ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পদত্যাগী-বহিষ্কৃত ‘সংস্কারপন্থিদের’ দলে ফেরাল বিএনপি

প্রকাশিত: ২১:৩৪, ১২ নভেম্বর ২০১৮

পদত্যাগী-বহিষ্কৃত ‘সংস্কারপন্থিদের’ দলে ফেরাল বিএনপি

অনলাইন রিপোর্টার ॥ একাদশ নির্বাচন সামনে রেখে এগারো বছর আগে ‘ওয়ান-ইলেভেনের’ সময়ে ‘সংস্কারপন্থি’ হিসেবে পরিচিত তিনজনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেছে বিএনপি। একই সঙ্গে দলের নেতৃত্বে বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখার জন্য বহিষ্কৃত স্থায়ী কমিটির সদস্য চৌধুরী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীর বহিষ্কারাদেশও আদেশ তুলে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি চাঁদপুর-২ আসনের সাবেক সাংসদ এসএ সুলতান, যিনি সংস্কারপন্থি হিসেবে দল থেকে পদত্যাগ করেছিলেন, তার সদস্যপদও ফিরিয়ে দিয়েছে দলে। দুপুরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে দলের এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, “দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে আবেদনের প্রেক্ষিতে তার নিদের্শক্রমে দলের যারা ইতিপূর্বে অব্যহতিপ্রাপ্ত ছিলেন এবং বহিষ্কার হয়েছিলেন তাদের অব্যহতি ও বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। “এরা হলেন সাবেক স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী চৌধুরী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী (গাজীপুর), সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও দলের সাবেক শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আলমগীর কবির (নওগাঁ), সাবেক হুইপ দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু ইউসুফ মো. খলিলুর রহমান (জয়পুরহাট) ও সাবেক হুইপ ও রেড ক্রিসেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল হক জামাল (বরিশাল)।” তিনি আরো বলেন, “দল থেকে পদত্যাগ করা চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাবেক সাংসদ এসএ সুলতান টিটুর সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তিরও বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।” ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে দুই নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে নিজ নিজ দলের নেতৃত্ব থেকে সরানোর চেষ্টা হয়েছিল। তখন তৎকালীন বিএনপি মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূইঁয়ার নেতৃত্বে একদল দলে সংস্কারের দাবি তুলেছিল। তখন গ্রেফতার হওয়ার আগে মহাসচিব মান্নান ভূঁইয়া, তৎকালীন যুগ্ম মহাসচিব আশরাফ হোসেন, তৎকালীন দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে বহিষ্কার করে যান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। খালেদা বন্দি অবস্থায় তখন দুটি ধারায় বিএনপি চলছিল; তবে খালেদা জিয়া মুক্তি পাওয়ার পর সংস্কারপন্থিরা চুপসে যান, তাদের কাউকে কাউকে দলে ফেরানো হলেও অনেকে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। কয়েকজনকে বহিষ্কার করা হয়। তখন যারা বহিষ্কৃত হয়েছিলেন কিংবা অন্য দলে চলে গিয়েছিলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তাদের দলে ফেরাতে সম্প্রতি উদ্যোগী হয় বিএনপি। এর অংশ হিসেবে গত ২৫ অক্টোবর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাবেক ১১ জন সাংসদকে নিয়ে বৈঠক করেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর আগে সাবেক ছাত্রনেতা বরিশালের জহিরউদ্দিন স্বপন ও নরসিংদীর সর্দার সাখাওয়াত হোসেন বকুলকে খালেদা জিয়া নিজ কার্যালয়ে ডেকে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এদিকে দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক বেলাল আহমেদের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার সাবেক সভাপতি এনামুল করিম অটল, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার সাবেক সভাপতি আবদুল মান্নান, ফেনীর সোনাগাজীর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিব উল্লাহ পারভেজের বহিষ্কারাদেশ গঠনতন্ত্রের ৫ ধারা অনুযায়ী প্রত্যাহার করেছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
×