ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

হোন্ডা বাইকের কারখানা

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ১৪ নভেম্বর ২০১৮

হোন্ডা বাইকের কারখানা

মানুষের প্রতিদিনের যাত্রাপথে যন্ত্রচালিত পরিবহন এখন সময়ের অপ্রতিহত ধারায় এগিয়ে যাচ্ছে। হোন্ডা, বাইক ক্ষুদ্র যানটিও তার প্রয়োজনীয় অবদান প্রতি মুহূর্তেই স্পষ্ট করছে। যানজট এড়ানোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই ছোট্ট বাইকটি রাস্তার শোভাবর্ধন করার চাইতেও আবশ্যিক দায় মেটায় বেশি। এই হোন্ডা ব্যক্তি মালিকানাধীন হওয়ায় সময়টাও থাকে হাতের নাগালে। প্রতিদিন এর ব্যবহার এবং অনিবার্যতা এমনভাবে দৃশ্যমান যাতে মনে করতে অসুবিধা হয় না এর ওপর সাধারণ মানুষের নির্ভরশীলতা। বিশ্বখ্যাত মোটরসাইকেল কোম্পানি হোন্ডা এবং বাংলাদেশ শিল্প মন্ত্রণালয় আওতাভুক্ত স্টিল এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন (সিএসইসি)-এর যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেডের উদ্বোধন করা হয় মুন্সীগঞ্জে। মুন্সীগঞ্জের ২৫ একর জমির ওপর ২৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে যৌথভাবে হোন্ডা কোম্পানি এবং শিল্প মন্ত্রণালয় এই বৃহৎ কর্মপরিকল্পনা সম্পন্ন করে। ২০১৭ সালের ৫ নবেম্বর এই বড় প্রকল্পটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হলেও মাত্র এক বছরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা সময়মতো সমস্ত দায়িত্ব শেষ করে উদ্বোধন করার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের প্রথম ধাপটি পার করে কারখানাটি এখন বাণিজ্যিক উৎপাদন ক্ষমতায় নিজেকে দাঁড় করাল। এই ফ্যাক্টরিতে বছরে প্রায় ১ লাখ মোটরসাইকেল তৈরি ক্ষমতা বিদ্যমান। মোটরসাইকেলের চাহিদা বিবেচনায় এই ক্ষুদ্র যানবাহনটির উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়। সেই লক্ষ্যমাত্রায় ২০২১ সালের মধ্যে প্রায় ২ লাখ মোটরসাইকেল তৈরি করতে সক্ষম হবে। শুধু নতুন মোটরসাইকেল উপহার দেয়া নয়, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের কিছু মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি করবে প্রতিষ্ঠানটি। সাধারণ মানুষের মধ্যে এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেয়া হবে। সঙ্গত কারণে অর্থমূল্য মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকা বাঞ্ছনীয়। উর্ধতন কর্মকর্তারা এসব প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন। মাত্র ৩৯০ জন কর্মকর্তা নিয়ে কারখানাটি তার যাত্রা শুরু করলেও এর ব্যাপক সম্প্রসারণেরও বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হবে। অর্থাৎ কর্মী নিয়োগের ব্যাপারে সুদূরপ্রসারী অনেক কর্মপরিকল্পনা ভাবা হচ্ছে। এটি জাপান ও বাংলাদেশের যৌথ বিনিয়োগের একটি সফল কর্মপ্রক্রিয়া। উদ্বোধনের পর এর বাণিজ্যিক উৎপাদন কারখানার সমৃদ্ধি যেমন আসবে একইভাবে জনগণও এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে তাদের জীবনযাত্রার মান বাড়াতে সুযোগ পাবে। এটি এমন একটি স্মরণীয় দিন যেখান থেকে নিজস্ব উৎপাদনে হোন্ডার মতো জনপ্রিয় এবং আবশ্যিক যন্ত্রযানটির তৈরির শুভ যাত্রা শুরু হলো। এই আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশ ও জাপানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখবে। শুধু তাই নয় শিল্পসমৃদ্ধ মধ্যম আয়ের লক্ষ্যমাত্রায় এই ফ্যাক্টরির কার্যক্রম পরিচালিত করার সমস্ত পরিকল্পনা গোছানো হয়েছে। পরিবেশবান্ধব আধুনিক শিল্প-কারখানা গড়ে তুলতে সরকার যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এই নবতর কারখানাটি তারই একটি সফল বিনির্মাণ। সরকারী কর্মসূচীতে যে অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্দেশনা গৃহীত হয়েছে এসব কারখানা স্থাপন সে সম্ভাবনারই সূচক। ২০২৫ সালের মধ্যে মোটরসাইকেলের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সেটারই নিয়ামক শক্তি হিসেবে এই শিল্পকে জনগণের দ্বারে পৌঁছে দেয়া হবে। ফলে দেশ যেমন শিল্পায়নে এগিয়ে যাবে, মানুষের ব্যক্তি জীবন ও সমৃদ্ধির দ্বারে পৌঁছাতে দেরি করবে না। সুলভমূল্যে উন্নতমানের মোটরসাইকেল সরবরাহ করে জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের গতিশীলতা যুক্ত করতে সরকার বিভিন্ন প্রকল্পকে সফলতার দ্বারে পৌঁছে দিচ্ছে। এই বহুল ব্যবহৃত, প্রচলিত ক্ষুদ্র যন্ত্রযানটি মানুষকে যে মাত্রায় স্বাচ্ছন্দ্য এবং গতিময়তায় আরোহণ করায় তার অধিক সম্প্রসারণ সবাইকে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে। এই প্রত্যাশা যেমন সংশ্লিষ্টদের একইভাবে ক্রেতা সাধারণেরও।
×