ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ১৩ নভেম্বর ২০১৮

ঢাকার দিনরাত

ঢাকায় কি আনুষ্ঠানিকভাবে শীত নেমে গেল? গত সপ্তাহে সোমবার সন্ধ্যায় বেশ ভালই বৃষ্টি হলো। রাস্তায় রীতিমতো পানি জমে গেল। কেউ কেউ বলতে লাগলেন এই বৃষ্টিই শীত নামাবে। এর দুদিন পর সকালে আমাদের এক কবিবন্ধু তার প্রতিক্রিয়া জানালেন এইভাবেÑ ‘আজকের ভোর যারা দেখেননি, মিস করলেন। কী মায়াবী! কী স্নিগ্ধ! হিমের কী দারুণ সুবাস! ঢাকায় আজ আনুষ্ঠানিকভাবে শীত নেমেছে।’ আগেই শীতের সুসংবাদ পেয়েছি। অবশ্য বহুজনের কাছে এটি আদৌ কোন খবরই নয়। কিন্তু যারা পশুপাখি ভালবাসেন, বাসায় পোষেন, তাদের জন্য উপকারী এক খবরই বটে। টিচিং এ্যান্ড ট্রেনিং পেট হসপিটাল ও রিসার্চ সেন্টার (পেট হসপিটাল) নির্মাণের উদ্যোগটি দেশের পোষ্যপ্রেমীদের জন্য আনন্দের ঘটনা। ঢাকা শহরে পোষ্য কুকুর, বিড়াল, খরগোশ পাখিসহ পোষা প্রাণীর সংখ্যা প্রায় ৫ লাখ। সম্প্রতি দেশে প্রথমবারের মতো নির্মিত হয়েছে পেট হাসপাতাল। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে ঢাকার পূর্বাচলে ২২ কাঠা জমির ওপর স্থাপিত ‘টিচিং এ্যান্ড ট্রেনিং পেট হসপিটাল এ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার’ নামে এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ভেটেরিনারি শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে আন্তর্জাতিক মানের দক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরির মাধ্যমে বিদেশে দক্ষ জনশক্তি রফতানিতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি করবে ব্যতিক্রমী এই প্রতিষ্ঠান। সুতরাং এবার অসুখে পড়িলে এখানে চিকিৎসা পাবে কুকুর, বিড়াল, খরগোশ। সেইসঙ্গে বিভিন্ন প্রজাতির পাখিও। বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) ২০১৮-১৯ সালের বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসের জন্য থিম নির্ধারণ করেছে- ‘পরিবার এবং ডায়াবেটিস’। চলতি বছরের বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসের ক্যাম্পেইনে ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনা, যতœ, প্রতিরোধ এবং এ সংক্রান্ত শিক্ষা বিষয়ে পরিবারের ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। প্রতিদিন ডায়াবেটিস রোগীর জন্য ইনসুলিন কেনা ও রোগ মনিটর করা একটি পরিবারের জন্য বেশ ব্যয়বহুল বিষয়। তাই পরিবারের অন্যান্য সদস্যেদের ডায়াবেটিস প্রতিরোধে জ্ঞানার্জন জরুরী বিষয় বলে বিবেচিত হচ্ছে। স্মরণ করা যেতে পারে, ডায়াবেটিস বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ^ ডায়াবেটিস দিবস (১৪ নবেম্বর) বহাল থাকতেও বিশ^ স্বাস্থ্য দিবসের প্রতিপাদ্য হিসেবে দু’বছর আগে বেছে নেয়া হয়েছিল ডায়াবেটিসকেই। এ থেকে সহজেই বুঝে ওঠা যায় যে বিশ^ব্যাপী ডায়াবেটিস রোগকে কতটা গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। আইডিএফ-এর সর্বশেষ সমীক্ষা থেকে জানা যায়, বিশ্বে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বর্তমানে ৪২৫ মিলিয়ন, অর্থাৎ ৪২ কোটিরও বেশি। তবে শঙ্কার বিষয় হলো প্রতি দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে একজন এখনও জানতে পারছেন না যে, তার ডায়াবেটিস রয়েছে। রোগ শনাক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ। অশনাক্ত থাকলে ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস হলো বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি ক্যাম্পেইন, যা প্রতিবছর ১৪ নবেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস রোগ ব্যাপকহারে বেড়ে যাওয়ায়, বিশ্ব ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৯৯১ সাল-এ ১৪ নবেম্বরকে ডায়াবেটিস দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এদিন বিজ্ঞানী ফ্রেডরিক বেনটিং জন্ম নিয়েছিলেন এবং তিনি বিজ্ঞানী চার্লস বেস্টের সঙ্গে একত্রে ইনসুলিন আবিষ্কার করেছিলেন। ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য হলিস্টিক পদ্ধতি এখন বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। হলিস্টিক পদ্ধতি হলো আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রাচীন প্রাকৃতিক পদ্ধতির আশ্চর্য সমন্বয়। এই চিকিৎসার মূল চাবিকাঠি দুটি। স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস এবং ব্যায়াম। রোগীর বয়স এবং রোগের ধরন এবং তার বর্তমান অবস্থার ওপরই নির্ভর করে তার প্রতিদিনের খাদ্যগ্রহণ। পুষ্টিকর ও পরিমিত আহার তাকে ফিট রাখে। আর ব্যায়ামের ব্যাপারটি বিবিধ। তার আগে মন নিয়ন্ত্রণের জন্য চাই সঠিক উপায়ে মেডিটেশন। মানসিক চাপই মানুষের অসুখ ও অশান্তির মূল কারণ। মানসিক চাপ কমানোর বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিগত প্রায় এক দশক যাবত হলিস্টিক হেলথ কেয়ার সেন্টার হলিস্টিক চিকিৎসায় দেশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে হাজার হাজার ডায়াবেটিস রোগীর জীবনে সুবাতাস বয়ে এনেছে। এর ফলে একদিকে যেমন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে আসছে, অন্যদিকে তেমনি দীর্ঘদিনের ডায়াবেটিস রোগীদের জীবনে স্বস্তি নেমে এসেছে। বহু রোগী ইনসুলিনের মাত্রা কমিয়ে চমৎকার জীবন যাপন করছেন। বাংলাদেশের ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য হলিস্টিক চিকিৎসা উপকারী বন্ধুর মতো কাজ করছে। সম্প্রতি বাংলাদেশে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ডায়াবেটিস পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের কৌশল সংক্রান্ত সফল কর্মশালা নিয়মিতভাবে পরিচালিত হয়ে চলেছে। এ কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী বহু রোগী ক্ষেত্রবিশেষে সম্পূর্ণরূপে ইনসুলিন ত্যাগের মাধ্যমে ডায়াবেটিস মোকাবেলার এক অনন্য অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। ঢাকা নগর জাদুঘর ঢাকা নগর জাদুঘর দেখতে প্রায় কেউ যায় না। এমন একটি খবর কাগজে পড়ে মনটা খারাপ হয়ে যায়। ঢাকাবাসী ঢাকার ইতিহাস-ঐতিহ্য বিষয়ে উদাসীন থাকবেন, পৌর কর্তৃপক্ষও এদিকে সুনজর দেবেন নাÑ এটা কোন কাজের কথা হতে পারে না। প্রতিবেদনে বলা হয়েছেÑ প্রতিদিন গড়ে চারজন দর্শনার্থী ঘুরতে যায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ভবনের নগর জাদুঘরে। কোন কোন দিন একজন দর্শনার্থীও যায় না পুরনো ঢাকার ইতিহাস এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য নিয়ে সাজানো এ জাদুঘরটিতে। দর্শনার্থীদের কাছে টিকিট বিক্রি করে জাদুঘরটি দৈনিক আয় করে আট টাকা। অথচ এ জাদুঘরটি রক্ষণাবেক্ষণে রয়েছেন তিনজন কর্মচারী। দর্শনার্থীদের অভিযোগ, জাদুঘরটিতে পর্যাপ্ত দর্শনীয় বস্তুর সংগ্রহ যেমন নেই, একইভাবে নেই প্রচার-প্রচারণাও। ফলে জাদুঘরটির এই করুণ দশা। জাদুঘরটির উন্নয়নে ১৯৯৬ সালের পর বহুবার মেয়র ও কর্মকর্তাদের কাছে প্রস্তাব দিয়েও কোন ফল পায়নি ট্রাস্টি বোর্ড। হাতে গোনা কিছু সংগ্রহ নিয়ে যাত্রা শুরু করা জাদুঘরটির বয়স ২২ বছর পার হলেও এর আধুনিকায়নে কোন উদ্যোগ নেয়নি সিটি করপোরেশন। ফলে প্রতিদিন হাজারো মানুষ নানা কাজে নগর ভবনে গেলেও কারও মধ্যে আগ্রহ জাগায় না জাদুঘরটি দেখার। দুই টাকায় টিকিট কেটে কেউ আগ্রহ নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলেও ফিরে আসে বিরক্তি নিয়ে। এটিএম বিড়ম্বনা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই লিখছি। টাকা তোলার জন্য আমার বাসার কাছাকাছি দুটি এটিএম বুথেই যাই। এই দুটি ভিন্ন ব্যাংক যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে। অথচ একসঙ্গে দুটো বুথই সক্রিয় এমনটা বেশির ভাগ সময়ে দেখি না। জানি না গোটা ঢাকার কী অবস্থা। আমার মতো বহুজনই এমন সমস্যায় হয়তো পড়েন, বিরক্ত হন, কিন্তু কোথায় সেই বিরক্তি জানাবেন? প্রতিকারই বা পাবেন কিভাবে। এটি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোরই দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তফসিলি ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো সার্কুলারে অটোমেটেড টেলার মেশিন (এটিএম) বুথের ক্ষেত্রে বলা হয়েছেÑ সার্বক্ষণিক এটিএম সেবা নিশ্চিত করতে হবে; এটিএম বুথে কোন ধরনের কারিগরি ত্রুটি দেখা দিলে দ্রুততম সময়ে সমাধান করতে হবে; পর্যাপ্ত টাকা সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে; বুথে সার্বক্ষণিক পাহারাদারদের সতর্ক অবস্থানসহ অন্যান্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। নাগরিক স্বার্থে এখানে কিছু কথা বলতে হচ্ছে। ব্যাংকে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা তোলার চল এখন প্রায় উঠেই গিয়েছে। এখন বেশির ভাগ মানুষই এটিএম থেকে টাকা তোলেন। এটিএম থেকে ২৪ ঘণ্টা টাকা তোলার সুবিধা পায় গ্রাহকরা। এটিএম ব্যবহার যেমন মানুষের মধ্যে বেড়েই চলেছে, তেমনই পাল্লা দিয়ে এটিএম ফ্রডও বেড়ে চলেছে। কিন্তু একটু সাবধান থাকলে সহজেই নিজের ব্যাংক এ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখা যাবে। ডেবিট কার্ড ব্যবহার করার জন্য এটিএম কার্ডের পিন নম্বর অত্যন্ত জরুরী। পিন নম্বর যে কোন ক্যামেরার মাধ্যমে ট্র্যাক করা সম্ভব। তাই এবার থেকে পিন নম্বর দেয়ার সময় অন্য হাত দিয়ে ঢেকে রাখুন যাতে কোন ক্যামেরায় তা দেখা না যায়। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে বিভিন্ন ব্যাংকের সাড়ে নয় হাজার এটিএম বুথ রয়েছে। এসব বুথ থেকে টাকা উত্তোলনে বিভিন্ন ব্যাংক ইস্যু করেছে ৮০ লাখ ৮৫ হাজার ৮৩৪টি ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড। সবচেয়ে বেশি বুথ রয়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের, সাড়ে চার হাজার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এটিএম ইসলামী ব্যাংকের, তৃতীয় অবস্থানে ব্র্যাক ব্যাংক। ঢাকা লিট ফেস্ট ২০১৮ মুভি মান্টো ছিল ঢাকা লিট ফেস্টের অন্যতম আকর্ষণ। এটি নিয়ে লেখক আহমাদ মোস্তফা কামাল ফেসবুকে লিখেছেনÑ ‘ঢাকা লিট ফেস্টে আজকে বিকেলে দেখানো হলো ‘মান্টো’। সাদাত হাসান মান্টোর জীবনের চারটে বছর (১৯৪৬-১৯৫০) নিয়ে এই সিনেমা পরিচালনা করেছেন নন্দিতা দাস। এই চার বছর খুব জটিল সময় ছিল। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা, দেশভাগ, মান্টোর বম্বে থেকে লাহোর চলে যাওয়া, সেখানকার জীবনসংগ্রাম, গল্প লিখে মামলার মুখোমুখি হওয়া, পারিবারিক জীবনে অস্থিরতা, নিজের অসুস্থ হয়ে পড়া - আরও কত কি! কেন যে বম্বে থেকে লাহোর গিয়েছিলেন তিনি, পরিষ্কার নয় তা, যদিও সিনেমায় একটা ব্যাখ্যা দেবার চেষ্টা করা হয়েছে। মাত্র ৪২ বছর বয়সেই জীবনেই জীবনাবসান ঘটেছিল মান্টোর। দেশভাগের ক্ষতই কি তার কারণ? সিনেমার পর ছিল নন্দিতা দাসের সঙ্গে আলাপচারিতা। দুর্দান্ত ছিল তাঁর কথাগুলো। ছবিটা দেখে ভাল লেগেছে। লেখকদের জীবন নিয়ে তো সচরাচর সিনেমা হয় না! কেন হয় না তার ব্যাখ্যায় নন্দিতা বলছিলেন : কারণ, লেখকদের মাথার ভেতরে ঢোকা যায় না, তাদের চিন্তাপ্রক্রিয়ার সঙ্গে আমাদের পরিচয় ঘটে না।’ ছবিটা দেখে আমার মনে হচ্ছিল- আমাদের বটু ভাই, মানে মাহমুদুল হককে নিয়ে এরকম একটা ছবি হতে পারতো। তাঁর জীবনও তো দেশভাগের ঘটনায় ক্ষতবিক্ষত। কী কারণে জানি না, ‘মান্টো’ দেখতে দেখতে বটু ভাইয়ের জন্য খুব মায়াও হচ্ছিল আমার। তিনিও তো লেখালেখি ছেড়ে দিয়ে স্বেচ্ছানির্বাসন বেছে নিয়েছিলেন ৪২ বছর বয়সে! এ দেশে কে নির্মাণ করবেন এমন একটা ছবি?’ ঢাকা লিট ফেস্টের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে জনকণ্ঠ অফিসের কাজ শেষে বাংলা একাডেমি গিয়ে দেখি সব অনুষ্ঠানই শেষ। একাডেমির মূল মিলনায়তনে ‘মান্টো’ ছবির পরিচালক নন্দিতা দাস ছবির দর্শকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন। অনুষ্ঠানসূচী হাতে নিয়ে দেখলাম সকাল ১০টায় শুরু হয়েছে উৎসব। তিন দিনব্যাপী লিট ফেস্টের বাকি দুদিনও বেশ সকাল সকাল শুরু হবে। দিনব্যাপী অনেক সেশন। বেশ জমজমাট অবস্থা। ভাল লাগল এর আয়োজনে পরিপাটিভাব দেখে। গোটা একাডেমি চত্বরই উৎসব সাজে সেজেছে। প্রচুর বইয়ের স্টল। খাবারের দোকানও অনেক। তরুণ-তরুণীরা হাসিমুখে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, আড্ডা জমাচ্ছেন। খাবারের দোকানগুলোর সামনে চেয়ার খালি নেই, গোল হয়ে আড্ডা দিচ্ছেন নানা বয়সী মানুষ। আমার এক বন্ধু কফি পানের সময় মোবাইলে ডেকে নিলেন তার পুত্রকে। পুত্রটি অনার্স শেষে কিছুটা অলস সময় কাটাচ্ছিল। এই লিট ফেস্টের সুবাদে গত একমাস রীতিমতো আয়োজক অফিসে বসে নানামুখী কাজে ব্যস্ত থেকেছে। তার কোমরে গোঁজা ওয়াকিটকি দেখলাম। জানলাম, লিট ফেস্টের কর্মীরা নিজেদের মধ্যে কাজের সমন্বয় করছেন এই যোগাযোগ যন্ত্রের মাধ্যমে। আমাদের কাছাকাছি এক তরুণী সারাক্ষণই ইংরেজীতে কথা বলছেন তার বন্ধুটির সঙ্গে। ভারি সুন্দর করে পরেছেন শাড়ি। ইংরেজী মাধ্যমে পড়ুয়ারা ইংরেজীতে কথা বলতে স্বস্তি বোধ করে সহপাঠী বন্ধুদের মধ্যে। কিন্তু দেশীয় সংস্কৃতিও তারা যে বিসর্জন দেয়নি, এমন দৃষ্টিান্ত সুপ্রচুর। অবশ্য আমাদের মধ্যে বাঁকা চোখে দেখার লোকেরও অভাব নেই। ইংরেজী পড়তে যারা অভ্যস্ত, যারা ইংরেজীতে লিখতে চায় বা নিজেকে প্রকাশ করতে চায়, তাদের জন্যে এই লিট ফেস্ট এক উপকারী প্ল্যাটফর্ম। ধীরে ধীরে এই উৎসব আরও গোছালো হয়ে উঠছে। আগের তুলনায় লিট ফেস্টে বাংলা ভাষায় সাহিত্য চর্চাকারীদের সংযুক্তিও বেড়েছে। ৯ নবেম্বর ২০১৮ [email protected]
×