ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচন এক সপ্তাহ পেছানোর দাবি যুক্তফ্রন্টের

প্রকাশিত: ০৭:৫৬, ৯ নভেম্বর ২০১৮

নির্বাচন এক সপ্তাহ পেছানোর দাবি যুক্তফ্রন্টের

বিডিনিউজ ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের দিন এক সপ্তাহ পেছানোর দাবি জানিয়েছে বিকল্প ধারা সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্ট। বৃহস্পতিবার তফসিল ঘোষণার পর এক বিবৃতিতে ভোটের দিন ২৩ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ৩০ ডিসেম্বর করার দাবি জানান বি চৌধুরী। একই সঙ্গে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার তারিখ এক সপ্তাহ পিছিয়ে ১৯ নবেম্বরের পরিবর্তে ২৬ নবেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ২২ নবেম্বরের পরিবর্তে ২৯ নবেম্বর এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার ২৯ নবেম্বরের পরিবর্তে ৬ ডিসেম্বর করার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। বিবৃতিতে বি চৌধুরী বলেন, ‘তফসিল ঘোষণাকে আমরা গভীর অভিনিবেশসহকারে পর্যবেক্ষণ করছি। কিন্তু সার্বিক বিবেচনায় মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় অত্যন্ত কম মনে হয়।’ ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র গ্রহণ, যাচাই-বাছাই, সাক্ষাতকার গ্রহণ ইত্যাদি ব্যবস্থা গ্রহণ ‘কঠিন হবে’ বলে মন্তব্য করেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি। নির্বাচনের প্রতিটি পদক্ষেপ জনস্বার্থে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বি চৌধুরী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের ১ ডিসেম্বর হতে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচন পর্যবেক্ষক এবং পরবর্তী সাতদিন কোন ঘটনা হয় কি না এবং নির্বাচনের বিষয়ে সরকার ও রাজনৈতিক দলসমূহের মতামত অনুসারে ওইসব স্থানে যাওয়ার ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’ লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রতিষ্ঠার ওয়াদা বরখেলাপ করেছে সরকার- বি. চৌধুরী॥ যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান ও বিকল্প ধারা, বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, সাতক্ষীরার জনসভায় যাওয়ার জন্য যুক্তফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ ও মিডিয়া কর্মীদের জন্য নির্ধারিত হেলিকপ্টার উড়তে না দেয়ায় তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরায় যুক্তফ্রন্টের উদ্যোগে জনসভা করার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছিল। বিকল্প ধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য সাতক্ষীরায় আমাদের সম্ভাব্য প্রার্থী গোলাম রেজা যুক্তফ্রন্টের উদ্যোগে এই জনসভার আয়োজন করেছিলেন। বিবৃতিতে বি. চৌধুরী বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে আমাদের নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকদের যে হেলিকপ্টারে করে ঢাকা থেকে সাতক্ষীরা যাওয়ার কথা ছিল সেটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড়তে দেয়া হয়নি । তিনি বলেন, যুক্তফ্রন্টের এই জনসভা নিয়ে সাতক্ষীরার মানুষের বিপুল উৎসাহ- উদ্দীপনা ছিল এব্ং তারা জনসভা সফল করার জন্য এগিয়ে এসেছিলেন। যুক্তফ্রন্টের উদ্যোগে ঢাকার বাইরে মফস্বল অঞ্চলে এটাই ছিল বিশাল গণসংযোগ এবং প্রথম জনসভা। সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তফ্রন্টের সংলাপে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রতিষ্ঠার স্বার্থে আমাদের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। দেশের যেকোন জায়গায় বিরোধী দল হিসেবে আমরা গণসংযোগ বা সভা-সমাবেশ করতে পারব। এসব কর্মসূচীতে সরকার কোন অবস্থাতেই বাধা দেবে না। প্রয়োজনে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বাধা দেয়ার কারণে আমরা সাতক্ষীরায় যেতে পারিনি। এতে নেতারা যেমন ক্ষুব্ধ হয়েছেন। আমাদের কর্মীরাও কষ্ট পেয়েছেন। আমরা কখনই ভাবিনি সরকার এমন কাজটা করতে পারে। বিশ্বাস ছিল সরকার কোন রাজনৈতিক কর্মসূচীতে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। আমরা যদি কর্মসূচীতে যোগ দিতাম তাহলে সরকারের কিইবা ক্ষতি হতো। তাছাড়া এটা তো কোন গোপন বৈঠক ছিল না; যেখানে সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্র হতে পারত। যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান বলেন, এটা নিশ্চিত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সরকার এই জনসভা বন্ধ করার ব্যবস্থা করেছে। আমরা সরকারের এই গণতন্ত্রবিরোধী পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতির পরিষ্কার বরখেলাপ। বি. চৌধুরী বলেন, আমরা মনে করি, এই ওয়াদা ভঙ্গ সরকারের সদিচ্ছা বহন করে না। কোনক্রমেই ভবিষ্যতে এ ধরনের আচরণ গ্রহণযোগ্য হবে না এবং এ ধরনের ঘটনা হলে আমরা নিশ্চিতভাবে বিকল্প পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হব। সরকারের সঙ্গে সংলাপের ধারাবাহিকতায় বিকল্প ধারার নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টও অংশ নেয়। সেখানে মুক্ত পরিবেশে বিরোধী দলগুলোর প্রচারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন কোন রকম সমস্যা না হওয়ার। তাই যুক্তফ্রন্টের পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়ারও ঘোষণা এসেছিল।
×