ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

গণতন্ত্র ও উন্নয়ন

প্রকাশিত: ০৩:৪৯, ১৩ নভেম্বর ২০১৮

গণতন্ত্র ও উন্নয়ন

সুস্থ ও স্বাভাবিক পথে গণতন্ত্রের অব্যাহত যাত্রা উন্নয়নের প্রধানতম শক্তি। নিজের সঙ্গে দেশের নিরবচ্ছিন্ন সমৃদ্ধির গতিতে ব্যক্তিক স্বাধীনতা যেমন অপরিহার্য, একইভাবে আর্থ-সামাজিক মুক্ত পরিবেশও নিয়ামক ভূমিকা রাখে। আর সে কারণেই গণতন্ত্রের সুস্থ পরিচর্যায় দেশ ও মানুষের প্রতিদিনের জীবনযাত্রা যে মাত্রায় প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে, সেখানে দেশের প্রচলিত শাসন ব্যবস্থার গুরুত্ব সব থেকে বেশি। নির্বাচিত সরকার তার সমস্ত দায়বদ্ধতা যথার্থ প্রয়োগে ব্যর্থ হলে দেশ কোনভাবেই এগিয়ে যায় না। বাংলাদেশের বর্তমান সমাজ ব্যবস্থাকে স্পষ্টভাবে আলোকপাত করতে গেলে বোঝা যায়, অগ্রযাত্রার নিরন্তর গতিকে স্পর্শ করতে গিয়ে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে প্রাধান্য দেয়াই ছিল বর্তমান সরকারের অন্যতম কর্মপরিকল্পনা। সেভাবেই গত দশ বছরের প্রাপ্তি আজকের বাংলাদেশ, যা অনন্য উচ্চতায় আন্তর্জাতিক বিশ্বেও অংশীদারিত্ব বজায় রেখে চলেছে। নিয়মতান্ত্রিক গণতন্ত্র যে কোন সুস্থ আবহের অনুষঙ্গ হয়, প্রতিপক্ষ নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনচেতা মনোবৃত্তিতে যেভাবে নিজের পর্বতপ্রমাণ ব্যক্তিত্বকে ক্রমাগত শাণিত করেছেন, একই ধারায় সমগ্র জনতাকে তার অনুবর্তী করতে দ্বিধা করেননি। নিজের স্বাধীনতা এবং অধিকার প্রয়োগে প্রত্যেক মানুষকে সুসংহত করতে তাঁর অভাবনীয় নেতৃত্বের কোন তুলনা নেই। আগত নির্বাচনকেও সেই ধারায় চালিত করে গণতন্ত্রের বিজয় রথকে নিরন্তর এগিয়ে দেবেন তিনি, এটাই তো স্বাভাবিক। দেশের সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে যে উন্নয়ন অভিযাত্রা বেগবান করে যাচ্ছেন গণতন্ত্রকে সমুন্নত রেখে, তাকে আরও যথার্থ পরিণতির দিকে নিয়ে যাবেন, সেই প্রত্যাশাও এখন সুস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। সুশৃঙ্খল সংলাপের শুভযাত্রার মাধ্যমে আলাপ-আলোচনার যে পথ তিনি সুগম করেছেন, সেখান থেকে বের হয়ে আসার বিকল্প কোন রাস্তা কারও সামনে খোলা নেই। সর্বমানুষের ভোটের অধিকারকে সম্মান দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণই সর্বোত্তম বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক জোট এবং দলের সঙ্গে বসে খোলামেলা মতবিনিময়ে নির্বাচনকে সুস্থ ধারায় এগিয়ে নিতে তাঁর দৃঢ়তাকে আরও একবার প্রমাণ দিলেন। শুধু তাই নয়, সাংবিধানিক বিধিনিষেধকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে যে রূপরেখা তিনি সবার সামনে তুলে ধরলেন, সেখানে কোন কিছু নিয়ে মতদ্বৈধতার সুযোগ ছিল না। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপ শেষে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নির্বাচনবিরোধী কোন কথা বলতে পারেননি। বিধি ও নিয়মানুক্রমে তফসিল ঘোষণার পরও কারও কোন উচ্চবাচ্য সেভাবে প্রতিভাত হয়নি। অর্থাৎ, প্রধানমন্ত্রীর অনমনীয় ব্যক্তিত্বই শুধু নয়, সাংবিধানিক ধারার প্রতি তাঁর দৃঢ় আস্থা, সঙ্গে গণতন্ত্রের পরিশীলিত পরিচর্যায় তিনি সমস্ত রাজনৈতিক শক্তিকে নির্বাচন অভিমুখী হতে যে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখলেন, তা অন্য সকলের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল। বিএনপিকে নিয়ে সংগঠিত ঐক্যফ্রন্ট বরঞ্চ তাদের কর্মসূচীকে রদবদল করে একটি নির্ধারিত মতৈক্যে পৌঁছতে কালক্ষেপণ করেছে। রাজশাহী অভিমুখে পদযাত্রাকে বাতিল করে বিভাগীয় শহরটিতে জনসভার আয়োজন করে। আর সেখানে প্রথমদিককার ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ড. কামাল হোসেন অসুস্থতার কারণে উপস্থিতও হতে পারলেন না। শুধু তাই নয়, একবার ২০ দলীয় জোট কিংবা পরেরবার ঐক্যফ্রন্টের আলাপ-আলোচনা অব্যাহত থাকার পর শেষ অবধি নির্বাচনে যুক্ত হওয়ার আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করা হলো। আগেরবারের মতো এবারও যদি বিএনপি নির্বাচন থেকে ছিটকে পড়ত, তাহলে দল হিসেবে তাদের অস্তিত্ব সঙ্কটের আবর্তে পড়তে সময় নিত না। যাক, শেষ মুহূর্তে হলেও তাদের বোধোদয় এবং সুমতির প্রকাশ ঘটেছে। জনগণের পূর্ণাঙ্গ রায়ের ওপর বিশ্বাস এবং আস্থা রেখে সবাইকে গণতন্ত্রের সুস্থ ধারায় রাজনীতির চর্চা করা ছাড়া অন্য পথে এগুলে দেশের মানুষই তার যথার্থ জবাব দিয়ে দিত। জন্মগতভাবে প্রত্যেক মানুষই স্বাধীন এবং অধিকার সচেতন। আর একটি মুক্ত সার্বভৌম দেশ জনগণকে তার নাগরিক এবং মৌলিক অধিকার দিয়ে নতুন প্রজন্মকে যোগ্যতার মাপকাঠিতে তৈরি করতে সব ধরনের কর্ম প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে। গত দশ বছরে বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ সেই সুযোগ-সুবিধা অর্জনে নিজেকেই তৈরি করছে নাÑ পুরো জাতিকেও নবতর অভিযাত্রায় অবিচ্ছেদ্য করে যাচ্ছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মাত্র দশ বছরের ব্যবধানে আমাদের উন্নয়নশীল কাতারে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে বহু কাঠখড় অতিক্রম করতে হয়েছে। ২০১৪ সালের জানুয়ারির নির্বাচনের সময় দেশকে ঠেলে দেয়া হয় অগ্নিসন্ত্রাসের দিকে। সেই ভয়াবহ চিত্র আজও জনগণকে আতঙ্কিত করে তোলে। শুধুই কি তাই? সে সময়ের আগুনে পোড়ানোর ক্ষতচিহ্ন নিয়ে আজও যারা দুর্বিষহ জীবন অতিক্রম করছেন, তাদের দায়ভাগ তো হামলাকারীরা নিতে পারেনি। আইনগতভাবে মামলা হলেও বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতায় সবাইকে এখনও শাস্তির আওতায় আনা যায়নি। আর হাত-পা হারানো বেঁচে যাওয়া দগ্ধ মানুষরা নিজেদের সুস্থতার বিনিময়ে যে জঘন্য পাশবিকতার শিকার হয়েছে, তার যথার্থ মূল্য যে কিসের মধ্য দিয়ে আসবে সেটাও কারও জানা নেই। তবে স্বস্তি এটুকুই যে, এবারের নির্বাচন সেই অমানবিক সহিংসতা পর্যন্ত নিশ্চয়ই গড়াবে না। বিরোধী শক্তির শুভবুদ্ধির উদয় দেশকে মহাসঙ্কট থেকে বের করে সুস্থ ধারায় নির্বাচনকে পরিচালিত করবেÑ এই প্রত্যাশায় জনগণ ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে ব্যাপক উৎসাহ- উদ্দীপনায় মেতে উঠছে। সারা বাংলাদেশ আজ ভোটের আনন্দে বিহ্বল। নিজেদের প্রাপ্ত রায়টুকু প্রদান করে পছন্দের প্রার্থীকে সংসদে পাঠাতে জনগণ সম্মিলিত আয়োজনে মুখরিত। আর এই নির্বাচনের যাত্রাপথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে ধৈর্য, সাহস, সংবিধান সমুন্নত রাখার প্রত্যয়ই শুধু নয়, তার চেয়েও বেশি জনগণের ন্যায্য অধিকারকে সম্মান করে রায়কে সুনিশ্চিত করারও দীপ্ত অঙ্গীকার। নির্বাচনকে অর্থবহ, গ্রহণযোগ্য এবং অবাধ ও মুক্ত করতে যা যা করণীয় সরকারপ্রধান হিসেবে সবটাই করে যেতে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। নির্বাচনের মূল দায়িত্বে থাকে নির্বাচন কমিশন। প্রচলিত শাসন ব্যবস্থা প্রয়োজনমাফিক সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা দিয়ে যায়। বিভিন্ন রাজনৈতিক শক্তিকে অধিকারের মাত্রা বিবেচনায় নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত আইনবিধিকে যথাযর্থভাবে অনুসরণ করে যেতে হয়। এর অন্যথা হলে কমিশনই তার আওতাধীন কার্যক্ষমতা প্রয়োগ করে। এখানেও সরকারের প্রতিপক্ষ গোষ্ঠী হরেকরকম অরাজকতা তৈরি করে সুষ্ঠু নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে অপশক্তি প্রয়োগে পিছপা হয় না। সুতরাং বর্তমান সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকে আরও সংহতই শুধু নয়, সতর্ক এবং সাবধান হয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতির সর্বক্ষণিক মনিটরিংও করতে হয়। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নির্বাচন কমিশনকে অনেক ধরনের অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনার বিপাকে পড়তে হয়। তাকে সর্বাত্মক ব্যবস্থায় সামাল দিয়ে যথার্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এক ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে যায়। পরিস্থিতি মোকাবেলা করা যেমন নির্বাচন কমিশনের দায়বদ্ধতা, পাশাপাশি অংশগ্রহণকারী দল ও প্রত্যক্ষ ভোটারও এই ব্যাপারে সচেতন দৃষ্টিভঙ্গি নিবদ্ধ করলে পরিবেশ অনেকটা সহনীয় পর্যায়ে চলে আসতে দেরি হয় না। তবে প্রত্যেকের আশা থাকবে, যেন কোন ধরনের ষড়যন্ত্র কিংবা সহিংসতা এই আকাক্সিক্ষত নির্বাচনকে আক্রান্ত করতে না পারে। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতা, সহমর্মিতা, দলমত নির্বিশেষে উদার সহনশীলতায় নির্বাচন অবধারিত গতিতে এগিয়ে যাবে। প্রত্যাশিত ফলও জনগণ পেয়ে যাবে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন এবং সুস্থ গণতান্ত্রিক ধারাকে কোন অযৌক্তিক অজুহাতে বানচালের সুযোগ এখন আর কারও হাতে নেই। দেশের সামগ্রিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে আগত নির্বাচনের গতিময়তা আজ এক অভিন্ন সূত্রে গ্রথিত হয়ে গেছে। উন্নয়নের ধারা যেদিকে, নির্বাচনের হাওয়াও সেভাবে বয়ে যাবে, এ বিষয়ে কারও কোন দ্বিমত নেই। উন্নয়ন দশকের অবিরাম জয়রথ দেশকে যে মর্যাদায় নিয়ে গেছে, সেখানে দলমত নির্বিশেষে সবাই তার সুফল ভোগ করছে। উন্নয়নের প্রতিটি ধাপে দেশের অগ্রগামিতা বিশ্বসভায়ও স্থান করে নিতে সময় লাগেনি। কৃষিনির্ভর গ্রামীণ অর্থনীতি আজ দেশের সীমানাকে পার করে বৈশ্বিক অঙ্গনেও অভিগামিতা নিশ্চিত করেছে। আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা উৎপাদিত পণ্যের আন্তর্জাতিকীকরণে যে অভাবনীয় অবদান রেখেছে, বিশ্ব জরিপে তা বিভিন্ন প্রকাশিতও হচ্ছে। সাধারণ জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন সামগ্রিক সমৃদ্ধিতে যে অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করেছে, সেখানে পুরো দেশ আজ এক অতুলনীয় অবস্থানে। শুধু কৃষিতেই নয়, শিল্পের অব্যাহত ক্রমবিকাশ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে বিশেষ অবদান রাখছে। আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারে বাংলাদেশের নাগরিকদের উল্লেখযোগ্য সম্পৃক্ততা রেমিটেন্স আনয়নে যে সময়োপযোগী ভূমিকা রাখছে, তার পরিসংখ্যানও প্রতিনিয়ত দৃশ্যমান হচ্ছে। নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে বাংলাদেশের দৃষ্টিনন্দন সাফল্য দেশকে শুধু স্বয়ম্ভরই করছে না, বিশ্ববাজারেও তার প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। সমতাভিক্তিক অগ্রগামিতায় বাংলাদেশের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়াই শুধু উল্লেখযোগ্য নয়, বিশ্বজোড়াও এর স্থান নজরকাড়া। অর্ধাংশ নারী জাতিকে পেছনে ফেলে কোন সমাজের অগ্রযাত্রা নির্ণীত হয় না। সুতরাং, দেশ যখন ক্রমান্বয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যায় তখন বুঝতে অসুবিধা হয় না, শুধু নারী নয় সাধারণ জনগোষ্ঠীও এই অভিযাত্রায় উল্লেখযোগ্য মাত্রায় সম্পৃক্ত হচ্ছে। প্রাইমারি থেকে মাধ্যমিক শিক্ষায় ছেলেমেয়ের ফারাক এখন সেভাবে দৃশ্যমান নয়। উচ্চ শিক্ষায় ঝরে পড়ার হার লক্ষণীয় হলেও সেটা যে কোন ঐতিহ্যিক সমাজের অবধারিত গতি। অল্প বয়সে মেয়েদের যোগ্য না করে বিয়ে দেয়া শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ-এশিয়ার বিভিন্ন দেশ এমনকি বিশ্বের বহু জায়গায় এমন চিত্র এখনও দৃশ্যমান। তবে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ এমন আবর্ত থেকে এক সময় বেরিয়ে আসবে। আর সে জন্য ক্রমবর্ধমান অগ্রযাত্রাকে আরও গতিশীল পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কোন পথ খোলা নেই। সঙ্গত কারণে এমন অবারিত উন্নয়ন দশকের যথার্থ কর্ণধার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারও ক্ষমতায় আসা পুরো জাতির জন্য মঙ্গলযোগ। কারণ যার হাত দিয়ে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা থেকে আরম্ভ করে তথ্যপ্রযুক্তির নিরন্তর যোগসাজশই শুধু নয়, আধুনিক প্রজন্মকে বিশ্বসভায় স্থান দিতে সময়োপযোগী কর্মদ্যোতনা উপহার দেয়া সম্ভব হয়েছে; তাঁকে জনগণের নিরবচ্ছিন্ন সম্পৃক্ততায় আরও জোরদার করা এই মুহূর্তে সব থেকে বেশি জরুরী। সেই লক্ষ্যেই গন্তব্য নির্ধারণ করা বাঞ্ছনীয়। প্রধানমন্ত্রী মননে, কর্মযোগে সাধারণ মানুষের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নই শুধু নয় নতুন প্রজন্মের আকাক্সক্ষা, ভাবনা, বিশ্বমানের জীবন গড়ায় বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যাকে যে মাত্রায় অভিষিক্ত করায়, সেখানে তিনিই শুধু নিজেকে অতিক্রম করতে পারেন, আর কেউ নয়-অন্য কিছুও নয়। যে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নে দেশ স্বাধীন হয়েছিল, মুক্ত দেশে বঙ্গবন্ধু সামনে এগিয়ে যাবার লক্ষ্যে যেভাবে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনায় সংহত করতে গিয়ে সংহারের আবর্তে পড়লেন, সেই ’৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশ অমানিশার ঘোর অন্ধকারে ২১টা বছর ঢাকা পড়েছিল। প্রথমবার ১৯৯৬ সালে মাত্র ৫ বছরে সেই তমসাচ্ছন্ন ঘোরতর বিপর্যয় কাটানো সম্ভব হয়নি। ২০০১ থেকে ২০০৮ আবারও দেশ পেছনের দিকে ফিরে গেল। স্বাধীনতা বিরোধীদের আস্ফালন, মৌল ও জঙ্গীবাদের নগ্ন থাবাই শুধু নয় প্রকাশ্য দিবালোকে গ্রেনেড হামলার নারকীয় হত্যাকা-ের বিভীষিকায় দেশ ও জাতি এক অসুস্থ পরিবেশের শিকারে পরিণত হয়। নতুন করে সূর্যোদয়ের আলোকছটা ২০০৯ থেকে সারা বাংলাকে উদ্দীপ্ত করতে থাকে। সেখান থেকে যে অভিযাত্রা শুরু হয়, সময়ের মিছিলে তা আরও গতিময়তা পেতে দেরি হয়নি। দেশাত্মবোধের দায়বদ্ধতাই শুধু নয়, মানবিক মূল্যবোধের অতন্দ্র প্রহরী এই নিষ্ঠাবান নেত্রী দেশ ও মানুষের ক্রমাগত অগ্রযাত্রায় যে দ্যুতি বিতরণ করছেন, সেই আলোয় আজ আমরা সবাই আলোকিত। আর কোন অন্ধকারের হাতছানিতে দেশ যেন পথভ্রষ্ট না হয়, সে দায়বদ্ধতা সাধারণ মানুষের। যাদেরকে তিনি তাঁর শক্তির একমাত্র উৎস হিসেবে বিবেচনায়ই করেন না, বরং দেশের মানুষই তাঁর সর্ববিধ ক্ষমতাকে সুনিশ্চিত করবে, এই ভাবনাও প্রতিমুহূর্তে লালন করেন। লেখক : সাংবাদিক
×