ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মাদারীপুরে রাস্তায় ফেলে দেওয়া মাকে বাঁচানো গেলো না

প্রকাশিত: ০৩:০২, ১৩ নভেম্বর ২০১৮

মাদারীপুরে রাস্তায় ফেলে দেওয়া মাকে বাঁচানো গেলো না

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ॥ গভীর রাতে সন্তানদের দ্বারা রাস্তায় ফেলে দেওয়া বৃদ্ধা মাকে বাঁচানো গেলো না। এমন কি মৃত্যুর আগেও জানা যায়নি সেই মা ও তার কুলাঙ্গার সন্তানদের পরিচয়। ১৩দিন পর সোমবার গভীর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মাদারীপুর সদর হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুল ইসলাম ও পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদের তত্ত্বাবধানে ঈদগাঁ ময়দানে নামাজে জানাজা শেষে দরগাখোলা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। উল্লেখ্য, গত ৩১ অক্টোবর গভীর রাতে পৌর এলাকার শকুনী লেকেরপাড় উত্তর ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধা মা জোবেদা খাতুনকে রাস্তায় ফেলে যায় তার সন্তানেরা। পরদিন সকালে দুই শিক্ষার্থী হাঁটতে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। প্রথমে নিজের নাম আর সন্তান-বউ মিলে ফেলে রেখে যাওয়ার কথাটুকু বলতে পেরেছিলেন। তারপর থেকে তিনি আর কথা বলতে পারেনি। উদ্ধারকারী সরকারী নাজিমউদ্দিন কলেজের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী বিলাস হালদার ও মেহেদী ইসলাম বলেন, ‘সকালে লেকের পাড় দিয়ে হাঁটার সময় কেউ পড়ে আছে দেখে এগিয়ে যাই। গিয়ে দেখি হাতে-মাথায় রক্তাক্ত অবস্থায় এক বৃদ্ধা পড়ে আছেন। তাৎক্ষণিক বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে দেই। তারপরে আমরা জেলা ছাত্রলীগের নেতা পিয়াস শিকদার, নাজমুল হোসেন, মাহমুদ হাসান দিনার, শাওন আহমেদ, অমল কুন্ডসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রনেতাকে বিষয়টি জানাই। তারা হাসপাতালে গিয়ে বৃদ্ধার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। প্রথমে বৃদ্ধা নিজের নাম ও তার সন্তান-বউ মিলে মারধর করে ফেলে গেছে বলে জানাতে পারলেও পরে আর কথা বলতে পারেননি।’ মাদারীপুর সিভিল সার্জন ডা. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে আমাদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিল। শারীরিক অবস্থা পূর্বের চেয়ে কিছুটা ভালো ছিল। সোমবার দিনের বেলায় খাবারও খেয়েছেন। রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বার্ধক্য জনিত কারণে তিনি মারা যান। হাসপাতালে থাকা অবস্থায় পরিবারের কেউ খোঁজ নিতে আমাদের কাছে আসেনি।’ মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বৃদ্ধা মা সোমবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বার্ধক্য জনিত কারণে তিনি মারা যান। পরে জেলা প্রশাসন ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ মিলে তার নামাজে জানাজা শেষে পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়।’
×