষ পিঠার প্রস্তুতকারী স্যামুয়েল বাথ থমাস ১৮৭৪ সালে ইংল্যান্ড থেকে আমেরিকা পাড়ি জমিয়েছিলেন। থমাস আমেরিকায় গিয়ে এই পিঠা আবিষ্কারের পর খুব জনপ্রিয় হয়। ওভেনে নয়, তাওয়ায় তৈরি এই পিঠা দীর্ঘদিন খোদ ব্রিটেনই আমেরিকা থেকে আমদানি করেছে দীর্ঘদিন। ডোনার কাবাব সারা পৃথিবীতেই এই কাবাব এখন প্রসিদ্ধ। বলা হয়, জার্মানিতে এটি প্রথম তৈরি ও চালু হয়। কাদির নুরমান নামের বার্লিনের এক তুর্কি বাবুর্চি এটি প্রথম তৈরি করেন। যদিও অনেকেই মনে করেন কাদির এটি প্রথম তৈরি করেননি। তাতে অবশ্য কিছু যায় আসে না। কেননা ১৯৭২ সালে চালু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত জার্মানদের খাদ্য তালিকায় সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবারের এটি। ক্রোয়াসঁ ফ্রেঞ্চ বেকারিগুলোর প্রসিদ্ধ খাবার হলেও ফ্রান্সে এটি অস্ট্রিয়া থেকে নিয়ে এসেছিল সামরিক বাহিনীর এক আর্টিলারি অফিসার। অস্ট্রিয়ায় এটি ‘কিপফার্ল’ নামে পরিচিত। যদিও মজার ব্যাপার হলো, এই কিপফার্ল নামটার সঙ্গে জার্মানি অথবা তুরস্কের সংযোগ থাকতে পারে। ফাহিতাস এবং চিমিচাঙ্গাস স্প্যানিশ শব্দ ‘ফাহা’-র অর্থ বেষ্টনী। ডিশে ব্যবহৃত টুকরো টুকরো গরুর মাংসের বেষ্টনীকেই বলে ফাহিতা। বর্তমানে ম্যাক্সিকোয় জনপ্রিয় এ খাবারটির সঙ্গে পশ্চিম টেক্সাসের গবাদি পশুর খামার মালিকদের নাম জড়িয়ে আছে। এ রকম আরেকটি খাবার চিমিচাঙ্গাস আসলে কড়া মাংস ভাজি বা ‘বরিতো’, যেটি টেক্সাসের কিংবা মেক্সিকোর নয়, বরং আরিজোনায় উদ্ভাবিত একটি খাবার। বেগেল মাঝখানে ফুটো করে প্রথমে সিদ্ধ করা হয়, এবং তারপর সেঁকা হয় বেগেলকে। এটি আমেরিকার খাবার হিসেবে পরিচিত হলেও এর মূল পোলান্ডে। পোলান্ডের ইহুদীরা আমেরিকা পাড়ি দেওয়ার সময় এই খাবারটি সেখানে নিয়ে যান। ফর্চুন কুকিজ মাঝখানে গর্তওয়ালা এই বিস্কুটগুলো সারা বিশ্বের চায়নিজ রেস্তরাঁয় পাওয়া যায়। গর্তে নানা ধরনের উপদেশ বাণী আর ভবিষ্যত সংক্রান্ত দার্শনিক মন্তব্য থাকে। তবে মজার ব্যাপার হলো এটি চীনা খাবার হিসেবে সারা পৃথিবীতে পরিচিত হলেও, চীনে কিন্তু বিস্কুটে করে এই ভবিষ্যদ্বাণীর কোনো ঐতিহ্য নেই। এর জন্মও চীনে নয়, বরং আমেরিকায় জাপানী অভিবাসীরা এটি ১৯ শতকের প্রথমে বা ২০ শতকের শুরুতে চালু করেছিল। হুমুস হুমুস রেসিপি খুব সহজ। ছোলা বা মটর ডানার মতো ডাল, জলপাই তেল, লেবু, আদা আর লবণ দিয়ে এটি তৈরি করা হয়। এর আবিষ্কারের মালিকানা নিয়ে লেবানন ও ইসরাইলিদের মধ্যে তর্ক রয়েছে। তবে ভূমধ্যসাগর আর মধ্যপ্রাচ্যে এটি খুব জনপ্রিয় খাবার।
×