ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চোখ হারানো ২০ জনকে ক্ষতিপূরণের চেক দিলো ইমপ্যাক্ট কর্তৃপক্ষ

প্রকাশিত: ২২:৪৫, ১৩ নভেম্বর ২০১৮

চোখ হারানো ২০ জনকে ক্ষতিপূরণের চেক দিলো ইমপ্যাক্ট কর্তৃপক্ষ

নিজস্ব সংবাদদাতা, চুয়াডাঙ্গা ॥ চুয়াডাঙ্গা ইমপ্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের চক্ষু শিবিরে গিয়ে চোখ হারানো ২০ জনকে ক্ষতিপূরণের সর্বমোট ১ কোটি টাকার চেক দিলো ইমপ্যাক্ট কর্তৃপক্ষ । উচ্চ আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা.খায়রুল আলম ২০ জনের হাতে ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেন। চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা.খায়রুল আলম জানান, উচ্চ আদালতে ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিটকারীর পক্ষে শুনানী শেষে গত ২১ অক্টোবর আদালত আদেশ দেয় যে, ‘ আগামী এক মাসের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা ইমপ্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টার ও অস্ত্রোপচারে ব্যবহৃত ভারতের ঔষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান আইরিশ কোম্পানীকে ৫ লাখ করে মোট ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ১৭ জনকে দিতে হবে। এছাড়া চোখ হারানো ১৭ জন ও অস্ত্রোপচারের পর সংক্রমণের শিকার আরো ৩ জন রোগী মোট ২০ জনকে আজীবন বিনামূল্যে চোখের চিকিৎসা দিতে হবে। চুয়াডাঙ্গা ইমপ্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারকে নির্দেশ দেয়া হয় যে, এই ২০ জনের চোখের চিকিৎসা ইমপ্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের বাইরে অন্য কোন হাসপাতালে হয় তাহলে কর্তৃপক্ষকে ওই ব্যয়ও বহন করতে হবে। ক্ষতিপূরণের টাকা চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জনের মাধ্যমে পরিশোধ করে সে সংক্রান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে হবে।’ চুয়াডাঙ্গা ইমপ্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক ডা. সাইফুল ইমাম জানান, একই অস্ত্রোপচারে যে ৩ জনের আংশিক ক্ষতি হয়েছে তাদেরকেও আমরা ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫ লাখ টাকা করে ১৫ লাখ টাকা দিচ্ছি। উল্লেখ্য, গত ২০১৮ সালের ৪ মার্চ চুয়াডাঙ্গা ইমপ্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের চক্ষু শিবিরে ২৪ জন নারী-পুরুষের চোখের ছানী (ফ্যাকো) কাটা হয়। ওই অস্ত্রোপচারের দায়িত্বে ছিলেন চিকিৎসক মোহাম্মদ শাহিন। অস্ত্রোপচারের পর দিন রোগীদের চোখে সংক্রমণ দেখা দিলে তাদের চোখ জ্বালাপোড়া করলে তারা ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশনে আসলে তারা বিষয়টিতে প্রথমে কোন গুরুত্ব দেয়নি। পরে ওই রোগীদের তারা একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। ওই বিশেষজ্ঞ রোগীদের দ্রুত ঢাকায় যাওয়ার পরামর্শ দেন। এরই মধ্যে ৩ জন রোগী নিজ উদ্যোগে তাদের স্বজনদের নিয়ে ঢাকায় যায়। পরে ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন থেকে ১২ মার্চ এক সঙ্গে ১৬ জন রোগীকে ঢাকায় নিয়ে যায়। দেরী হয়ে যাওয়ায় ১৯ জন রোগীর একটি করে চোখ তুলে ফেলতে হয়। আরেক নারীর বাম চোখ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ভাল হয়। তবে দ্বিতীয় দফায় অস্ত্রোপচারেও তার দৃষ্টি শক্তি ফিরে আসেনি। পরে ২৯ মার্চ জাতীয় দৈনিকে‘চক্ষু শিবিরে গিয়ে চোখ হারালেন ২০ জন !’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে সংবাদটি যুক্ত করে আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত উচ্চ আদালতে রীট আবেদন করেন।
×